ক্যানসার নির্ণয়ে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি কেন গুরুত্বপূর্ণ, কোথায় করা যায়, ব্যয় কেমন
Published: 19th, May 2025 GMT
কীভাবে করা হয়
ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার কোষের ধরন ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের একটি পরীক্ষা। এতে টিস্যুর নমুনা (যেমন বায়োপসি থেকে নেওয়া কোষ) পরীক্ষা করে ক্যানসারের ধরন ও আচরণ সম্পর্কে জানা যায়। এই পদ্ধতিতে কিছু বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ (অ্যান্টিবডি) ব্যবহার করা হয়, যা ক্যানসার কোষের নির্দিষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে মিলে যায়। এই প্রোটিনগুলো ক্যানসারের ধরন ও চিকিৎসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। সহজভাবে বললে, ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার কোষের একটি ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ তৈরির পদ্ধতি, যা চিকিৎসককে বুঝতে সাহায্য করে যে এটি কোন ধরনের ক্যানসার এবং কীভাবে এর চিকিৎসা পরিকল্পনা করা উচিত।
ধরা যাক, একজন রোগীর ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়েছে। এটি ফুসফুসের ক্যানসার নাকি অন্য কোথাও থেকে ছড়িয়ে আসা ক্যানসার, তা বুঝতে বায়োপসির মাধ্যমে সংগৃহীত টিস্যুর নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি পরীক্ষা করা যায়। নমুনায় বিশেষ রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়, যা কোষের নির্দিষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এরপর মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে প্রোটিনগুলো পরীক্ষা করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফুসফুসের ক্যানসারে সাধারণত টিটিএফ১ নামক একটি প্রোটিন পাওয়া যায়, যা নিশ্চিত করে যে ক্যানসারটির উৎস ফুসফুসেই।
কেন গুরুত্বপূর্ণইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার নির্ণয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি—
১.
২. চিকিৎসার দিকনির্দেশনা দেয়। কিছু ক্যানসারে নির্দিষ্ট প্রোটিন থাকে, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে বিশেষ ওষুধ (টার্গেটেড থেরাপি) দেওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, এএলকে প্রোটিন পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করা যায়, যা ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর।
৩. ইমিউনোথেরাপির সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। পিডি-এল১ নামক প্রোটিনের উপস্থিতি দেখে বোঝা যায় যে রোগীর ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপি কার্যকর হবে কিনা।
৪. রোগের ভবিষ্যৎ নির্দেশ করতে পারে। ক্যানসার কতটা আক্রমণাত্মক বা কত দ্রুত ছড়াতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
কোথায় করা যায়, ব্যয় কেমনহিস্টোপ্যাথলজির এই আধুনিক পদ্ধতি নিশ্চিত করে যে রোগী সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না। ভুল নির্ণয়ের ঝুঁকি কমায় এই পদ্ধতি। তবে এটি একটি বিশেষায়িত পরীক্ষা, তাই সব জায়গায় এর সুবিধা না-ও থাকতে পারে। সাধারণত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্য বড় শহরের হাসপাতালগুলোতে এই পরীক্ষা করা যায়। এটি একটি ব্যয়বহুল পরীক্ষা। সরকারি হাসপাতালে এই সুবিধা বাড়ানো গেলে সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম মোস্তফা, চিফ কনসালট্যান্ট (প্যাথলজি), আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩
দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রতন/মাসুদ