এনসিপির সদস্যসচিব আখতারের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে হত্যার হুমকি
Published: 17th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এই হুমকি পাওয়ার কথা জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, শুক্রবার রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় আখতারের গ্রামের বাড়িতে ওই বেনামি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে প্রেরকের নাম হিসেবে লেখা হয়েছে ‘বুলেট’।
ফেসবুক পোস্টে আখতার লিখেছেন, ‘ডাকযোগে আমার গ্রামের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে আমাকে, আমার পরিবার-পরিজনকে খুন করার হুমকি দিয়েছে। চিঠির প্রেরকের ছদ্মনাম “বুলেট”। চিঠিটা ডাকপিয়ন গতকাল (শুক্রবার) বড় ভাইয়ের কাছে দেয়। চিঠি পড়ার পর থেকে বাড়ির মানুষেরা চিন্তিত হয়ে আছেন। যেখানে পাবে, সেখানে খুন করবে, ঝামেলায় ফেলবে এমন হুমকি।’ তিনি আরও লেখেন, ‘বোনাস লাইফ লিড করতেছি। মৃত্যু কয়েকবার কাছে এসে ফিরে গেছে। মরতে হতে পারে জেনেও প্রতিবাদে পিছপা হইনি, কখনো হব না। ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ ভরসা।’
তবে কে বা কারা আখতার ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দিয়ে এই চিঠি পাঠিয়েছেন, তা জানা যায়নি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আগামীকাল রোববার এ নিয়ে রংপুরের স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
গত ৪৮ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে প্রায় ৩ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক গাজা শহরের দিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তর।
শনিবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে তারা এই তথ্য জানায়। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ইসরায়েলের রক্তাক্ত ইতিহাসে আরও একটি ভয়াবহ অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। শুধু উত্তর গাজা গভর্নরেটেই গত দুই দিনে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের এই ধারাবাহিকতা স্পষ্টতই গণহত্যারই অংশ।”
গাজার মিডিয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা ওই অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি, ৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে গাজা শহরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যেখানে তাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোই নেই।
বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের হামলার স্থানে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। ফলে প্রায় ১৪০ জনের লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়ার তেল আল-জাতার এলাকা, বাইত লাহিয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের জন্য স্থাপন করা শত শত তাঁবু পুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি ড্রোনগুলো। গাজার মিডিয়া অফিস বলছে, এই ঘটনার সময় আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা ও নির্লজ্জ সহযোগিতা গভীর উদ্বেগজনক।
গাজা শহরের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া অফিস। সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র বা তাঁবুর ঘাটতির কারণে হাজার হাজার পরিবারকে রাস্তায় বসবাস করতে হচ্ছে, বিশেষ করে আল-জালাআ স্ট্রিট ও আল-সাফতাউই এলাকায়। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি এবং টানা অবরোধ ও বিমান হামলার মধ্যে তারা চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন।
এমন অবস্থায় জরুরিভিত্তিতে গণহত্যা বন্ধ করতে, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক দল পাঠাতে, অবরোধ খুলে মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলি নেতাদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক চার দিনের উপসাগরীয় দেশগুলোতে সফরের সময় ইসরায়েলি বাহিনী ৩৭৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর আগের চার দিনে এই সংখ্যা ছিল ১০০ জনের কাছাকাছি, অর্থাৎ ট্রাম্পের সফরকালীন নিহতের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়েছে — গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে আনাদোলু এই হিসাব পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের খাদ্য, পানি ও ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রেখেছে। এরপর গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে পুনরায় গাজায় হামলা শুরু করে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।