আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি ১ জুন পর্যন্ত মুলতবি
Published: 28th, May 2025 GMT
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি আগামী ১ জুন পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। আজ বুধবার শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে ১৫ মে লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। আগের ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা এবং আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান শুনানিতে ছিলেন।
দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট।
আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল, জেল আপিল ও বিবিধ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। এই রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯ পৃষ্ঠা করে পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। গত ১৩ মার্চ আবেদন দুটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। চেম্বার আদালত সেদিন আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আবেদন দুটি একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতা-কর্মী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপ ল ব ভ গ র ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
৪০ মণের ‘যুবরাজ’কে ঘরের বাইরে নিতে হবে দেয়াল ভেঙে
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের খামারিরা যখন ব্যস্ত তাদের সেরা পশু প্রস্তুত করতে, তখন পঞ্চগড়ে আলোচনায় এসেছে বিশালাকৃতির একটি ষাঁড়। এর নাম রাখা হয়েছে ‘যুবরাজ’। নাম যেমন রাজকীয়, আকৃতিও তেমনই বিশাল। তার ওজন প্রায় ৪০ মণ, দৈর্ঘ্য ১১ ফুট আর উচ্চতা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি।
শুধু ওজন বা আকার নয়, যুবরাজকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের কৌতূহলের বড় কারণ হলো—তাকে ঘরের দরজা দিয়ে বের করা যাবে না, ভাঙতে হবে দেয়াল। গরুটি জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছে একটি ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে। কখনো বাইরে যায়নি। বিশাল আকৃতি হওয়ার কারণে এবার তাকে কোরবানির হাটে নিতে হলে দেয়াল ভেঙেই বের করতে হবে।
পঞ্চগড় পৌর শহরের কাগজিয়া পাড়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কাশেম আবু এবং তার স্ত্রী সানোয়ারা খাতুন চার বছর ধরে সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন যুবরাজকে।
আরো পড়ুন:
প্রতিদিন হাজার টাকার খাবার খায় ১১০০ কেজির ‘জেট ব্ল্যাক’
দিনাজপুরে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু
তারা জানিয়েছেন, যুবরাজকে প্রতিদিন দুইবার গোসল এবং ১৫ কেজির বেশি খাবার দিতে হয়। এর মধ্যে আছে- ধানের কুঁড়া, খৈল, ছোলার ভুসি, খড়, ঘাস ও লবণ। এত যত্নে ও ভালোবাসায় গড়া ষাঁড়টি তাদের কাছে শুধু একটা পশু নয়, যেন পরিবারের এক সদস্য।
এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্যই যুবরাজকে প্রস্তুত করেছেন আবুল কাশেম। যুবরাজের দাম হাঁকিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা।
আবুল কাশেম বলেছেন, ওকে (যুবরাজ) বিক্রি করতে মন চায় না। তবে, বাস্তবতা অন্য কথা বলে। চার বছর ধরে নিজের হাতে খাইয়ে বড় করেছি। রাসায়নিক কিছু দিইনি, পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপায়ে বড় করেছি।
প্রায় সাত বছর আগে একটি গাভি কিনে শুরু হয়েছিল আবুল কাশেমের গরু পালন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিণত হয়েছে ২৮টি গরুর সফল খামারে। আবুল কাশেম নিজে গোয়ালঘরে সময় দেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। পরিচর্যা, খাওয়ানো, চিকিৎসা—সবই করেন নিজ হাতে।
আবুল কাশেমের স্ত্রী সানোয়ারা খাতুন বলেছেন, বাড়িতে পালন করা একটি গাভি থেকে চার বছর আগে এই বাছুর পেয়েছিলাম। ঘরের ভেতরেই জন্ম। ওর যত্ন করেছি সন্তানের মতো। জন্মের সময় থেকেই বাছুরটির শারীরিক গঠন ভালো ছিল। কোনোদিন বাইরে বের হয়নি। এখন দরজা দিয়ে আর বের হয় না। কষ্ট হলেও দেয়াল ভেঙে বের করতে হবে।
প্রতিবেশী শফিজ উদ্দীন বলেন, কাশেম অনেক যত্নবান। পশুগুলোকে তিনি সন্তানের মতো দেখেন। খামারটাও খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। যুবরাজকে বিক্রি করে ভালো দাম পেলেই তার কষ্ট স্বার্থক হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন বলেছেন, পঞ্চগড় জেলায় ১১ হাজার খামার আছে। এ জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা আছে ১ লাখ ২৫ হাজারের মতো। এর বিপরীতে প্রস্তুত আছে অন্তত দেড় লাখ পশু।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে প্রায় ২৫ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থেকে যেতে পারে। এসব পশু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
মো. বাবুল হোসেন বলেন, কাগজিয়া পাড়ার যুবরাজ সর্বোচ্চ সুঠাম দেহের অধিকারি। আশা করছি, কোরবানির পশুর হাটে যুবরাজ ষাঁড়ের মালিক ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
ঢাকা/রফিক