দুই দাবিতে পোশাক কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ
Published: 19th, May 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঈদের আগে অতিরিক্ত কাজ না করাসহ দুটি দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
উপজেলার ভান্নারা এলাকায় গতকাল সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ এলাকার জালো নিটওয়্যার লিমিটেড নামে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকালে কারখানায় ঢুকে ঈদের আগে অতিরিক্ত কাজ না করা ও অংশগ্রহণকারী কমিটি (পিসি) বিলুপ্ত করার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গিয়ে মৌচাক-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। এ সময় শিল্প-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আঞ্চলিক সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে গেলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় শ্রমিকরা সড়কের পাশের দোকানপাটে অবস্থান নিয়ে একত্র হওয়ার চেষ্টা করলে সেখানে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সরিয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদে যে কয়দিন ছুটি দিবে তা পুষিয়ে নিতে ঈদের আগেই বন্ধের দুই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তারা (শ্রমিক) বন্ধের দিনগুলোতে কাজ না করার মতামত জানিয়ে কারখানার অংশগ্রহণকারী কমিটি বিলুপ্তির দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো না মানলে তারা আবারও আন্দোলন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
‘জালো নীটওয়্যার লিমিটেড’ নামক কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ভান্নারা এলাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কয়েকটি দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পুলিশ তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কারখানার আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে অব্যহতি পাওয়া এসআইদের মানববন্ধন
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ (ক্যাডেট) উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)।
আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে পুলিশ সদরদপ্তরের সামনের সড়কের এক পাশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। স্লোগানের মধ্যে ছিল—‘এক বছরের পরিশ্রম, বৃথা কেন জানতে চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই, চাকরি পুনর্বহাল চাই’, ‘রাষ্ট্রের বোঝা নয়, সেবক হতে চাই’, ‘বেতন ছাড়া ৩৬৫ দিন, আমার চাকরি ফিরিয়ে দিন’, ‘লাল সবুজের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্রশিক্ষণরত অবস্থায় গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যে ‘অযৌক্তিক’ কারণ দেখিয়ে চার ধাপে ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। চাকরি ফিরে পেতে তারা গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত করছিলেন। সে সময় দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দাবি মানা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা আবার আন্দোলনে নেমেছেন।
অব্যাহতি পাওয়া রুবেল চন্দ্র দাস বলেন, ‘অযৌক্তিক কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ছয় মাস ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনছে না। সচিবের পক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সামনে এসেছি, যাতে আইজিপি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করেন।’
অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই রকিবুল হাসান বলেন, ‘চাকরি না থাকায় পরিবার নিয়ে বিপাকে আছি। এখন আমাদের দেশের সেবা করার কথা, কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। তাই আমরা চাকরি ফিরে পেতে আইজিপি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চার ধাপে ৪০তম ব্যাচের ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নাশতা না খেয়ে হট্টগোল, প্রশিক্ষকের আদেশ না শোনা, অমনোযোগিতার মতো কারণ দেখানো হয়। অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকে তাঁরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।