ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ–আখাউড়া চার লেন মহাসড়কের চলমান কাজের সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্তত ১১ কোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া সরঞ্জামের মধ্যে পাথর, লোহা, গাড়ি, ভারী যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য মালামাল রয়েছে। চুরির ঘটনা ঘটেছে ১৬৬টি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুরো বিষয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। গত ২১ এপ্রিল দেওয়া ওই চিঠিতে প্রকল্প এলাকায় মালামাল চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে চিঠি দেয় এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। চিঠিতে এজাহার বা এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) নিতে অনুরোধ করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫১ কিলোমিটার। উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার ঋণ দিচ্ছে ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। প্রকল্পের কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড তাদের সব ভারতীয় কর্মীকে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। বেশির ভাগ কর্মী আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে চলে যান। প্রায় তিন মাস পর গত বছরের নভেম্বরের গোড়ায় কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আবার কাজে ফেরেন। ৯ নভেম্বর আবার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র জানায়, পুনরায় কাজ শুরুর পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেখতে পায়, তাদের বেশ কিছু মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে গত ২১ ডিসেম্বর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দেয় এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। চিঠিতে বলা হয়, গত ১৯ জুলাইয়ের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় প্রকল্পের লোকজন নিজ দেশে চলে যান। ফিরে এসে দেখেন, অনেক জায়গায় তাঁদের মালামাল চুরি হয়েছে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পে অন্তত ১৬৬টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।

চিঠিতে চুরির সময় বলা হয়েছে গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। আর চুরির ঘটনাস্থল আশুগঞ্জ ও সরাইল এলাকা। তবে চুরির সংখ্যা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠিতেও চুরির এ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় রাখা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের গাড়ি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রামরাইল এলাকায়, ৩০ এপ্রিল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় চ র র ঘটন প রকল প র গত বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

১৬৬টি চুরির ঘটনা, ১১ কোটি টাকার মালামাল খোয়া গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ–আখাউড়া চার লেন মহাসড়কের চলমান কাজের সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্তত ১১ কোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া সরঞ্জামের মধ্যে পাথর, লোহা, গাড়ি, ভারী যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য মালামাল রয়েছে। চুরির ঘটনা ঘটেছে ১৬৬টি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুরো বিষয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। গত ২১ এপ্রিল দেওয়া ওই চিঠিতে প্রকল্প এলাকায় মালামাল চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে চিঠি দেয় এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। চিঠিতে এজাহার বা এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) নিতে অনুরোধ করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫১ কিলোমিটার। উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার ঋণ দিচ্ছে ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। প্রকল্পের কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড তাদের সব ভারতীয় কর্মীকে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। বেশির ভাগ কর্মী আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে চলে যান। প্রায় তিন মাস পর গত বছরের নভেম্বরের গোড়ায় কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আবার কাজে ফেরেন। ৯ নভেম্বর আবার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র জানায়, পুনরায় কাজ শুরুর পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেখতে পায়, তাদের বেশ কিছু মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে গত ২১ ডিসেম্বর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দেয় এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। চিঠিতে বলা হয়, গত ১৯ জুলাইয়ের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় প্রকল্পের লোকজন নিজ দেশে চলে যান। ফিরে এসে দেখেন, অনেক জায়গায় তাঁদের মালামাল চুরি হয়েছে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পে অন্তত ১৬৬টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।

চিঠিতে চুরির সময় বলা হয়েছে গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। আর চুরির ঘটনাস্থল আশুগঞ্জ ও সরাইল এলাকা। তবে চুরির সংখ্যা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠিতেও চুরির এ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় রাখা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের গাড়ি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রামরাইল এলাকায়, ৩০ এপ্রিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ