ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে হামলা, আহত ৪
Published: 18th, May 2025 GMT
রংপুরের মিঠাপুকুরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করায় ভুক্তভোগীকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযুক্ত দুই তরুণ হলো মামুন মিয়া ও সুজন মিয়া।
অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় এক দিনমজুরের স্ত্রী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ কক্ষে ছিলেন। এ সময় মামুন ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে তরুণ পালিয়ে যায়। পরদিন শনিবার মামুন ও তার লোকজন গৃহবধূর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং তাকে মারধর করে। এ সময় ভুক্তভোগীর দুই মেয়ে ও স্বামী এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আহত চারজনকে ঘরে আটকে রাখে হামলাকারীরা। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে আরেক প্রতিবেশী সুজন মিয়ার বিরুদ্ধে। সেদিনও তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়। পরদিন ২৬ জানুয়ারি সালিসে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। এর জেরে ২২ ফেব্রুয়ারি গৃহবধূর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন গৃহবধূকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হুমকি দিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।
স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিনসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সুজন ও মামুন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তাদের কারণে গ্রামের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তারা নারীদের উত্ত্যক্ত করে। দিনমজুরের স্ত্রীর ঘরে ঢুকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। দুজনের শাস্তি চান তারা।
বিষয়টি নিয়ে সুজন মিয়া ও মামুন মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তারা পলাতক। পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় গৃহবধূর অভিযোগের তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগের মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল কজন ঘটন য় এ ঘটন গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।