বাড়ি ফেরার পথে বিএনপি নেতার ওপর হামলা, পুড়িয়ে দেওয়া হয় মোটরসাইকেল
Published: 8th, May 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে চান্দাইকোনা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
জানা যায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তুষার তালুকদার ভুঁইয়াগাতি বাজার হতে বাড়িতে ফিরছিলেন। তিনি দেওভোগ বাজার এলাকায় পৌঁছালে ৫-৭ জন মুখোশধারী তার পথরোধ করে মারধর করে। এ সময় তার মোটরসাইকেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া।
আহত তুষার তালুকদার বলেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালানো হয়। তখন সড়কে লোকজন থাকায় মারধর ও মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে তারা চলে যায়।’
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সামসুল ইসলাম। এ ঘটনায় দ্রুত জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত এবং আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
রায়গঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, রাতেই ঘটনস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আসামিদের শনাক্তের কাজ চলছে। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ব এনপ আগ ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সইতে পারছি না, বিচার চাই—কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা
‘ছেলের বউয়ের নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ। তাই আমার সোনার ছেলে প্রাণ দিয়েছে। আমি সন্তান হারিয়েছি। এ শোক সইতে পারছি না। এর বিচার করতে হবে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লাশ উদ্ধার হওয়া র্যাবের কর্মকর্তা পলাশ সাহার মা আরতী সাহা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পলাশ সাহার মরদেহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশি গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে গার্ড অব অনার ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়কে কোটালীপাড়ার তাড়াশী বাসস্ট্যান্ডে দক্ষিণ পাশে পলাশ সাহার বাড়ি। তিনি তারাশী গ্রামের মৃত বিনয় কৃষ্ণ সাহার ছেলে। পাকা মেঝের টিনশেড ঘরের সামনে বসে আহাজারি করছিলেন পলাশের বড় বোন রমা সাহা, মেজ ভাই নন্দলাল সাহা ও বড় ভাই লিটন সাহার স্ত্রী।
নন্দলাল সাহা বলেন, চার ভাইবোনের মধ্যে পলাশ ছিলেন সবার ছোট ও আদরের। কোটালীপাড়া থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে। পাড়াশোনা শেষ করে সাব-রেজিস্ট্রার পদে শুরু করে কর্মজীবন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক, ৩৬তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডার ও ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পায়। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশে দায়িত্ব পালন করে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তাকে র্যাবে পাঠানো হয়। তারপর থেকে পলাশ সেখানে কর্মরত ছিলেন।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন চৌধুরীপাড়ার সুস্মিতা সাহার সঙ্গে বিয়ে হয় পলাশের। বিয়ের ৬ মাস পর থেকে সংসারে নানা অশান্তি শুরু হয়।
নন্দলাল সাহা, পলাশ চেয়েছিল কর্মস্থল চট্টগ্রামে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে। কিন্তু তার স্ত্রী তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। মা বাসায় না থাকতে চাইলে পলাশ কষ্ট পেত। মা বাসায় থাকলে স্ত্রী সহ্য করতে পারত না। এ নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকত। ভাই চলে গেল, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
নন্দলালের অভিযোগ, আত্মহত্যা প্ররোচনা করেছে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিচার চাই।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে র্যাব–৭ ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য নিজের কক্ষে যান পলাশ সাহা। তখন সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দেখতে পান। তার রক্তাক্ত মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পড়ে ছিল। এতে তার মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী বলে উল্লেখ করেন।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তাঁরা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে, তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো–অর্ডিনেট করে।’