ব্রাজিলে জন্ম নিয়েও ইতালির হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার তালিকায় আছেন জর্জিনহো, থিয়াগো মোত্তা, এমারসনরা। ওই তালিকায় যুক্ত হওয়ার খুব কাছে ছিলেন ব্রাজিলের বর্তমান জাতীয় দলের দুই ফুটবলার। একজন হলেন- গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, অন্যজন রাফিনহা।
বার্সেলোনার হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটানো রাফিনহা এক সাক্ষাৎকার জানিয়েছেন, তিনি ইতালির জার্সি প্রায় পরেই ফেলেছিলেন। তার ২০২১ সালের ইউরোয় খেলার কথা ছিল। ইতালি ফুটবলের প্রজেক্ট নিয়ে তার সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফরা তার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছেন। তিনিও রাজী হয়ে গিয়েছিলেন।
রাফিনহা বলেন, ‘আমি ইতালির ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। তাদের প্রস্তাবে রাজি ছিলাম এবং ইতালির জার্সি পরার খুবই কাছে ছিলাম। আমার ২০২০ সালের ইউরোয় (যেটা ২০২১ সালে হয়েছিল) খেলার কথা ছিল। সৌভাগ্যবশত, আমি সময় মতো ইতালির পাসপোর্ট হাতে পাইনি।’
রাফিনহার বাবা ছিলেন ইতালিয়ান। তার মা সংকর ব্রাজিলিয়ান। রাফিনহার জন্ম ব্রাজিলে এবং রেস্তিগায় তার বেড়ে ওঠা। যেটাকে বস্তিই বলা চলে। গানের সূত্রে তার বাবা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহোর বন্ধু ছিলেন। সেই সূত্রে ব্রাজিল জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নই রাফিনিয়া দেখতেন। কিন্তু তিতের ব্রাজিল দলে জায়গা হবে না এমনটা ধরে নিয়েছিলেন।
অথচ পার্সপোট জটিলতায় ইতালির হয়ে খেলতে না পারার পরের মাসেই ব্রাজিল দলে ডাক পেয়ে যান রাফিনহা। খেলেছেন ব্রাজিলের হয়ে ২০২২ বিশ্বকাপে। এমনকি সব ঠিক থাকলে ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের অন্যতম তারকা হয়েই পা রাখবেন তিনি। চলতি মৌসুমে বার্সার হয়ে ট্রেবল জিতে ব্যালন ডি’অরও উঠতে পারে তার হাতে।
রাফিনহা বলেন, ‘ওই সময় ইতালি জাতীয় দল থেকে বারবার আমাকে ডাকা হয়েছে। জর্জিনহো নিয়মিত কথা বলতেন। ইতালি দলের কোচিং স্টাফরা যে প্রজেক্টের বর্ণনা আমাকে দিয়েছিলেন, তা মনোযোগ কাড়ার মতো। তখনো অবশ্য আমার ব্রাজিলের হয়ে খেলার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ ছিল।’
রাফিনিয়ার উত্থান মূলত ২০২০ সালে। করোনা শুরু হওয়ার আগে প্রিমিয়ার লিগে ফেরা লিডসে যোগ দেন তিনি। ২০২০ সালে দারুণ ফুটবল খেলেন। পরের মৌসুমেও অসাধারণ খেলায় চেলসিতে খেলা ইতালির অধিনায়ক জর্জিনহোর মাধ্যমে ইতালির জাতীয় দলের আলোচনায় আসেন। লিডসে দ্বিতীয় মৌসুম চলাকালে চেলসি, আর্সেনাল ও লিভারপুল তাকে দলে নিতে লড়াইয়ে নামে। তবে রাফিনিয়া বেছে নেন বার্সেলোনাকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ব শ বক প ব ছ ই জ ত য় দল ল র হয় ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিব পাওয়ার দুই বছর পর আইসিসির যে পুরস্কার পেতে পারে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে সর্বশেষ আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান, ২০২৩ সালের মার্চে। দুই বছরের বেশি সময় পর আবারও এই পুরস্কার আসতে পারে বাংলাদেশের ঘরে।
মেহেদী হাসান মিরাজ যে আইসিসির এপ্রিলের সেরা খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত তালিকায় মনোনীত হয়েছেন! পুরস্কারটা জিততে হলে মিরাজকে দুই পেসার জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের বেন সিয়ার্সকে পেছনে ফেলতে হবে। আগামী সোমবার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে আইসিসি।
এপ্রিলে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১–১ এ ড্র করেছে বাংলাদেশ। সিলেটে জিম্বাবুয়ে প্রথম টেস্ট জিতলেও চট্টগ্রামে শেষ টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ, তিন দিনেই ম্যাচ জিতে নেয় ইনিংস ব্যবধানে।
তাতে বড় অবদান ছিল মিরাজের। ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার একই দিনে সেঞ্চুরি করেন ও ৫ উইকেট নেন। দুই ম্যাচ মিলিয়ে ৩৮.৬৬ গড়ে করেন ১১৬ রান, ১১.৮৬ গড়ে উইকেট শিকার করেন ১৫টি। সিরিজসেরার পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।
সেই সিরিজেই বল হাতে ঝলক দেখান ব্লেসিং মুজারাবানি। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসার দুই টেস্ট মিলিয়ে নেন ১০ উইকেট। এর ৯টিই সিলেটে, যা চার বছর পর জিম্বাবুয়েকে টেস্ট জেতাতে সহায়তা করে। সিলেট টেস্টে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও মুজারাবানির হাতে ওঠে।
আরেক দীর্ঘদেহী পেসার বেন সিয়ার্স গত মাসে আলো ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাঠে বাবর–রিজওয়ানদের ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে কিউইরা।
সিয়ার্স প্রথম ওয়ানডেতে খেলেননি। তবে শেষ দুই ওয়ানডেতে সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগান, পাঁচটি–পাঁচটি করে নেন ১০ উইকেট।
২০২১ সাল থেকে মাসসেরা খেলোয়াড়কে পুরস্কৃত করে আসছে আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির একটি স্বাধীন ভোটিং একাডেমি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করে। প্যানেলে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। এ ছাড়া দর্শকেরাও আইসিসির ওয়েবসাইটে গিয়ে মনোনীত তিন খেলোয়াড়ের একজনকে ভোট দিতে পারেন।
নারী–পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার চারবার আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন। ২০২১ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব জিতেছেন দুবার—২০২১ সালের জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালের মার্চে। আর একমাত্র বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে নাহিদা আক্তার মাসসেরা স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে।