উড়োজাহাজ কেউ বিনা মূল্যে দেয় না, বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে: হিলারি ক্লিনটন
Published: 17th, May 2025 GMT
কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিলাসবহুল উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) উপহার হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
ডেমোক্রেটিক দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘কেউই ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) ডলারের একটি উড়োজাহাজ বিনা মূল্যে দেয় না, এর বিনিময়ে কিছু না কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে।’
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে বলেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি।
কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ট্রাম্পকে ব্যবহারের জন্য ৪০ কোটি ডলার মূল্যের একটি বোয়িং ৭৪৭-৮ উড়োজাহাজ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের ওই উপহার গ্রহণ এবং বর্তমান এয়ারফোর্স ওয়ানের পরিবর্তে সেটি ব্যবহারের পরিকল্পনার খবর ক্যাপিটল হিলে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বহনে ব্যবহৃত সরকারি উড়োজাহাজকে এয়ারফোর্স ওয়ান বলা হয়।
মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাঁরা একে দুর্নীতির প্রমাণ বলেও উল্লেখ করেন।
এটা মেনে নিতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে। আমার মনে হয়, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এখানে রয়েছে, যেমন শ্রবণযন্ত্র (লিসেনিং ডিভাইস), নিরাপত্তা–সংক্রান্ত মানদণ্ড এবং সম্ভাব্য অন্যান্য বিষয়, এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজনসিনেটর টড ইয়াং, সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্যএ সপ্তাহে ৯ জন ডেমোক্রেটিক সিনেটর পেন্টাগনকে প্রেসিডেন্টের ওই উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং এতে প্রতিরক্ষা বিভাগের ভূমিকা কী হবে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কাতারের কাছ থেকে কি ট্রাম্প উড়োজাহাজ উপহার নিতে পারেন১৬ মে ২০২৫ট্রাম্প কাতারের উপহারের উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহার করার এবং প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়ার কথা বলেছেন বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
ট্রাম্পের এই ইচ্ছা নিয়ে তাঁর দলের কয়েকজন সিনেটরও আপত্তি তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্টকে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর ব্যবহার করা সবকিছু প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে হস্তান্তর করতে হয়।
এ সপ্তাহে ৯ জন ডেমোক্রেটিক সিনেটর পেন্টাগনকে প্রেসিডেন্টের ওই উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং এতে প্রতিরক্ষা বিভাগের ভূমিকা কী হবে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য সিনেটর টড ইয়াং বলেন, ‘এটা মেনে নিতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে।’
আরও পড়ুনকাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল উড়োজাহাজ নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প: মার্কিন গণমাধ্যম১২ মে ২০২৫ইয়াং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এখানে রয়েছে, যেমন শ্রবণযন্ত্র (লিসেনিং ডিভাইস), নিরাপত্তা–সংক্রান্ত মানদণ্ড এবং সম্ভাব্য অন্যান্য বিষয়। এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’
এই উপহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারেটেড ক্রুজ, মার্কিন সিনেটরসিনেটর টেড ক্রুজ মঙ্গলবার সিএনবিসিকে বলেছেন, এই উপহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেও ট্রাম্পের এই উপহার গ্রহণের সিদ্ধান্ত আটকে যাওয়ার কথা। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজা–বাদশাহ, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুনআমি এমন একটা প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মতো লোক নই: ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র জন য ব যবহ র উপহ র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে আরেকজনের মৃত্যুদণ্ড
ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বাবাক শাহবাজি নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। আজ বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ও তাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে গ্রেপ্তার ৮৩০ আগস্ট ২০২৫এ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ইরানে এ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত কয়েক মাসে অভিযুক্ত অন্তত নয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটি।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাবাক শাহবাজি ২০২২ সালের শুরু থেকে আরেক গুপ্তচর ইসমাইল ফেকরির সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে চলতি বছরের জুনে ইসমাইল ফেকরিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আরও তিনজনকে ফাঁসি দিল ইরান২৫ জুন ২০২৫বাবাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ঘর ঠান্ডা রাখার যন্ত্র স্থাপনের কাজ করতেন। এ কাজের সুযোগ নিয়ে তিনি নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেমন সার্ভার রুম এবং সামরিক ও নিরাপত্তাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ইরানি কেন্দ্রগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন।
আসামির আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে আপিলের আবেদন করেছিলেন। তবে সে আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনইসরায়েলি গুপ্তচরদের সঙ্গে আরও যাঁরা ইরানকে দুর্বল করছেন২৬ জুন ২০২৫