সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর, মহাসড়কে উল্টো পথে অটো রিক্সার দাপট, ঘটছে দুর্ঘটনা
Published: 5th, May 2025 GMT
মহাসড়কে তিন চাকার অটোরিকশা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে উল্টো পথে দাপটের সহিত চলছে ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা বা ইজিবাইক।
এতে একদিকে সড়কে যানবাহন চলাচলে বিশৃংখলার সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে এই গাড়িগুলো চলাচল করছে। গত ছয় মাসে মহাসড়কে অটোরিকশা দূর্ঘটনায় অর্ধ্বশতাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছেনা হাইওয়ে পুলিশের।
সবশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর ব্রিজের ঢালে উল্টো পথে আসা ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-ছেলে সহ তিনজন নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন- গাইবান্ধার সুনামগঞ্জ থানার আশরাফুল আলমের স্ত্রী কাকলি (৩৫), ছেলে আরিয়ান আহম্মেদ রাফি (৫) ও রংপুরের পীরগাছা থানার আব্দুল ওহাবের ছেলে অটোরিকশা চালক আনিসুর রহমান (২৩)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছিল, মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে দ্রুতগতিতে হিমালয় পরিবহনের একটি বাস আসছিল। একই সময় উল্টো পথে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাচ্ছিল। এ সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা চালকসহ অটোরিকশায় থাকা মা- ছেলের মৃত্যু হয়।
এদিকে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে দায়ী করছেন পথচারীরা। অনেকেই বলছেন পুলিশের রহস্যজনক উদাসিনতা ও জনসচেতনার অভাবে মহাসড়কে অটোরিকশার দৌরাত্ব্য বেড়েছে।
সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, সানাড়পাড়, মৌচাক, চিটাগাং রোড শিমরাইল মোড় ও কাঁচপুর সেতুর উভয়পাশে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়ক জুড়ে অসংখ্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করছে। বেশির ভাগই আবার চলছে উল্টো পথে।
অটো চালকরা ঝুঁকিপুর্ণভাবে যাত্রীদের পরিবহন করছে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও নারী-পুরুষ-শিশু যাত্রীরা নিরুপায়।
ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী একটি বাসের চালক জয়নাল বলেন, সরকার ও উচ্চ আদালত মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করলেও এই এলাকায় কোনো প্রশাসন আছে বলে মনে হয় না। এসব ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার কারণে আমাদের ধীরগতিতে চলতে হয়।
মহাসড়কে বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য এই অটোরিকশাকে দায়ী করে হানিফ পরিবহনের চালক লিটন বলেন, মহাসড়কে বড় বড় যানবাহন চলাচল করে কিন্তু এই অটোরিকশা হঠাৎ হঠাৎ বড় যানবাহনের সামনে এসে পড়লে দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক রেদোয়ান বলেন, আমি একদিন কাজ থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি অটোরিকশা আমার গায়ের উপরে উঠে যায় যার ফলে আমার হাত ভেঙে যায় এবং আমি প্রায় তিন মাস চিকিৎসা দিন ছিলাম।
সানাড়পাড় এলাকার বাসিন্দা জুনায়েদ বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট এসব যানবাহনের কারণে আমরা সব সময় সড়ক দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সখ্য করেই গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে এগুলো চলাচল করছে।
রমজান মিয়া নামের একজন অটোরিকশাচালক বলেন, মাঝে মধ্যে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। কিছু কিছু রিকশা ডাম্পিং করে। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে আবার রিকশা চালাই।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মহাসড়কে উল্টো পথে ব্যাটারি চালিত অটো রিকসার চলাচল বন্ধ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়। এতে প্রাণহানী ঘটনার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সহিত সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিৎ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ টিআই নাইম বলেন, কোনো অনিয়মের সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ জড়িত নেই। প্রতিদিনই এসব অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ১০/১৫ টি আটক করে জরিমানা ও রেকারিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মহাসড়কে এদের চলাচল অনেক কমে আসছে। আশা করি মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ দ র ঘটন র হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
১৪ কার্গো বিমানে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি থেকে ইসরায়েলে এলো অস্ত্র
ইরানের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে আসা ১৪টি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছেছে। এসব বিমানে সেনাবাহিনীর জন্য বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ও সহায়তা উপকরণ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশটি আকাশ ও সমুদ্রপথে সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই নতুন এই চালান এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই সরঞ্জামগুলো সেনাবাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতি জোরদারে সহায়ক হবে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এটি নতুন চালান হলেও গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৮০০-র বেশি সামরিক কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছেছে।
তবে নতুন করে আসা সরঞ্জামগুলো কী ধরনের, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালালে সংঘাতের সূচনা হয়। এর জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৬৩৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩০০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছে।