বান্দরবানের থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়ন থেকে সোমবার (৫ মে) চিংমা খিয়াং নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জুম ক্ষেতের নিকটবর্তী পাথরের নালার ওপরে তার লাশ পাওয়া যায়। তিনি দুর্ঘটনায় নাকি হত্যার শিকার তা খতিয়ে দেখতে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ ‍সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার। 

মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স রুমে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সমন্বয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, জেলা পুলিশ সুপার  শহিদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম উপস্থিত ছিলেন।  

আরো পড়ুন:

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে তিন স্কুল শিক্ষার্থীসহ ৪ জনের মৃত্যু

সিলেটে বাবাকে হত্যা: ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

চিংমা খিয়াংয়ের মরদেহ তিন্দু ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মংখ্যং পাড়া সংলগ্ন পাথরের নালার ওপর থেকে সোমবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়। তিনি একই এলাকার সুমন খিয়াংয়ের স্ত্রী। 

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, “সোমবার সকাল ৯টার দিকে ওই নারী জুম চাষের জন্য পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে যান। দুপুরে পাড়ায় ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে শুরু করেন প্রতিবেশীরা। একপর্যায়ে তার মরদেহ দেখতে পান তারা। এটি দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”

পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, “জুমচাষের পাহাড় থেকে প্রায় ৫০ ফুট নিচে মরদেহটি পাওয়া যায়। মরদেহের মুখমণ্ডল, মাথায় ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানচি থানায় মামলা হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও সতর্কতার সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করছে। সঠিক কারণ অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

এলাকাবাসী জানান, সোমরাব সকালে চিংমা খিয়াং জুম ক্ষেতে ধান রোপণ করতে পাহাড়ে যান। দুপুরে ফিরে বাড়িতে ভাত খাওয়ার কথা ছিল তারা। ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন ও পাড়াবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা জঙ্গলে কিছু টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন দেখতে পান। ওই চিহ্ন অনুসরণ করে পাথরের একটি নালার ওপরে চিংমা খিয়াংয়ের লাশ পান তারা। 

স্থানীয়দের দাবি, ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় এমন ধারণা করেন তারা।  

প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া গেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। মেডিকেল রিপোর্ট আসলে বিষয়টি জানা যাবে।”

ঢাকা/চাইমং/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

হাটহাজারীতে সালিসে মারধরে কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে কিশোরীকে অপহরণের ঘটনার পর বসা সালিস বৈঠকে মারধরে ওই কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে চারজনকে আসামি করে এ মামলা হয়। আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে একটি এলাকায় এই সালিস বৈঠক হয়। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকাটির থানা হাটহাজারী।

আজ রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলো প্রতিবেদকের। তাঁরা জানান, গত ২৭ জুলাই ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হাটহাজারী থানায় জিডি হয়। পরে পরিবারের লোকজন ওই কিশোরীকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকা থেকে নিয়ে আসে। অপহরণের অভিযোগ ওঠা যুবকের বাড়িও সুবর্ণচর। তবে তিনি কিশোরীর বাড়ির পাশে একটি বাসায় থাকতেন। পেশায় নির্মাণশ্রমিকের সহকারী ওই যুবক।

সেদিনের (শুক্রবার) সালিসে থাকা অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, সালিসে যুবকের প্রতিনিধিরা দুজনের বিয়ে হয়েছে দাবি করলেও কিশোরীর বয়স কম থাকায় আইনগতভাবে বিয়ে দেওয়া যায় না বলে উভয় পক্ষ একমত হয়। এর মধ্যে সালিসে বহিরাগত লোকজন এসেছে উল্লেখ করে এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তখন লোকজনের ভিড়ের মধ্যে পড়েন কিশোরীর বাবা। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছেলে ও কিশোরীর বড় ভাই আজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবাকে সালিসে মারধর করা হয়েছে। সেখানে মারা গেছেন। তাঁরা মামলা করেছেন। এই খুনের ঘটনায় তাঁরা সুষ্ঠু বিচার চান।

তবে ওই যুবকের খালার দাবি, তাঁর ভাগনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে ওই কিশোরীর। স্বেচ্ছায় গিয়ে বিয়ে করেছে। সালিস বৈঠকে কিশোরীর বাবাকে কেউ মারধর করেনি। হার্ট অ্যাটাকে ( হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ) কিশোরীর বাবার মৃত্যু হয়েছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (হাটহাজারী অঞ্চল) কাজী মো. তারেক আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির সুরতহালে শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা হাসপাতালে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন, শুনতে পান ইমরান
  • হাটহাজারীতে সালিসে মারধরে কিশোরীর বাবা নিহতের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি