চলতি বছরের মধ্যেই নতুন জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচন ধরে অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এর অন্যথায় সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসেন। 

তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানাচ্ছে বিএনপি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এটিই প্রধান দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি।

লিখিত বক্তব্যে ড. মোশাররফ বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অগণতান্ত্রিক বর্বরতম ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা, বৈষম্যহীন ও সামাজিক ন্যয়বিচার ভিত্তিক একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্নপূরণের জন্য এ দেশের মানুষ অপেক্ষমাণ।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে, বিজয়ী হয়েছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, কিন্তু গত সাড়ে ৯ মাসে জনপ্রত্যাশা বা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু এর মধ্যে পূরণ হয়েছে তা একটি বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অথচ আগামীর বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি এই ঐক্যকে বজায় রেখে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখার কথা ছিল। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনো কোনো মহলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বক্তব্য আমরা বারবার উচ্চারণ করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা যাদের বক্তব্যে এবং কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা তুলেছিলাম। অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। অথচ সরকারের মুখপাত্র হিসাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন- ‘এই সরকারের সবকিছু করার ম্যান্ডেট রয়েছে।’

বিস্তারিত আসছে....

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ গণঅভ য ত থ ন সরক র র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসি নাই’

“পুরনো খেলায় নতুন কোন প্লেয়ার হতে আসি নাই, আমরা খেলার নিয়ম বদলে দিতে এসেছি” বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র পঞ্চম দিন শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার সাতমাথার মুক্তমঞ্চে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছি নতুন বাংলাদেশ লাগবে। নতুন সিস্টেম লাগবে, নতুন আইন কানুন লাগবে। আপনাদের পুরনো খেলায় আমরা অংশগ্রহণ করবো না। আপনাদের চাঁদাবাজির রাজনীতিতে, আপনাদের সন্ত্রাসের রাজনীতিতে আমরা অংশগ্রহণ করব না। আমরা পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসি নাই। আমরা খেলার নিয়ম বদলে দিতে এসেছি। খেলার নিয়ম বদলাতে হবে, রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে। ভালো ও গ্রহণযোগ্য মানুষদের, যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে বাংলাদেশের হাল ধরার জন্য। বগুড়ার হাল ধরার জন্য।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই জুলাই পদযাত্রা জেলা থেকে জেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে যাচ্ছে। নতুন দল এসেছে। নতুন নেতৃত্ব এসেছে। আপনাদের সামনে বিকল্প এসেছে। যেই বিকল্পের খোঁজে আপনারা গত ৫৪ বছর ধরে ছিলেন সেই বিকল্প দল আপনাদের সামনে হাজির হয়েছে। সবাইকে জানিয়ে দিন, এই বগুড়াতে, এই বাংলাদেশে দল কেবল একটি নয়, দুটি নয়। নতুন দল এসেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি এসেছে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে।”

তিনি আরো বলেন, “এই বগুড়া একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল। এই পুণ্ড্রনগর থেকে সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমরা দেখতে পাচ্ছি বগুড়া এলাকা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করা হয়েছে। নাগরিকরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, নাগরিকদের সুষম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।”

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “যদি কেউ সেই পুরোনো কায়দায় দলবাজ প্রশাসকের মত আচরণ করে তাদেরও পরিণতি হবে ফ্যাসিস্ট মুজিবাদদের মত। কোনো দলবাজ প্রশাসক কিংবা দলবাজ পুলিশকে ছাড় দেওয়া হবে না। বগুড়ার প্রশাসক, বগুড়ার পুলিশ, আইন-আদালত নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। কোনো দলের পক্ষে থাকা যাবে না।”

এনসিপির এই শীর্ষনেতা বলেন, “আমরা স্মরণ করছি এই বগুড়ায় যারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলো, যারা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে। আমরা শুনতে পেয়েছি আমাদের আহত ভাইয়েরা এখনও ভালো চিকিৎসা পায়নি। এটা হতে পারে না। গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূরণ হয়েছে অনতিবিলম্বে আমাদের আহত ভাইদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। শহীদ পরিবারদের পাশে দাঁড়ান। তাদের মর্যাদা দিন।”

নাহিদ আরো বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তালবাহানা চলছে। আমরা এই বগুড়া থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই নতুন সংবিধানে যুক্ত হবে। আগামী ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে জুলাই ঘোষণা পত্রের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হবে। জুলাই-আগস্ট আর আহতদের যারা সংবিধানে রাখতে চায় না, তারা মুজিববাদের পাহারাদার। জুলাই আমাদের রাজনৈতিক ইশতেহার, রাজনৈতিক গন্তব্য। জুলাইয়ের পথে আগামীর বাংলাদেশ বিরচিত হবে।”

এ পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসাইন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আজ শনিবার সকাল ১০টায় বগুড়া শহরের পর্যটন হোটেলে গণঅভ্যুত্থানে বগুড়ায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/এনাম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’র প্রিমিয়ার শো
  • সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস শুরু ১৯ সেপ্টেম্বর
  • রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে: নাহিদ
  • টাঙ্গাইলে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে মোমশিখা প্রজ্বলন
  • শুনতে পাচ্ছি, ডিসি-এসপির কার্যালয় অনেক দলের অফিসে পরিণত হচ্ছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
  • জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর
  • আশুরায় উজ্জীবিত হয়ে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে হবে
  • গণঅভ্যুত্থানের অর্জন বিসর্জন দেওয়া যাবে না: সাইফুল হক
  • সিকৃবির প্রধান ফটকের নাম ‘জুলাই ৩৬’
  • ‘পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসি নাই’