দেশের বাজেটে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় না। যেটুকু দেওয়া হয়, তার কাঠামোর মধ্যেও আবার সমস্যা থাকে। ভবন বানানোতে টাকা চলে যায়। যেটুকু বাকি থাকে, সেটুকুও ঠিকমতো বছর শেষে খরচ হয় না।

‘লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন এবং এফএফডি-ফোর ফলাফলের অগ্রগতির বিষয়’ শীর্ষক আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন। আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। আয়োজনে সহযোগিতা করে ‘ইউএন উইমেন’।

বাজেটে নারীদের জন্য আর্থিক সংস্থান খুবই কম উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যেটুকু খরচ হয়, তার মূল্যায়ন হয় না, সেটা প্রকৃতভাবে নারীদের পক্ষে গেছে কি না। ওই মূল্যায়ন করার জন্য আবার তথ্য-উপাত্ত নেই। তাই বিষয়টি চক্রাকারে নারীবৈরী একটা অর্থায়ন প্রক্রিয়ার ভেতরে ঢুকে যায়।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রত্যাশা জাগিয়েছে। সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে অন্তত ন্যূনতম কিছু প্রয়োগ যদি না দেখি, তাহলে আমরা কিন্তু মনে কষ্ট পাব।’ তিনি বলেন, ‘আমি শুধু নারী কমিশনের কথা বলছি না। স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন—এমনকি সংবিধান ইত্যাদি বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, তার ভেতরেও নারীদের বিষয়কে একটি মূলধারার বিষয় হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে। এটা শুধু নারীর বিষয় নয়, এটা জাতীয় বিষয়। এটা শুধু উন্নয়নের বিষয় নয়, এটা ন্যায্যতারও বিষয়।’

এ সময় বাজেটকে আরও বেশি ব্যবহারোপযোগী করার প্রস্তাব তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের যে অর্ধেক জনসংখ্যা নারী আছে, তাদের পরিবর্তনের কথা, উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে সুনির্দিষ্ট, স্বচ্ছ ও ব্যবহারযোগ্য বাজেট দিতে হবে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কী ধরনের আর্থিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট: সংক্ষিপ্ত পরিসর’ শীর্ষক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ইউএন উইমেনের প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট নুবায়রা জেহিন। ‘লিঙ্গীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতির অবস্থা’ নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

‘লিঙ্গসমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য চাহিদা ও অর্থায়ন’ বিষয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। বক্তব্যে তিনি নারীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ এবং বাজেটে নারীদের আরও বেশি প্রতিনিধিত্বের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেন দূতাবাসের ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেশন প্রোগ্রাম পরিচালক মারিয়া স্ট্রিডসম্যান, সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো.

আবুল কালাম আজাদ, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌসী সুলতানা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ-২) নাজমুন নাহার হামিদ, ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র দ র জন য অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নারীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাংলাদেশের বাজেটে নারীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় জানিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন,  নারীদের জন্য আমাদের যে বাজেটে দেওয়া হয় সেটা খুবই কম। আবার যেটুকু দেওয়া হয় তার কাঠামোর মধ্যেও আবার সমস্যা থাকে, বিল্ডিং বানানোতে টাকা চলে যায়। 

তিনি বলেন, বাজেটে যেটুকু দেওয়া হয়, বাকি থাকে, সেটুকুও ঠিকমত বছর শেষে খরচ হয় না। যেটুকু খরচ হয় তার আবার মূল্যায়ন হয় না, এটা প্রকৃতভাবে নারীদের পক্ষে গেছে কি-না? ওই মূল্যায়ন করার জন্য আবার তথ্য-উপাত্ত নাই। 

সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে 'লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন এবং এফএফডি-ফোর ফলাফলের অগ্রগতির বিষয়'-শীর্ষক আলোচনা শেষে এসব কথা বলেন সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসডিজি বিষয়ক নারী, প্ল্যাটফর্ম। আয়োজনে সহযোগিতা করে জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা 'ইউএন উইমেন'।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমানে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রত্যাশা জাগিয়েছেন আমাদের সংস্কার কমিশন মাধ্যমে অন্তত ন্যূনতম কিছু প্রয়োগ যদি আমরা না দেখি তাহলে আমরা কিন্তু মনে কষ্ট পাব। সরকার বিভিন্ন সংস্কারের পদক্ষেপে কমিশন বানাচ্ছে। আমি শুধু নারী কমিশনের কথা বলছি না। স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি এমনকি সংবিধান ইত্যাদির বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, তার ভিতরেও নারীদের বিষয়কে একটি মূলধারার বিষয় হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে, এটা শুধু নারীর বিষয় না এটা বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়। এটা উন্নয়নের বিষয় শুধু না, এটা ন্যায্যতারও বিষয়।

বাজেটকে আরও বেশি ব্যবহার উপযোগী করার প্রস্তাব তুলে ধরে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের দেশে বাজেট প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে আমাদের যে অর্ধেক জনসংখ্যা নারী আছে, তাদের যে পরিবর্তনের কথা, তাদের উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে বাজেটে সুনির্দিষ্টভাবে স্বচ্ছভাবে এবং ব্যবহারযোগ্যভাবে বাজেট দিতে হবে। বাজেট দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের ভিতরে যারা বিশেষ করে পিছনে পড়ে আছে, তাদের জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা আর্থিক ব্যবস্থা নেই-তাকে আমাদের প্রকাশ করতে হবে এবং এর জন্য যেই তথ্য-উপাত্তের দরকার, যার ঘাটতি আমাদের আছে।

এর আগে সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এখানে সমতার পাশাপাশি এটাও বুঝতে হবে যে লিঙ্গগত বৈষম্যের মাত্রা, লিঙ্গ সমতা, যা নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করতে যাচ্ছি, তা কেবল সম্পদ বরাদ্দ এবং সম্পদ ব্যবহারের দিক থেকে, সংকীর্ণ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। এটি কেবলমাত্র দেশ পর্যায়ের বাজেট কাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যখন আমরা বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে কথা বলি এবং ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে কথা বলি এবং যখন আমরা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলি, তখন আমার মনে হয় আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে সমস্যাটি অনেক বেশি স্থায়ী এবং শুধুমাত্র একটি কমিশন এবং সম্ভবত আমাদের একজন ভুক্তভোগী এটির সমাধান করতে পারবে না। তাই আমাদের আরও অনেক বেশি দৃঢ় থাকতে হবে এবং আমাদের প্রচেষ্টায় অবিচল থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে 'বাংলাদেশে লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট: সংক্ষিপ্ত পরিসর' তুলে ধরেন ইউএন উইমেনের লিঙ্গ পরিসংখ্যান বিষয়ক প্রোগ্রাম বিশ্লেষক নুবায়রা জেহিন, 'লিঙ্গীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্ক' নিয়ে উপস্থাপনা তুলে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। 

এছাড়া 'লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য চাহিদা ও অর্থায়ন' নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সেক্রেটারি রেখা সাহা। বক্তব্যে তিনি নারীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ এবং বাজেটে নারীদের জন্য আরও বেশি প্রতিনিধিত্বের আহ্বান জানান। 

অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেন দূতাবাসের ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেশন প্রোগ্রাম পরিচালক মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌসী সুলতানা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ-২) নাজমুন নাহার হামিদ, ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য