আটপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাসুম, সম্পাদক রফিকুল
Published: 17th, May 2025 GMT
দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে মো. মাসুম চৌধুরী সভাপতি ও মো. রফিকুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। মাসুম চৌধুরী আগের কমিটির আহ্বায়ক এবং রফিকুল ইসলাম জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালে আটপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল। এরপর ১১ বছরে কোনো সম্মেলন করতে পারেনি দলটি। অবশ্য ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বাধার কারণে আগের দিন সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। এরপর আরও দুবার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলে স্থগিত করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সক্রিয় হন বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
বেলা ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.
বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে মাসুম চৌধুরী ও সাবেক সভাপতি খায়রুল কবীর তালুকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল ইসলামসহ তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৭টি ইউনিয়নের ৪৯৭ ভোটারের মধ্যে ৪৮৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৩৩৭ ভোট পেয়ে মাসুম চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হন। আর ২৫৩ ভোট পেয়ে রফিকুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পেরেছি। বিগত সরকারের লোকজন আটপাড়ার সম্মেলন তিনবার পণ্ড করে দিয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর মামলা-হামলা করে নানা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। আশা করি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হবে।’
বিজয়ী সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের শত বাধাবিপত্তি, মামলা-হামলাতেও পিছিয়ে না পড়ে আমরা দলের নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম। তাই এই নেতা-কর্মীরা আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, সে জন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত ব এনপ র কম ট র আটপ ড় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে কার কত লাভ-ক্ষতি হলো
চার দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই লড়াইয়ে কেউ পুরোপুরি জয়ী হয়েছে কি না, তা বলা কঠিন। তবে সংঘাতে দুই পক্ষই নিজেদের ‘বিজয়’ দাবি করেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্বল্প পরিচিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তবে ভারত দাবি করেছে, এই গোষ্ঠী পাকিস্তান–সমর্থিত। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ নাকচ করে দিলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেন।
এরপর দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে থাকে। এরপরই সেই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়। ৭ মে সকালে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চারটি স্থানে ‘জঙ্গিঘাঁটি’তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
এরপরের দিনগুলোতে দুই দেশই একে অপরের ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা চালিয়েছে এবং একে অপরকে হামলার জন্য দায়ী করেছে। ১০ মে উভয় দেশ একে অপরের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়।
ভারত শুরুতে পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার একটি ছিল রাওয়ালপিন্ডি। এ শহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান সদর দপ্তরের অবস্থান হওয়ায় একে সামরিক ঘাঁটির শহর (গ্যারিসন সিটি) হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর ভারত আরও কিছু পাকিস্তানি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
যুদ্ধবিরতির পর উভয় দেশই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ‘জয়ী’ দাবি করে এবং নানা ‘প্রমাণ’ উপস্থাপন করে। গত সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা ফোনে কথা বলেন এবং আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ভারতের অন্তত চারটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।
পরিস্থিতি যখন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছিল, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন এবং দাবি করেন, এ যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়েছে। পাকিস্তান এ উদ্যোগের প্রশংসা করলেও ভারত বলেছে, বাইরের কারও হস্তক্ষেপ ছাড়াই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যেই হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পর উভয় দেশই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ‘জয়’ দাবি করে এবং নানা ‘প্রমাণ’ উপস্থাপন করে। গত সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা ফোনে কথা বলেন এবং আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২২ এপ্রিলের ঘটনার পর কেউই পুরোপুরি নিজেদের সত্যিকারের জয়ী বলে দাবি করতে পারে না। বরং উভয় দেশই কিছু লাভ করলেও ক্ষতিও হয়েছে তাদের।
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মুজাফফরাবাদের বিলাল মসজিদের প্রাঙ্গণে এক পাকিস্তানি সেনা। পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, ৭ মে