আ’লীগ নেতার বিলবোর্ড সরাতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিল চসিক
Published: 18th, May 2025 GMT
নগরের জিইসি মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন বিলবোর্ড অপসারণে গিয়ে ফিরে এসেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভ্রমমাণ আদালত। রোববার সকালে বিলবোর্ডটি উচ্ছেদে যান সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতি সর্ববিদ্যা। দুপুরে উচ্ছেদ না করেই ফিরে আসেন তারা।
তবে ভ্রমমাণ আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিলবোর্ডটি সরিয়ে নিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা.
ভ্রমমাণ আদালত সূত্র জানান, নগরের জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজায় অবস্থিত বড় পর্দার বিলবোর্ডটি অপসারণে সকাল ১০টায় অভিযান শুরু করেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে বড় ক্রেন নিয়ে যাওয়া হয়। সেন্ট্রাল প্লাজার ছাদে বিলবোর্ডটির একাংশ কেটেও ফেলা হয়। কিন্তু সেন্ট্রাল প্লাজার পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বন্ধ করা ছাড়া অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ সময় জিইসি মোড়ের অদূরে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বাওয়া) এএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছিল। ফলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ সময়ের মধ্যে বিলবোর্ডটির মালিকরা মেয়রের কাছ থেকে নিজেরা সরিয়ে নেওয়ার শর্তে ২৪ ঘণ্টার সময় নিয়েছেন। মেয়র তাদের সময় দিলে অভিযানে থাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফিরে আসেন।
জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের ভ্রমমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবু জাফর সমকালকে বলেন, ‘বিলবোর্ডটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার মালিকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেরা সরিয়ে নিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান স্থগিত করে চলে এসেছে ভ্রমমাণ আদালত।’
২০১৫ সালের পর থেকে চট্টগ্রাম নগরে বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমোদন বন্ধ রয়েছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নগরের জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজায় বিলবোর্ড স্থাপন করেন আওয়ামী লীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু ও তার ব্যবসায়িক অংশীদার মুহাম্মদ হাফিজ উল্লাহ আমিন তিমুর। ২০২২ সালের দিকে জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজার ছাদে ও দেয়ালে ৮টি বিলবোর্ড স্থাপন করে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এ্যাডফ্রেম। ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বার্ষিক ২০ লাখ টাকায় বিলবোর্ডগুলো অনুমোদন দেয় সিটি করপোরেশন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন বাতিল করে বিলবোর্ডগুলো সরিয়ে নিতে সাতদিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা বিলবোর্ডগুলো না সরিয়ে আদালতের আশ্রয় নেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ