পারমিট জটিলতা কাটিয়ে আখাউড়া দিয়ে মাছ রপ্তানি শুরু
Published: 22nd, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতা কাটিয়ে মাছ রপ্তানি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১০টি গাড়িতে করে প্রায় ৭০ টন মাছ গেছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) হাতে না পাওয়ায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মাছ রপ্তানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১০ গাড়িতে প্রায় ৭০ টন হিমায়িত মাছ আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। এর আগে সকাল থেকে ৩টি ট্রাকে ৯০ টন পাথর ও ৬টি ট্রাকে ১০৬ টন ভোজ্যতেল ত্রিপুরার আগরতলায় পাঠানো হয়েছে। গত বুধবার এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতায় মাছ ব্যতীত সিমেন্ট ও ভোজ্যতেল রপ্তানি হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.
এদিকে ভারত সরকার হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ৬টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, সুতা ও সুতার উপজাত এবং আসবাবপত্র। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের আসবাব ব্যতীত বাকি সব পণ্যই নিয়মিতভাবে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হতো। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৪৩০ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস জুলাই–এপ্রিলে রপ্তানি হয়েছে ৪৫৩ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৩ টাকার পণ্য। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্যতেল, তুলা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, মেলামাইন সামগ্রী ও শুঁটকি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, হিমায়িত মাছের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হতো প্লাস্টিক পণ্য, পিভিসি সামগ্রী, চিপস, বিস্কুট, ফলের স্বাদযুক্ত জুস ও তুলা। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৪৫ লাখ টাকা মূল্যের এসব পণ্য রপ্তানি হতো। ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞার কারণে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আগরতল য়
এছাড়াও পড়ুন:
দুই অঙ্কের গড় মূল্যস্ফীতি
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ১৩ বছর আগে দুই অঙ্কের ঘরে ছিল বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি। ২০১০-১১ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি গত কয়েক মাস ধরে কমছে। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এটি প্রায় তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করেছে বিবিএস। প্রতি মাসে মাঠ পর্যায় হতে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দামের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে সংস্থাটি। প্রাপ্ত তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রণয়ন করা হয়। এ সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটা বাড়ল তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি। এটির ১২ মাসের চলন্ত গড় হিসাব হচ্ছে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি।
বিবিএসের তথ্য অনুসারে, গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মে মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে দেখা যায়। তবে গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমে আসে। টানা তিন মাস কমার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ফের বাড়ে মূল্যস্ফীতি। এপ্রিল থেকে আবারও কমার ধারার ফিরে মূল্যস্ফীতি। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একটি বড় অংশ জুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকায় অর্থবছরটিতে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক অর্থবছর ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা যাচ্ছে না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে বাস্তবতার আলোকে সে লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন আনা হয়। গড় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ শতাংশ।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ওই অর্থবছরে ৯ শতাংশের কিছু বেশি হয় গড় মূল্যস্ফীতি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।