চলতি মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বিরতিহীনভাবে চলছে এই বৃষ্টি। এ অবস্থায় আজ দেশের সব বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে এবং আগামীকাল বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মাসের শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চলতি মাসের শেষ দিকে সাগরে একটি নিম্নচাপ হতে পারে। এ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা সমকালকে বলেন, গত কয়েকদিন থেকেই আমরা লঘুচাপের কথা বলে আসছি। লঘুচাপটি আগামীকাল সৃষ্টি হতে পারে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে কী না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে এই বৃষ্টি। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। গত বছরের ২৬ মে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। এবারও নিম্নচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় কাছাকাছি। এর আগেও একাধিক বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে। তাই আবহাওয়াবিদরা এ সময় সতর্ক থাকতে বলছেন।
কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার উপযোগী রয়েছে। তবে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। এছাড়াও এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।’
এবার যদি ঘূর্ণিঝড় হয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটেছে। রোববার ভারতের কেরালা উপকূলেও মৌসুমি বায়ুর আগমনের খবর পাওয়া গেছে। সাধারণত মৌসুমি বায়ু ভারতের কেরালা উপকূল স্পর্শ করলে প্রায় একই সময় বাংলাদেশের উপকূলেও তা এসে পড়ে।
কাজী জেবুন্নেছা বলেন, এবার মৌসুমি বায়ু একটু আগে এসেছে। এর আগে ২০০৯ সালে প্রায় একই দিনে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটেছিল বাংলাদেশের উপকূলে। আগে মৌসুমি বায়ুর আগমনের ঘটনা ১৬ বছর পর ঘটল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত ১ জুন বাংলাদেশের টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে। মাঝেমধ্যে দু–এক দিনের হেরফের হয়। তবে এক দশক ধরে মৌসুমি বায়ু জুনের প্রথম সপ্তাহ এমনকি কখনো কখনো জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে আসছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সমকালকে বলেন, মৌসুমি বায়ু যত দিন বাংলাদেশে থাকবে, তত দিন বৃষ্টিপাত হবে। এবার মৌসুমি বায়ু আগেই দেশে প্রবেশ করেছে। এর ফলে এবার আগে থেকে শুরু হচ্ছে বৃষ্টিপাত।
আজ সোমবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং আরও অগ্রসর হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামীকালের মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আজ ঢাকার বাতাস দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হবে। সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যান্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১২ মিনিটে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ফেনীতে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সিলেটে দেশের সবচেয়ে বেশি ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আর আজ সোমবার দুপুর ১২টায় রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল দ শ র উপক ল আগ ম ক ল স লস য় স ঘ র ণ ঝড় দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
লঘুচাপ নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অফিস
চলতি মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বিরতিহীনভাবে চলছে এই বৃষ্টি। এ অবস্থায় আজ দেশের সব বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে এবং আগামীকাল বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মাসের শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চলতি মাসের শেষ দিকে সাগরে একটি নিম্নচাপ হতে পারে। এ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা সমকালকে বলেন, গত কয়েকদিন থেকেই আমরা লঘুচাপের কথা বলে আসছি। লঘুচাপটি আগামীকাল সৃষ্টি হতে পারে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নেবে কী না, তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে এই বৃষ্টি। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রিমাল সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। গত বছরের ২৬ মে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। এবারও নিম্নচাপ ও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় কাছাকাছি। এর আগেও একাধিক বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় এ মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে। তাই আবহাওয়াবিদরা এ সময় সতর্ক থাকতে বলছেন।
কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার উপযোগী রয়েছে। তবে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। এছাড়াও এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।’
এবার যদি ঘূর্ণিঝড় হয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটেছে। রোববার ভারতের কেরালা উপকূলেও মৌসুমি বায়ুর আগমনের খবর পাওয়া গেছে। সাধারণত মৌসুমি বায়ু ভারতের কেরালা উপকূল স্পর্শ করলে প্রায় একই সময় বাংলাদেশের উপকূলেও তা এসে পড়ে।
কাজী জেবুন্নেছা বলেন, এবার মৌসুমি বায়ু একটু আগে এসেছে। এর আগে ২০০৯ সালে প্রায় একই দিনে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটেছিল বাংলাদেশের উপকূলে। আগে মৌসুমি বায়ুর আগমনের ঘটনা ১৬ বছর পর ঘটল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত ১ জুন বাংলাদেশের টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে। মাঝেমধ্যে দু–এক দিনের হেরফের হয়। তবে এক দশক ধরে মৌসুমি বায়ু জুনের প্রথম সপ্তাহ এমনকি কখনো কখনো জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে আসছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সমকালকে বলেন, মৌসুমি বায়ু যত দিন বাংলাদেশে থাকবে, তত দিন বৃষ্টিপাত হবে। এবার মৌসুমি বায়ু আগেই দেশে প্রবেশ করেছে। এর ফলে এবার আগে থেকে শুরু হচ্ছে বৃষ্টিপাত।
আজ সোমবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং আরও অগ্রসর হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামীকালের মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আজ ঢাকার বাতাস দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হবে। সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যান্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১২ মিনিটে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ফেনীতে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সিলেটে দেশের সবচেয়ে বেশি ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আর আজ সোমবার দুপুর ১২টায় রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।