নগরের জিইসি মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন বিলবোর্ড অপসারণে গিয়ে ফিরে এসেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভ্রমমাণ আদালত। রোববার সকালে বিলবোর্ডটি উচ্ছেদে যান সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতি সর্ববিদ্যা। দুপুরে উচ্ছেদ না করেই ফিরে আসেন তারা। 

তবে ভ্রমমাণ আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিলবোর্ডটি সরিয়ে নিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন। বিলবোর্ডটির মালিক এ্যাডফ্রেম নামের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য আরশেদুল আলম বাচ্চু ও তার ব্যবসায়িক অংশীদার হাফিজ উল্লাহ আমিন তিমুর। 

ভ্রমমাণ আদালত সূত্র জানান, নগরের জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজায় অবস্থিত বড় পর্দার বিলবোর্ডটি অপসারণে সকাল ১০টায় অভিযান শুরু করেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে বড় ক্রেন নিয়ে যাওয়া হয়। সেন্ট্রাল প্লাজার ছাদে বিলবোর্ডটির একাংশ কেটেও ফেলা হয়। কিন্তু সেন্ট্রাল প্লাজার পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বন্ধ করা ছাড়া অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ সময় জিইসি মোড়ের অদূরে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বাওয়া) এএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছিল। ফলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ সময়ের মধ্যে বিলবোর্ডটির মালিকরা মেয়রের কাছ থেকে নিজেরা সরিয়ে নেওয়ার শর্তে ২৪ ঘণ্টার সময় নিয়েছেন। মেয়র তাদের সময় দিলে অভিযানে থাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফিরে আসেন।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের ভ্রমমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবু জাফর সমকালকে বলেন, ‘বিলবোর্ডটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার মালিকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেরা সরিয়ে নিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান স্থগিত করে চলে এসেছে ভ্রমমাণ আদালত।’

২০১৫ সালের পর থেকে চট্টগ্রাম নগরে বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমোদন বন্ধ রয়েছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নগরের জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজায় বিলবোর্ড স্থাপন করেন আওয়ামী লীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু ও তার ব্যবসায়িক অংশীদার মুহাম্মদ হাফিজ উল্লাহ আমিন তিমুর। ২০২২ সালের দিকে জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজার ছাদে ও দেয়ালে ৮টি বিলবোর্ড স্থাপন করে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এ্যাডফ্রেম। ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বার্ষিক ২০ লাখ টাকায় বিলবোর্ডগুলো অনুমোদন দেয় সিটি করপোরেশন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন বাতিল করে বিলবোর্ডগুলো সরিয়ে নিতে সাতদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা বিলবোর্ডগুলো না সরিয়ে আদালতের আশ্রয় নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশালে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা

বরিশালে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক আক্তার ফারুক শাহীনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বরিশালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন বিএনপির পদ স্থগিত থাকা আইনজীবী বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন। বিচারক মো. হাবিবুর রহমান চৌধুরী মামলার পরবর্তী দিন আগামী ১ সেপ্টেম্বর ধার্য করেন ও শাহীনের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন। শাহীন দৈনিক যুগান্তরের বরিশাল ব্যুরো প্রধান।  

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত বছর ১১ আগস্ট ‘বরিশালে ১০ কোটি টাকার পুকুর ভরাটের চেষ্টা বিএনপি নেত্রী শিরিনের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। তার দাদা ৬৫ বছর পূর্বে পুকুরটি ক্রয় করেছেন। ওয়ারিশ সূত্রে তিনি আধা শতাংশ মালিকও নন। এর মূল্যে কোনোভাবেই ১০ কোটি টাকা হতে পারে না। তাছাড়া পুকুরটি এখন ব্যবহার অযোগ্য। সেটি ভরাটের সঙ্গে তিনি (শিরিন) কোনোভাবেই জড়িত নন।

মামলা করা পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী শিরিন বলেন, ‘সংবাদটি প্রকাশ করে আমার রাজনৈতিক ও পরিবারের সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে। একাধিক প্রতিবাদ লিপি দিলেও পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি। ব্যুরো প্রধানকে পর পর দিনটি আইনি নোটিশ দিলেও তিনি জবাব দেননি’। 

এ বিষয়ে সাংবাদিক শাহিন বলেন, ‘জাল দলিল সূত্রে পুকুরটির মালিকানা বদল হয়েছে। দালিলিকভাবে সেটি জনস্বার্থে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত পুকুর। জলাশয় আইনে এটি ভরাট করা অপরাধ। ৫ আগস্টের পর পটপরিবর্তনের পর শিরিনের ভাই শামিম সশরীরে উপস্থিত থেকে পুকুর ভরাট করেন। ভরাট করায় পরিবেশ অধিদপ্তর যে নোটিশ দিয়েছে, তাতেও শিরিনের নামও রয়েছে। মামলার বিষয়টি আদালতে আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে’।

সম্পর্কিত নিবন্ধ