গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছে বিএনপি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
Published: 19th, May 2025 GMT
গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে বিএনপি আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে আজ সোমবার বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাকের সমর্থকেরা। নগর ভবনের মূল ফটকে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কারণেই আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না।
মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ না হওয়ার পেছনে ১০টি জটিলতার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এসব জটিলতা নিরসন না করা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে। ফলে সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়াসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তাঁর পোস্টে ১০টি বিষয় উল্লেখ করেছেন। পোস্টের এই অংশটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘‘প্রথমত,
আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইবুনাল এই রায় প্রদান করেছে।
দ্বিতীয়ত,
নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে, এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।
তৃতীয়ত,
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও, মতামত দেওয়ার আগেই এবং একই সাথে দুইজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
চতুর্থত,
উক্ত মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না, এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোন নির্দেশনার উল্লেখ নেই।
পঞ্চমত,
শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা এখনও বিচারাধীন।
ষষ্ঠত,
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্ত মামলায়, আর্জি সংশোধন সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইবুনাল। ফলে ট্রাইবুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না।
সপ্তম,
মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে; কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
অষ্টম,
নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে “কোনপ্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ” এর কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোন নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে।
নবম,
এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।
দশম,
আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।”
উচ্চ আদালতে বিচারাধীন এবং উল্লিখিত এসব জটিলতা নিরসন না করা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয় উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ লেখেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে। ফলে সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়াসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসব জটিলতা নিরসন হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দিতে কোনো সমস্যা নেই।
পোস্টে একটি ছবিও যুক্ত করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। ওই ছবি প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধে ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যক্রমের কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না! আবার কেউ বলবেন না যে এটা সাধারণ জনগণ করছে, কারণ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপের নির্দেশনা এবং গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দলীয় নেতা-কর্মীরাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’
আরও পড়ুননগর ভবনে তালা, গুলিস্তান মোড়ে ৬ ঘণ্টা ইশরাকের সমর্থকদের বিক্ষোভ, যানজট ৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় সরক র ব ভ গ উপদ ষ ট উল ল খ ইশর ক গ রহণ ন রসন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি আসতে পারব না, আপনারা যা পারেন করেন’, দুদক কর্মকর্তাকে পিআইও
ছবি: প্রথম আলো