আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, পরাজিত আওয়ামী লীগ ও তাদের আশ্রয়দাতা ভারতের সরকার বসে নেই। দিন–রাত তারা ভাবছে কীভাবে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা যায়।

আজ শনিবার বিকেলে এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনায় এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এবি পার্টির প্রধান। খুলনা প্রেসক্লাবে দলটির জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত এই আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

দলটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মজিবুর রহমান বলেন, ফ‍্যাসিবাদী শক্তির পক্ষ হয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ভারতের ষড়যন্ত্রমূলক পুশ ইন ও পানি আগ্রাসনের ব‍্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশবাসীকে সোচ্চার ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র ও তাদের পক্ষ হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের নির্লজ্জ আগ্রাসী মনোভাব দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ‍্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে ক্ষুদ্র স্বার্থে বিভেদে লিপ্ত না হয়ে তা মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশ ইনের (ঠেলে পাঠানোর) বিষয়টি উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সামনের বর্ষা মৌসুমে ভারত পানি আগ্রাসনের মাধ্যমে দেশকে ভয়াবহ বন‍্যার সম্মুখীন করতে পারে। এ ব‍্যাপারে এখন থেকে সচেতন ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তি মিলে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন এবি পার্টির প্রধান। তিনি বলেন, সরকার সবাইকে নিয়ে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, খুনিদের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং একটি অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম‍্যাপ (পথনকশা) তৈরি করতে পারত। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিল পরস্পর বিবাদে লিপ্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই রোডম্যাপ তৈরিতে ইতিবাচকভাবে সরকারের প্রতি চাপ ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মাঝখানে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারত। কিন্তু সেসব না করে যে যার মতো বিচ্ছিন্ন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইতিহাস গড়লো ক্রিস্টাল, ম্যানসিটিকে জিতলো প্রথম বড় শিরোপা

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো বড় কোনো শিরোপা জিতে নিল ক্রিস্টাল প্যালেস। শনিবার (১৭ মে) রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত এফএ কাপের ফাইনালে শক্তিশালী ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বড় কোনো ট্রফি জয়ের আনন্দে মাতল দক্ষিণ লন্ডনের ক্লাবটি।

ম্যাচের জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন ইবেরেচি এজে। ম্যাচের ১৬ মিনিটে অসাধারণ এক ভলিতে বল জালে জড়িয়ে দেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। এরপর পুরো ম্যাচজুড়ে সিটির একের পর এক আক্রমণ সামলে দুর্দান্ত গোলকিপিং করেন সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডিন হেন্ডারসন।

ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। পেনাল্টিও পেয়েছিল তারা। কিন্তু ওমর মারমুশের নেয়া দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন হেন্ডারসন।

ম্যাচ শেষে গোলদাতা এজে বলেন, ‘‘এটা আমাদের স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত। কেউই বিশ্বাস করেনি আমরা পারব। কিন্তু আমরা ইতিহাস গড়েছি।’’ উল্লেখ্য, ক্যারিয়ারের শুরুতে আর্সেনালসহ অনেক ক্লাব এজেকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

টানা দ্বিতীয়বারের মতো এফএ কাপের ফাইনালে হেরে হতাশার মৌসুমে শেষ করল ম্যানচেস্টার সিটি। ২০১৬-১৭ মৌসুমের পর এই প্রথমবার তারা কোনো ঘরোয়া শিরোপা ছাড়াই মৌসুম শেষ করল।

এর আগে ১৯৯০ ও ২০১৬ সালের ফাইনালে হেরে গিয়েছিল প্যালেস। তবে তৃতীয় চেষ্টায় সফল হলো তারা। আর দলের অস্ট্রিয়ান কোচ অলিভার গ্লাসনার হয়ে গেলেন ইতিহাসে প্রথম অস্ট্রিয়ান কোচ যিনি এফএ কাপ জিতলেন।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য সিটি আক্রমণে ঝড় তোলে। কেভিন ডি ব্রুইনার শেষ ওয়েম্বলি ম্যাচে দারুণ একটি পাস থেকে হালান্ডের শট ঠেকিয়ে দেন হেন্ডারসন। এরপর গভার্দিওলের হেডও ঠেকিয়ে দেন তিনি।

তবে ১৫ মিনিটের মাথায় একমাত্র আক্রমণেই গোল আদায় করে নেয় প্যালেস। মাতেতার পাসে মুনোজের ক্রস থেকে দারুণ এক ভলিতে গোল করেন এজে। এরপর সিটির চাপ আরও বাড়লেও হেন্ডারসনের নেতৃত্বে রক্ষণভাগ ছিল দুর্ভেদ্য।

একবার মনে হয়েছিল, হেন্ডারসন হয়তো বল হাতে নিয়ে গোলবারের বাইরে চলে গিয়েছেন, তবে ভিএআরের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, লাল কার্ডের প্রয়োজন নেই। পেনাল্টিতে সিটি ভরসা রাখে মারমুশের ওপর। কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন হেন্ডারসন।

ম্যাচ শেষে হেন্ডারসন বলেন, ‘‘আমরা আগেই বুঝেছিলাম, আজ আমাদের দিন। আমরা এই জয়ের যোগ্য। আমি জানতাম ও কোন দিকে শট নেবে। আর আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমি তা ঠেকাতে পারব।’’

শেষদিকে একাধিকবার গোলের কাছাকাছি গেলেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় সিটি। ১০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি তাদের। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে প্যালেস সমর্থকেরা। স্টেডিয়ামে তখন গর্জে ওঠে ক্লাবের অ্যান্থেম ‘গ্ল্যাড অল ওভার’। এক ঐতিহাসিক দিনে আনন্দে ভাসে ক্রিস্টাল প্যালেস ও তাদের সমর্থকেরা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ