ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সাধারণ শিক্ষার্থী ব্যানারে শিবিরের প্রতি নেতিবাচক মন্তব্যের কঠোর নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখ।

মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শাহবাগে জাতীয় সংগীত অবমাননার পর উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্ট এবং রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদী সমবেত জাতীয় সংগীতের অনুষ্ঠানে নেতিবাচক মন্তব্য করায় এ নিন্দা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির একপর্যায়ে জাতীয় সংগীত চলাকালে গুটিকয়েক ব্যক্তি বাধা প্রদান করে। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সংঘবদ্ধ মিথ্যাচার করছে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল। 

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে শেষ হলো ষষ্ঠ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিতর্ক উৎসব

ভর্তিতে বিড়ম্বনা এড়াতে বিশেষ উদ্যোগ ঢাবি প্রশাসনের

ভিডিও ফুটেজ দেখে বাধা প্রদানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় শনাক্ত করা খুবই সহজসাধ্য কাজ উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই, ফুটেজে উপস্থিত ব্যক্তিদের মতামত জানা কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে ঘটনার বিবরণ জেনে এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানানো ছিল ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ও প্রত্যাশিত আচরণ। উপরন্তু, গতকাল সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে শতাধিক শিক্ষার্থী জাতীয় সংগীত গাওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এতে ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বেশিকিছু ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন, যেখানে একাধিক ছাত্র সংগঠনের নে-কর্মীরা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে শাহবাগের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ঘৃণ্যতম মিথ্যাচার করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদে এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খাঁন বলেন, শাহবাগের ঘটনার সত্যতা ও সংশ্লিষ্টতা যাচাই না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার ও অব্যাহত ট্যাগিং এর নিন্দা জানাচ্ছি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ দায়িত্বশীল আচরণের পরিবর্তে গতকাল সন্ধ্যায় কিছু সংগঠন কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানার ব্যবহার করে আওয়ামী বয়ান ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা করা ও ছাত্রশিবিরকে নিয়ে ট্যাগিং ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নেওয়া মূলত সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ।

তারা আরো বলেন, ছাত্র সংগঠন হিসেবে পুরোনো ধারার বিদ্বেষ, বিভাজন ও সংঘাতের রাজনীতির পরিবর্তে সব সংগঠন কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থী ও জাতির কল্যাণে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা জুলাই স্পিরিটের মৌলিক দাবি। বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার ফ্যাসিবাদবিরোধী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আধিপত্যবাদের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে কোনো নাগরিককে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে পতিত স্বৈরাচার ও কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়ানকে পুনরায় প্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টা নয়া ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।

বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশপন্থার নামে জাতীয় সংগীতে বাধা প্রদানের ইস্যুতে ইসলামপন্থা বনাম বাংলাদেশপন্থাকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপরাজনীতি কার্যত উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের পুনর্মঞ্চায়ন। যা বাঙালি বনাম ইসলামের বিভাজনের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির নয়া বন্দোবস্ত। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারের দোসর ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ তৈরি বয়ানে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতাকে বিভাজিত করার অপকৌশলকে ছাত্রশিবির ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র স গঠন র জন ত ক শ হব গ ইসল ম ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির

চট্টগ্রামের সাগরিকায় উপস্থিত থাকা দর্শকরা গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাপোর্ট করেছে এমন কথা শুনলে অবাক হবেন নিশ্চিয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই এমন কিছুই হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে।
ধারাবাহিকভাবে ব‌্যর্থ বাংলাদেশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা আপাতদৃষ্টিতে এমনটাই মনে হয়েছে। লাল-সবুজের পতাকা গ‌্যালারিতে উড়তে দেখা যায়নি তেমনটা নয়। কিন্তু ম‌্যাচ যত গড়িয়েছে সেই পতাকা উড়ানোও তত কমেছে। টিকিটের মূল‌্য একেবারে হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবুও ভরেনি গ‌্যালারি।

লিটন, জাকের, তাসকিন, শরিফুল, সাইফদের পারফরম‌্যান্স এমন গড়পড়তা যে সমর্থকরা প্রতিপক্ষের ব‌্যাটিং-বোলিং দেখেই বেশি আনন্দিত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে নিবেদন, যে চাহিদা তা রোস্টন চেজ, আকিম আগাস্তের ব‌্যাটে পাওয়া গেলে সমর্থকদের দোষ কোথায়? তাদের চার-ছক্কায় গ‌্যালারিতে তালির ঝড় উঠে। উল্লাস, উদ্দীপনায় মাততে দেখা যায়।
আর স্বাগতিক দলের জন‌্য উড়ে আসে দুয়ো ধ্বনি। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান চললো পুরো ম‌্যাচ জুড়েই। বিশেষ করে সীমানায় থাকা ক্রিকেটাররা দর্শকদের রোষানলে পড়লেন বেশি। শুধু তা-ই নয়, স্টেডিয়ামের যাওয়া-আসার পথেও সেই সমর্থকরাই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে এলোমেলা করে দেন ক্রিকেটারদের।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে এসব স্লোগান একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড‌্যারেন স‌্যামির। ক্যারিয়ারে নানা সময় বাংলাদেশে আসায় কিছুটা বাংলা শব্দ তারও জানা। তবে ভুয়া অর্থটা জেনেছেন এবারই। তাইতো তার হৃদয়ে কিছুটা দহনও হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন‌্য, “তারা (দর্শকরা) ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। আমি শুনেছি তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলছে। এর অর্থও আমি জেনেছি। কিন্তু আমি মনে করি না, হোম টিমের দর্শক হিসেবে এমন করা উচিত। কারণ আপনারা তখন সমর্থক। প্রত্যেক ক্রিকেটারই মাঠে আসে তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। তাই আপনাদের উচিত, তাদের সমর্থন করা।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতানো স‌্যামি কঠিন সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বললেন, ‘‘তবুও তারা (দর্শকরা) ভালো। তারা নিজেদের দলকে পারফর্ম করতে দেখতে চায়। তবে যত বেশি সমর্থন ও উৎসাহ দেবেন, তারা তত দূর যেতে পারবে। ক্রিকেটারদের অযথা চাপে ফেলবেন না। ফ্যানদের বলব, তাদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন।”

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হবিগঞ্জে কনসার্টে বিশৃঙ্খলার পর নারীদের হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ
  • পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
  • অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
  • জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির