যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়ার চার বছরের কারাদণ্ড
Published: 25th, May 2025 GMT
মানিলন্ডারিং আইনে মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের সশ্রম, ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো.
উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পেয়েছেন পাপিয়া। অসুস্থতার কারণে আজ আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেন। অপর চার আসামির মধ্যে জুবায়ের শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। তিন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকবই, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় অর্থপাচার মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে। ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। ২০২২ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচারে আদালত ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন পাপিয়া। এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবে ৮৯ সিনেমা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৮টি বিভাগীয় শহরে একযোগে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’। ৫ দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী দিনে উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা অনম বিশ্বাস। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
গত শনিবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তাবৃন্দ।
মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এবং নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ৮টি বিভাগীয় শহরে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’ হবে। শিল্পকলা একাডেমি ইতোপূর্বে ২০১৬, ২০১৮ ও ২০২১ সালে ৩টি ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন শেষ করেছে।
চলচ্চিত্র শিল্পের প্রসার, বিকাশ এবং মানসম্মত দেশীয় স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রক্ষেপণ এবং অনুধাবন করাসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবাইকে উক্ত উৎসবের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এবং মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করাই এ উৎসবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এবারের এ আয়োজনটি সফল ও সার্থক হবে বলে আশা করছি।
জানা গেছে, সারাদেশ থেকে উভয় ক্যাটেগরি মিলিয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের মোট ৩০০টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে ২০৯টি ফিকশন এবং ৯১টি ডকুমেন্টারি। পরবর্তী সময়ে সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রাথমিক যাচাইবাছাই-এর ভিত্তিতে ৮৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়। যার মধ্যে ৬০টি ফিকশন এবং ২৯টি প্রামাণ্য চিত্র। প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্র থেকে জুরি কমিটি পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে উভয় ক্যাটেগরি থেকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বিশেষ জুরি নির্ধারণ করবেন। এ ছাড়া উভয় ক্যাটেগরি থেকে সার্বিকভাবে ৪টি বিশেষ পুরস্কার নির্ধারিত হবে। এগুলো হলো– শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা।
পুরস্কার এর অর্থ মূল্য হিসেবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ১ লাখ টাকা এবং বিশেষ জুরি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা ছাড়াও বিশেষ পুরস্কার এর অর্থ মূল্য হিসেবে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা হিসেবে প্রতিটির জন্য ৩০ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্রের নির্মাতাগণ সবাই প্রদর্শনী সার্টিফিকেটসহ উৎসব স্মারক পাবেন। ৮টি বিভাগীয় শহরে নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
এ ছাড়াও উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জনকে নিয়ে ৩০ মে দিনব্যাপী জাতীয় নাট্যশালার আর্কাইভ রুমে মাস্টার ক্লাস এর আয়োজন করা হবে। মাস্টার ক্লাসের বিষয় হবে সাউন্ড অ্যান্ড সিনেমাটোগ্রাফি। প্রশিক্ষক হিসেবে থাকবেন নাহিদ মাসুদ এবং রাশেদ জামান। চলচ্চিত্র উৎসবের সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির এবং সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক (চলচ্চিত্র) মো. ইকরামুল ইসলাম। ৫ দিনব্যাপী এই স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উৎসব শেষ হবে ৩১ মে।