পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ কবে, কখন
Published: 21st, May 2025 GMT
পাঁচ ম্যাচ নয়, সিরিজ হবে তিন ম্যাচের—এমনটা চূড়ান্ত হয়েছিল গতকালই। আজ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজের সেই তিন ম্যাচের দিনক্ষণ।
পিসিবির সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিরিজের সব ম্যাচই হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। সিরিজ শুরু হবে ২৮মে বুধবার। পরের দুটি ম্যাচ ৩০ মে শুক্রবার ও পয়লা জুন রোববার। সব কটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায়।
আগের সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজে পাঁচ টি-টোয়েন্টি হওয়ার কথা ছিল লাহোর ও ফয়সালাবাদে। তবে ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে সিরিজই অনিশ্চয়তাই পড়ে যায়। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে সরকারের সবুজ সংকেতে দেরিতে হলেও সিরিজটি খেলার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ।
তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অনুরোধ জানান, যেন দ্রুত সময়ে সফর শেষ করা যায়। ঈদুল আজহার আগেই দেশে ফেরার চিন্তা থেকে শেষ পর্যন্ত সিরিজের ব্যাপ্তি ৫ থেকে ৩ ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ভেন্যু তালিকা বাদ পড়েছে ফয়সালাবাদও।
সফরটি নিয়ে গতকাল দুবাইয়ে পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নাজমূল আবেদীন। বিসিবি ম্যাচ তিনটি আয়োজনের প্রস্তাব দেয় ২৭, ২৯ ও ৩১ মে। কিন্তু পিসিবির প্রস্তাব ছিল ২৮ ও ৩০ মে এবং ১ জুন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের ইচ্ছেতেই সিরিজের সূচি নির্ধারিত হয়েছে।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে এখন তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে জিতলেও পরের ম্যাচে দুই উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে আজ শারজায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও আরব আমিরাত।
এই ম্যাচের পর কাল বিশ্রাম নেবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এরপর দুবাইয়ে দুই দিন অনুশীলন করার কথা রয়েছে তাঁদের। ২৫ মে তিন ম্যাচের পাকিস্তানের উদ্দেশে উড়াল দেবেন লিটন দাসরা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নামার আগে ২৬ ও ২৭ মে লাহোরেও দুই দিন অনুশীলন করবে বাংলাদেশ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।