বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর কারণ নেই: নিরাপত্তা উপদেষ্টা
Published: 6th, May 2025 GMT
আমাদের সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা তাই করবো বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রয়েছে। আমাদের সঙ্গে ভারতের সে ধরনের কোনো উত্তেজনা নেই। আমরা বাড়তি কোনো কিছু করার কোনো কারণ দেখছি না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আরাকান আর্মির প্রসঙ্গে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সার্বভৌম রাষ্ট্র। নিজ স্বার্থে যার সঙ্গে ইচ্ছা, তার সঙ্গে কথা বলবো। কে কি বললো যায় আসে না। ফলে সীমান্তের ওপারে যেই থাকবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রাখবে।
তিনি বলেন, একটি জিনিস বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ। এ সীমান্ত বাংলাদেশকে ম্যানেজ করতে হবে, রক্ষা করতে হবে, শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। ফলে ওপারে যেই থাক, তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখবো। মিয়ানমার আর্মি যদি সেখানে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো, আগে তো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
নতুন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ড.
আরাকান আর্মিকে দেওয়া এ বার্তার জবাব কী ঢাকা পেয়েছে– উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, আমরা প্রশ্ন করেছি। জবাব আসলে বিচার বিবেচনা করে দেখবো কি ধরনের জবাব পাচ্ছি। এখানে কোনো রাখ–ঢাক নেই, বিষয়টি সাদা–কালো। হয় তারা জাতিগত নিধনের পক্ষে, নয় বিপক্ষে। আমরা পৃথিবির কোথাও এ ধরনের জাতিগত নিধন সমর্থন করি না। এটি আরাকান আর্মির জন্য একটি পরীক্ষা। আমরা অপেক্ষা করছি, এ পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হতে পারছে কি–না।’
মিয়ানমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া রয়েছে। কিছু দিন আগে ভূমিকম্পে বাংলাদেশ থেকে সহযোগিতা গিয়েছে, মিয়ানমারের অনুরোধের অপেক্ষা করা হয়নি। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা, বাণিজ্যসহ সব দিকে যোগাযোগ রয়েছে। কোনো সমস্যার সমাধান চাইলে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে হবে, না হলে সমস্যার সমাধান হবে না।
মিয়ানমারের সার্বভৌম ও অখণ্ডতার কথা বাংলাদেশ বলছে, আরেক দিকে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ সাংঘর্ষিক কি না– উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগটি বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তা। ওপারে সীমান্তে তারা (আরাকান আর্মি) আছে, তাদের সঙ্গে তো আমাদের কাজ করতে হবে।’
মানবিক করিডোর নিয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সকল পক্ষ রাজি কি না– আমরা দেখবো। রাজি হলেই যে আমরা মানবিক সাহায্য দেবো এমন কোনো কথা নেই, এখানে অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে। আরাকানে যে নতুন কর্তৃপক্ষ তৈরি হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব চায়। সেখানে যেসব রোহিঙ্গারা রয়েছে, তাদের ওপর যাতে কোনো অত্যাচার না হয়, তাদের সঙ্গে যেন বৈষম্য করা না হয়, তারা যাতে দলে দলে বাংলাদেশে না আসে। এ বিষয়গুলো মানতে হবে। জাতিগত নিধন কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশ মানবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আর ক ন আর ম র উপদ ষ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
আজই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: জয়নুল আবদিন ফারুক
আজ সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। আজ মঙ্গলবার সকালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
জয়নুল আবদিন ফারুক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সমাবেশে বলেন, ‘আপনাকে আমরা পছন্দ করি। কিন্তু কারও কথায় নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করবেন না। বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব, আজকেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন।...হাসিনার বিচার আপনার করেন, কোনো আপত্তি নাই। এই বাংলাদেশে প্রত্যেক নিপীড়নকারীর বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।’
সমাবেশে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে বিএনপির নেতা ফারুক বলে, ‘যারা ’৭১-এর স্বাধীনতা মানে না, যারা ড. ইউনূসের নির্বাচন মানে না, তারা এখন ষড়যন্ত্র করে তারেক রহমানকে ক্ষমতায় আসতে দিতে চায় না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াব। নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে। বঙ্গোপসাগরে যেমন বাঁধ দেওয়া সম্ভব নয়, তেমনি বিএনপিকে বাদ দিয়ে এই দেশে কোনো নির্বাচন কেউ করতে পারবে না।’
সমাবেশে পিআর পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা। সেনবাগ থানা-পুলিশের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু যারা এখনো চোরাগোপ্তা বসে বসে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না।’
দলে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘যাঁরা সেনবাগে এমপি হতে চান, দয়া করে জনগণের কাছে যান। বিভেদ সৃষ্টি করে নতুন লোক আমদানি করে এই দেশে রাজনীতি করানো কঠিন হবে।’
সেনবাগ বাজারের জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে আয়োজিত এ সমাবেশে সেনবাগ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল সেনবাগ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।