রংপুরের মিঠাপুকুরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করায় ভুক্তভোগীকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। 

অভিযুক্ত দুই তরুণ হলো মামুন মিয়া ও সুজন মিয়া।

অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় এক দিনমজুরের স্ত্রী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ কক্ষে ছিলেন। এ সময় মামুন ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে তরুণ পালিয়ে যায়। পরদিন শনিবার মামুন ও তার লোকজন গৃহবধূর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং তাকে মারধর করে। এ সময় ভুক্তভোগীর দুই মেয়ে ও স্বামী এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আহত চারজনকে ঘরে আটকে রাখে হামলাকারীরা। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে আরেক প্রতিবেশী সুজন মিয়ার বিরুদ্ধে। সেদিনও তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়। পরদিন ২৬ জানুয়ারি সালিসে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। এর জেরে ২২ ফেব্রুয়ারি গৃহবধূর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন গৃহবধূকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হুমকি দিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।

স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিনসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সুজন ও মামুন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তাদের কারণে গ্রামের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তারা নারীদের উত্ত্যক্ত করে। দিনমজুরের স্ত্রীর ঘরে ঢুকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। দুজনের শাস্তি চান তারা।

বিষয়টি নিয়ে সুজন মিয়া ও মামুন মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তারা পলাতক। পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় গৃহবধূর অভিযোগের তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগের মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ল কজন ঘটন য় এ ঘটন গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে সখ্য গড়ে ডেকে এনে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, ২ নারীসহ গ্রেপ

ফেসবুকে সখ্যগড়ে ডেকে এনে দুই যুবককে আটকে রেখে দাবিকৃত এক লাখ টাকা মুক্তিপণের মধ্যে ৮২হাজার ২৭০ টাকা আদায় করেও বাকি টাকার নির্যাতন করে একটি প্রতারক চক্র।

পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের  চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ও  ভুক্তভোগী দুই যুবককে উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ মুক্তিপণ বাবদ আদায়কুত টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটে নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নাসিক ৩নং ওয়ার্ড রসূলবাগ এলাকায়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মোসা. সুমাইয়া খাতুন (২০), মো. শাকিল (২৫), মো. ফাহিম হোসেন (২৭), হোসনেয়ারা (৩০)।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে ভোর রাত ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩নং ওয়ার্ড রসূলবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী দুইজনকে উদ্ধার করাসহ প্রতারক চক্রের ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জানাগেছে, ভুক্তভোগী মো. ওয়াসিম এর সাথে মোসা. সুমাইয়া খাতুনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তারা প্রায় সময়ই মোবাইল ফোনে কথপোকথন করতো। তারই একপর্যায়ে ১ জুলাই সকালে মোসা. সুমাইয়া খাতুন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে মো. ওয়াসিমের মোবাইলে ফোন করে কথা বলে এবং একপর্যায়ে সুমাইয়া তার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার রসুলবাগ এলাকার ঈগল বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর দেখা করার জন্য বলে। 

এরপর দুপুর ১টার দিকে মো. ওয়াসিম তার এক বন্ধু আল-আমিনকে নিয়ে সুমাইয়ার সাথে দেখা করে। এ সময় তাদের কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযুক্ত মো. শাকিল, মো. ফাহিম হোসেন, হোসনেয়ারা ও ৫-৬জন আসে। তার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়াসিম ও আল-আমিনকে জোরপূর্বক সুমাইয়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে আটক আটকে রাখে। 

তারপর তারা মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ টাকা দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ওই প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে, তাদের ভয়ে ওয়াসিমের কাছে থাকা নগদ ৩ হাজার ৫শ’ টাকা এবং আল-আমিনের সাথে থাকা ব্যবসায়িক কাজের নগদ ৪৬ হাজার ৫শ’ টাকা ও আল-আমিন এর ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্ট ০১৯৭৮-১৮৮৬৪৩ নম্বর থেকে অপহরণকারীদের প্রদানকৃত বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট নম্বর ০১৭৯৯-৩৩১১২৬ এ ২ হাজার ৫শ’ টাকা মুক্তিপণ বাবদ তাদের দেয়া হয়।

বাকী টাকার জন্য ওয়াসিম ও আল-আমিনকে মারপিট করতে থাকলে, তাদের বন্ধু সোহেল (৩২) ও ইয়াকুব (২৫)দের বাকি টাকা পাঠানোর জন্য বললে, সেই মোতাবেক সোহেল (৩২) অপহরনকারীদের প্রদানকৃত বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট নম্বর ০১৭৯৯-৩৩১১২৬ এ ৯ হাজার ৮২০টাকা এবং অপর বন্ধু ইয়াকুব (২৫) বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট নম্বর ০১৭০৯-২২২৮১৯ এ ১৯হাজার ৯৫০টাকা মুক্তিপণ বাবদ প্রদান করে।

পরে বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে, থানা থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বজলুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে ওয়াসিম ও আল-আমিনকে উদ্ধার করে। এ সময় এ চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করলেও কৌশলে কয়েকজন পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ গ্রেপ্তারদের হেফাজত হতে মুক্তিপণ বাবদ আদায়কৃত টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, মোবাইলে প্রেমের নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিভাকে ডেকে এনে আটকে রখে অর্থ হাতিয়ে নেয়া এ চক্রটি। এ চক্রের গতিবিধি আমাদের নজরে ছিল। ২ অপহৃতকে উদ্ধারসহ ৪জন আসামিকে ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ চক্রের হাত থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন হওযার অনুরোধ করছি। আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে ব্যাংকের সিঁড়ি থেকে ২ নারীর আড়াই লাখ টাকা লুট
  • ফেসবুকে সখ্যতা, ডেকে এনে মুক্তিপণ আদায়, দুই নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
  • ফেসবুকে সখ্য গড়ে ডেকে এনে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, ২ নারীসহ গ্রেপ
  • কুপিয়ে জখমের প্রতিবাদে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
  • আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই: নাহিদ ইসলাম