বেইলি রোডে আগুন লাগা ভবনটি ২০ ঘণ্টা পরও বিদ্যুৎহীন, ফিরছেন ব্যবসায়ীরা
Published: 6th, May 2025 GMT
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবন ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারের ভূ–গর্ভস্থ (বেজমেন্ট) তলায় আগুন লাগার ২০ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকেও ভবনটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎহীন রয়েছেন ভবনের বাসিন্দারা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বহুতল ভবনটির ভূগর্ভস্থ তলায় জেনারেটর রাখার কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত। যদিও শুরুতে বলা হয়েছিল, ভবনের নিচতলায় থাকা একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লেগেছে। ভবনটি থেকে ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।ফায়ার সার্ভিস জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বহুতল ভবনটির ভূ–গর্ভস্থ তলায় জেনারেটর রাখার কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত। যদিও শুরুতে বলা হয়েছিল, ভবনের নিচতলায় থাকা একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লেগেছে। ভবনটি থেকে ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন, আগুনে ভবনের নিচতলায় থাকা কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভবনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। তবে ব্যবসায়ীরা একে একে এসে দোকান খুলছেন। যাঁদের দোকানে সমস্যা হয়েছে, তাঁরা সেগুলো মেরামত করতে শুরু করেছেন।জাহিদুল ইসলাম, রমনা থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক।ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ১৭ তলা ভবনটি ব্যবসায়িক ও আবাসিক কাজে ব্যবহার করা হয়। নিচতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাকি তলাগুলো আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভবনের একাধিক বাসিন্দা বলেন, ভবনটিতে অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করে।
ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারে বসবাস করা সরকারি চাকরিজীবী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘অফিস শেষে মাত্র বাসায় এসেছি। তখনই আগুন লাগার খবর পাই। অসুস্থ মাকে নিয়ে খুব আতঙ্কে নিচে নেমে আসি। পরে আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাসায় রান্নাবান্নাও হয়নি।’
১৭ তলা ভবনটি ব্যবসায়িক ও আবাসিক কাজে ব্যবহার করা হয়। নিচতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাকি তলাগুলো আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভবনের একাধিক বাসিন্দা বলেন, ভবনটিতে অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করে।অপর একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে দুই বাচ্চাকে নিয়ে দ্রুত নেমে আসি। আতঙ্কে গতরাতে বাসার কেউ ঘুমাতে পারেনি। এখন পর্যন্ত ভবনে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়নি। বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে।’
ভবনটিতে বাইরের কেউ যাতে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। পাহারার দায়িত্বে থাকা রমনা থানা–পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। তবে ব্যবসায়ীরা একে একে এসে দোকান খুলছেন। যাঁদের দোকানে সমস্যা হয়েছে, তাঁরা সেগুলো মেরামত করতে শুরু করেছেন।’
ভবনের অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন ছিল, ভবনের নকশা সঠিক রয়েছে কি না—এ বিষয়গুলো তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন। তাই ভবনমালিকের কাছে এসবের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।শাহজাহান শিকদার, ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা।আগুনে ক্ষতির শিকার হওয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইন স্টাইল বাই রাইস–এর ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিকট শব্দ শুনতে পান। ভয়ে ব্যবসায়ীরা বাইরে বেরিয়ে আসেন। শুরুতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে থাকা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভান।
রিয়াজুল ইসলাম জানান, আগুন ও ধোঁয়ায় তাঁর প্রতিষ্ঠানে থাকা বেশ কিছু কাপড় নষ্ট হয়েছে। বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারে আগুন লাগার পর প্রায় ২০ ঘণ্টা চলে গেছে। বন্ধ রয়েছে আশপাশের দোকানগুলোও.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর আগ ন ল গ র ব যবস য় র ব যবস য ভবন র ন র ব যবস ন ব যবস ল ইসল ম ন চতল
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’