সিএসই’র ৫ ট্রেক পেল ফিক্স সার্টিফিকেট
Published: 19th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সদস্যভুক্ত স্বনামধন্য ৫টি ট্রেকহোল্ডার ফিক্স/ফাস্ট প্রোটকল সার্টিফিকেট প্রদান করেছে এবং একইসঙ্গে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট টেকনোলজি ডাইভারসিফিকেশন’ শীর্ষক কর্মশালা আয়োজন করেছে। এই কর্মশালায় সিএসই’র বিভিন্ন ট্রেকদের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
রবিবার (১৮ মে) চট্টগ্রামে সিএসই’র প্রধান কার্যালয়ে ট্রেকহোল্ডারকে ফিক্স/ফাস্ট প্রোটকল সার্টিফিকেট প্রদান ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সিএসই’র এক্সচেঞ্জ ব্রেন্ডিং ডিপার্টমেন্টের পিএন্ডসিআর তানিয়া বেগম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসই’র সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ, কী ঘটছে বিএসইসির চেয়ারম্যানের ভাগ্যে?
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ফিক্স/ফাস্ট প্রোটকল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ট্রেকগুলো হলো- আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ইউনাইটেড ফিনান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড, রয়্যাল ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং প্রুডেন্সিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড। এর মাধ্যমে ট্রেকগুলো তাদের গ্রাহকদের সেবা প্রদানে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।
সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার উল্লেখিত ট্রেকদের সম্মানিত প্রতিনিধিদের কাছে ফিক্স/ফাস্ট প্রোটকল সার্টিফিকেটগুলো হস্তান্তর করেন। এসময় সিএসই’র চিফ রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মেদ মাহাদি হাসান, জেনারেল ম্যানেজার অ্যান্ড হেড অব বিজনেস অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদ মনিরুল হক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অ্যান্ড হেড অব আইটি সার্ভিসেস হাসনাইন বারী, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অ্যান্ড হেড অব সারভিলেন্স অ্যান্ড মপস মো.
সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, এই ফিক্স/ফাস্ট প্রোটকল সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া ট্রেকহোল্ডারগণের জন্য সময়োপযোগী এবং লেনদেনের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী। এটি মূলত একটি ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম যার মাধ্যমে ব্রোকারদের উভয় বাজারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। বিশেষ করে শর্ট সেল প্রতিরোধ করতে পারবে এবং ডিএসই এবং সিএসই উভয় মার্কেটের শেয়ারের তুলনামূলক উপস্থিতি খুব সহজে একটি প্লাটফর্মে দেখে কেনাবেচার দ্রুত সিন্ধান্ত নিতে পারবে। এই প্রযুক্তি পুঁজিবাজারের লেনদেনের ধারাকে আরো অগ্রগামী করবে।
তিনি সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
এরপর ‘ক্যাপিটাল মার্কেট টেকনোলজি ডাইভারসিফিকেশন’ শীর্ষক কর্মশালায় কোয়ান্ট ফিনটেক লিমিটেডের সিইও মো. জাভেদ হোসেন ওএমএস (অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপনা প্রদান করেন। এছাড়া ক্যাপিটাল মার্কেট টেকনোলজির আধুনিক ও যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কিভাবে দক্ষতা বৃদ্ধি, ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ করা যায় সে ব্যাপারে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বিশদ আলোচনা করেন। এই কর্মশালায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ট্রেক প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ক স ফ স ট প র টকল স র ট ফ ক ট স এসই র উপস থ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে
অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।
১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’
এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।
পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)