পৃথিবীর বুকে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার যেন শেষ নেই। তবে প্রত্যাশার লম্বা তালিকার মধ্যে এমন বিশেষ কিছুও থাকে, যা না পেলে মন সত্যিই ‘ভেঙে’ যায়। মন ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারটা যদিও আক্ষরিক অর্থে চোখে দেখা যায় না, তবে মন ভেঙে যাওয়ার নানা প্রভাব পড়ে আমাদের জীবনধারায়। ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ কি তেমনই কিছু?
মন ভেঙে গেলে কেউ কাঁদেন; কেউ হয়ে পড়েন চুপচাপ, বিষণ্ন। রোজকার কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা হয় অনেকেরই। কারও কারও খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়, কেউ আবার ঘুমাতে পারেন না ঠিকঠাক। তবে এমনো কেউ কেউ থাকেন, তীব্র মানসিক আঘাতের কারণে যাঁদের হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক কাজ সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই সমস্যার নাম ‘স্ট্রেস কার্ডিওমায়োপ্যাথি’। সাধারণভাবে একেই বলা হয় ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’।

ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা.

সাইফ হোসেন খান বিষয়টি সহজভাবে ব্যাখ্যা করলেন। হঠাৎ প্রচণ্ড মানসিক চাপের সম্মুখীন হলে আমাদের দেহে অ্যাড্রেনালিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই অ্যাড্রেনালিনের প্রভাবে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন এবং রক্তপ্রবাহে সাময়িকভাবে খানিকটা অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হতে পারে। একেই বলা হয় ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’।

দেহে কী সমস্যা দেখা দেয়?

অ্যাড্রেনালিনের প্রভাবে হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রমে যে পরিবর্তন সৃষ্টি হয়, তার কারণে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। শ্বাসপ্রশ্বাসেও কষ্ট হতে পারে। খুব ঘামও হতে পারে। কারও কারও মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

এটাই কি হার্ট অ্যাটাক?

লক্ষণগুলো হার্ট অ্যাটাকের মতো হলেও ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ আদতে হার্ট অ্যাটাক নয়। হার্ট অ্যাটাক যতটা মারাত্মক রোগ, এই সমস্যা ততটা মারাত্মক নয়। কিছু ওষুধপত্র সেবনে ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়। তবে লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবহেলা করতে নেই। কারণ, ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ নাকি হার্ট অ্যাটাক—কোন সমস্যার কারণে এমনটা হচ্ছে, তা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিকল্প নেই।

আরও পড়ুনফ্লাডলাইটিংয়ের প্রভাবে প্রেমে পড়ছেন না তো২৪ এপ্রিল ২০২৫কাদের হয়?

মন ভেঙে গেলে যে কারোরই ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ হতে পারে। অস্বাভাবিক ভয় পেলে, প্রচণ্ড রাগ হলে, হুট করে বিস্ময়কর কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে যেকোনো বয়সেই এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি একটু বড়সড় শারীরিক সমস্যা হলেও এমনটা হতে পারে। যাঁরা মানসিক চাপে থাকেন বা বিষণ্নতায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যার ঝুঁকি বেশি।

জীবনধারায় সমাধান

স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চা সবার জন্যই আবশ্যক। শরীরচর্চায় মনোযোগী হোন। শিথিলায়ন ব্যায়াম করতে পারেন। জীবনের কোন বাঁকে কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, তা আপনি জানেন না। অনিশ্চয়তা জীবনেরই অংশ। সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তাই জীবনের সত্যকে সহজভাবে গ্রহণ করুন। উপভোগ করুন জীবনের সৌন্দর্যকে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বন র মন ভ ঙ সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি

অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।

গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।

লিভারপুলের অনুশীলনে ভার্জিল ফন ডাইক ও মোহাম্মদ সালাহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ