চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকেই ইনস্টিটিউটের আসবাব মূল ক্যাম্পাসে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী বৃহস্পতিবার মূল ক্যাম্পাসেই ইনস্টিটিউটের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে।

চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রমে খুশি শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা চারুকলাকে স্বাগত জানিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করছেন। ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও স্থানান্তরের নানা ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে অনুভূতি জানাচ্ছেন।

এর আগে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত ২১ এপ্রিল এই দাবিতে ৯ শিক্ষার্থী অনশনেও বসেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি সিন্ডিকেট ডেকে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ৩৪ ঘণ্টা পর তাঁরা অনশন প্রত্যাহার করেছিলেন।

চারুকলার শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই একটি ট্রাক ও তিনটি পিকআপ ভ্যানে মালামাল মূল ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব মালামাল ড.

আব্দুল করিম ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় রাখা হচ্ছে। সেখানেই চারুকলার শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম হবে।

এ বিষয়ে জানতে ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা মূল ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করেছেন। আজ তাঁরা বাস্তবায়ন দেখছেন। এত দিনের কষ্ট আর বঞ্চনা ভুলে সবাই খুশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁরা চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছেন। আসবাব স্থানান্তরের কাজের জন্য আপাতত চারুকলার ক্লাস বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মূল ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু হবে।

আন্দোলনের শুরু ২০২২ সালে

চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন শিল্পী রশিদ চৌধুরী। ২০১০ সালের ২ আগস্ট এটি নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে একীভূত হয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে ইনস্টিটিউটটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগরের মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০০।

২০২২ সালের নভেম্বরে শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার পর ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি তাঁরা ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করেন। একপর্যায়ে ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।

দাবি না মানায় ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে তালা দেন। পরে কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের সময় দিয়ে ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি শর্ত সাপেক্ষে শ্রেণিকক্ষে ফেরেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় ৩১ জানুয়ারি আবারও অবরোধ শুরু হয়।

একই দিনে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাসে ফেরার দাবিতে অবস্থান নেয়। এর মধ্যেই ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে তল্লাশি চালায় পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি। পরদিন শ্রেণি কার্যক্রম এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে ফিরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁদের কর্মসূচিতে হামলা চালান নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। পরে সেশনজট কমাতে শিক্ষার্থীরা ৩ মে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। চলতি বছরের শুরুতে সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এপ্রিলের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন।

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের ২১ এপ্রিল আবার আন্দোলনে নামেন। এরপরই সিন্ডিকেট সভায় চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ র কল ক

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ফরম পূরণ ২০ মে থেকে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের অনার্স প্রথম বর্ষের নিয়মিত-অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ২০ মে থেকে শুরু, এ কার্যক্রম চলবে আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত। গতকাল রোববার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত ও গ্রেড উন্নয়ন এবং ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শুধু প্রোমোটেড শিক্ষার্থীরা ‘এফ’ গ্রেডপ্রাপ্ত কোর্সে ২০২৪ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অনার্স প্রথম বর্ষ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফরম পূরণসংক্রান্ত আবেদন ও সংশ্লিষ্ট কোর্সের ইনকোর্স নম্বর দেওয়াসহ যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে ২০ মে থেকে শুরু হবে, টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ জুন।

আবেদন ফরম সংগ্রহ

অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষার আবেদন ফরম পরীক্ষার্থী নিজে অথবা কলেজ কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অথবা www.nubd.info/honours থেকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে সঠিকভাবে পূরণ করে Application Form ডাউনলোড করে প্রিন্ট কপি নির্ধারিত ফিসহ নিজ নিজ বিভাগে জমা দিবেন।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণের শর্তাবলি

নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে রেজিস্ট্রেশনকৃত অনার্স কোর্সের সব ছাত্রছাত্রী (যাঁরা রেগুলেশন অনুযায়ী কোর্স সম্পন্ন করেছেন) ২০২৪ সালের অনার্স প্রথম বর্ষের নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস ও সংশোধিত রেগুলেশন অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুনসাত কলেজে নতুন প্রশাসক, প্রধান দপ্তর ঢাকা কলেজে২২ ঘণ্টা আগে

অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য

২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থী অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে Not Promoted হয়েছেন অথবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি, ওই সব শিক্ষার্থী অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০২৪ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। Not Promoted শিক্ষার্থীকে পূর্ববর্তী বছরের পাস করা কোর্সের পরীক্ষা দিতে হবে না।

গ্রেড উন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের জন্য

২০২৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষে যেসব শিক্ষার্থী নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় বর্ষে প্রমোশন পেয়েছেন, ওই সব শিক্ষার্থীরা শুধু C, C+ এবং D গ্রেডপ্রাপ্ত কোর্স/কোর্সগুলোয় গ্রেড উন্নয়ন পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ২টি (দুই) পত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

যেসব শিক্ষার্থী ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় বর্ষে প্রমোশন পেয়েছেন কিন্তু এক বা একাধিক কোর্সে এফ গ্রেড রয়েছে, তাঁরা ২০২৪ সালের পরীক্ষায় এফ গ্রেডপ্রাপ্ত কোর্স বা কোর্সগুলোয় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

সব এফ গ্রেডপ্রাপ্ত কোর্সে পরীক্ষা দিয়ে (রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদে) অবশ্যই ন্যূনতম ‘D’ গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।

২০২৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে C Promoted–প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের অনুপস্থিতপত্রে ২০২৪ সালের পরীক্ষায় অবশ্যই অংশগ্রহণ করতে হবে।

আরও পড়ুনউপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন করল সরকার৪ ঘণ্টা আগে

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য শর্তাবলি

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে এক বা একাধিক কোর্সে (এফ) গ্রেডপ্রাপ্ত (অকৃতকার্য) শিক্ষার্থীরা সর্বমোট পাঁচ হাজার টাকা ফি প্রদান করে শুধু ২০২৪ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নবায়নের কোনো প্রয়োজন হবে না। কোনো শিক্ষার্থী ফরম পূরণ/পরীক্ষায় অংশগ্রহণ/অকৃতকার্য হলে কোনো অবস্থাতেই পরবর্তী সময় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে না। উল্লেখ্য ব্যবহারিক পরীক্ষায় গেড উন্নয়নের কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনসাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, চলবে ভিন্ন মডেলে ১৭ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহ মোহাম্মদ সগির অ্যান্ড কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল
  • ৪৩তম বিসিএস: অবশেষে গেজেটভুক্ত হলেন বাদ পড়া ১৬২ প্রার্থী
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ফরম পূরণ ২০ মে থেকে
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ফাইনাল প্রোগ্রাম, ভর্তির সময় বৃদ্ধি ২১ জুন
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ স্নাতকে দ্বৈত ভর্তি, বাতিলের জরুরি নোটিশ