কীভাবে করা হয়

ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার কোষের ধরন ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের একটি পরীক্ষা। এতে টিস্যুর নমুনা (যেমন বায়োপসি থেকে নেওয়া কোষ) পরীক্ষা করে ক্যানসারের ধরন ও আচরণ সম্পর্কে জানা যায়। এই পদ্ধতিতে কিছু বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ (অ্যান্টিবডি) ব্যবহার করা হয়, যা ক্যানসার কোষের নির্দিষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে মিলে যায়। এই প্রোটিনগুলো ক্যানসারের ধরন ও চিকিৎসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। সহজভাবে বললে, ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার কোষের একটি ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ তৈরির পদ্ধতি, যা চিকিৎসককে বুঝতে সাহায্য করে যে এটি কোন ধরনের ক্যানসার এবং কীভাবে এর চিকিৎসা পরিকল্পনা করা উচিত।

ধরা যাক, একজন রোগীর ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়েছে। এটি ফুসফুসের ক্যানসার নাকি অন্য কোথাও থেকে ছড়িয়ে আসা ক্যানসার, তা বুঝতে বায়োপসির মাধ্যমে সংগৃহীত টিস্যুর নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি পরীক্ষা করা যায়। নমুনায় বিশেষ রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়, যা কোষের নির্দিষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এরপর মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে প্রোটিনগুলো পরীক্ষা করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফুসফুসের ক্যানসারে সাধারণত টিটিএফ১ নামক একটি প্রোটিন পাওয়া যায়, যা নিশ্চিত করে যে ক্যানসারটির উৎস ফুসফুসেই।

কেন গুরুত্বপূর্ণ

ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি ক্যানসার নির্ণয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি—

১.

সঠিক নির্ণয় নিশ্চিত করে। ক্যানসারের ধরন ও উৎস নির্ধারণ করে। এতে চিকিৎসার পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

২. চিকিৎসার দিকনির্দেশনা দেয়। কিছু ক্যানসারে নির্দিষ্ট প্রোটিন থাকে, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে বিশেষ ওষুধ (টার্গেটেড থেরাপি) দেওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, এএলকে প্রোটিন পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করা যায়, যা ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর।

৩. ইমিউনোথেরাপির সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। পিডি-এল১ নামক প্রোটিনের উপস্থিতি দেখে বোঝা যায় যে রোগীর ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপি কার্যকর হবে কিনা।

৪. রোগের ভবিষ্যৎ নির্দেশ করতে পারে। ক্যানসার কতটা আক্রমণাত্মক বা কত দ্রুত ছড়াতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।

কোথায় করা যায়, ব্যয় কেমন

হিস্টোপ্যাথলজির এই আধুনিক পদ্ধতি নিশ্চিত করে যে রোগী সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না। ভুল নির্ণয়ের ঝুঁকি কমায় এই পদ্ধতি। তবে এটি একটি বিশেষায়িত পরীক্ষা, তাই সব জায়গায় এর সুবিধা না-ও থাকতে পারে। সাধারণত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্য বড় শহরের হাসপাতালগুলোতে এই পরীক্ষা করা যায়। এটি একটি ব্যয়বহুল পরীক্ষা। সরকারি হাসপাতালে এই সুবিধা বাড়ানো গেলে সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী হবে।

অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম মোস্তফা, চিফ কনসালট্যান্ট (প্যাথলজি), আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ধরন ও পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

‘৫৪ বছরে নদীর যে ক্ষতি হয়েছে, তা এক-দেড় বছরে সমাধান সম্ভব না’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘‘গত ৫৪ বছরে নদীকে যেভাবে দখল, পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ না করে অবকাঠামো দিয়ে এবং এক ধরনের জেদ করে নদীর যে ক্ষতিটা আমরা করেছি তা এক-দেড় বছরে সরকারের পক্ষে পুরো সমাধান করা সম্ভব না।’’

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আটঘরিয়া এলাকায় বড়াল-১ ভেল্ট রেগুলেটর ও বড়াল নদী পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘সবকিছু সমাধান করা না গেলেও সমস্যা সমাধানে রূপরেখা করে যাওয়া সম্ভব। যা ইতোমধ্যেই আমরা শুরু করেছি। যার অংশ হিসেবে প্রতিটা বিভাগে আমরা একটি করে নদী নিয়েছি।’’

‘‘আসলে প্রতিটি জেলায় একটি করে নদী দখলমুক্ত-দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সেগুলোর কাজ করে যাওয়ার সময় আমরা পাব না। ফলে প্রতিটি বিভাগে একটি করে নদী, কক্সবাজারে একটি ও ঢাকায় আলাদা চারটি নদীর পরিকল্পনা করে বাজেট এনে কাজ শুরু করে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’- যোগ করেন তিনি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোবাশশেরুল ইসলাম, নাটোর জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।

ঢাকা/আরিফুল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ