চট্টগ্রামে খালে চামড়া ফেলে হালদা নদী দূষণের অভিযোগ
Published: 10th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার পরের দিন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির তেরপারী ব্রিজের ওপর থেকে প্রায় ৫০০ চামড়া তেরপারী খালে ফেলার ঘটনায় মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার তেরপারী খাল ও ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন শেষে পরিবেশ দূষণের জন্য এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এজাহারে চামড়া পচে হালদা নদী দূষণের অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার রিসার্চ অফিসার আশরাফ উদ্দিন বলেন, ৮ জুন চার-পাঁচজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ট্রাকে করে কোরবানির পশুর অবিক্রীত চামড়া এনে এই খালে ফেলেন।
তিনি জানান, তেরপারী খালের সঙ্গে মিলিত রয়েছে এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদী। এ নদী থেকে সরাসরি মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়। চামড়া ফেলায় এ নদী দূষণের কবলে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ঈদের পরের দিন ৮ জুন স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনুমানিক ৬০০-৭০০ পিস চামড়া খাল থেকে তুলে গর্তে পুঁতে ফেলেন। তবে কারা এ কাজ করেছেন, তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ব্যস্ত দলাদলিতে গণসংযোগে জামায়াত
চট্টগ্রাম নগরীর চারটি আসনে গত ফেব্রুয়ারিতে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী। এর পর থেকে প্রার্থীরা এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে ভোটার টানার চেষ্টা করছেন তারা। বিপরীতে বিএনপির দৃশ্যমান কোনো প্রস্তুতি নেই। নেতাকর্মীরা কয়েকটি ধারায় বিভক্ত। ফলে কোন্দল মিটিয়ে একক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হাইকমান্ডকে বিপাকে পড়তে হতে পারে।
চট্টগ্রাম জেলায় মোট ১৬টি আসন। এর মধ্যে মহানগরের আসন হলো চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও), চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া), চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী-হালিশহর) ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে ডা. আবু নাছের, চট্টগ্রাম-৯-এ ডা. ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-১০-এ অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে শফিউল আলমকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। অন্যদিকে চার আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রার্থিতা নিয়ে জটিলতা রয়েছে বিএনপির। শুধু চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর প্রার্থিতা প্রায় নিশ্চিত। এখানে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো দলে তেমন কোনো নেতা নেই। আমীর খসরু চট্টগ্রাম-১০ আসনেও নির্বাচন করতে চাইছেন। এ জন্য বেশ কিছুদিন আগে থেকে ছেলে ইসরাফিল খসরুকে মাঠে নামিয়েছেন তিনি। এ আসনে নির্বাচন করতেন বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
সূত্র জানায়, মনোনয়ন পেলে ইসরাফিলকে চট্টগ্রাম-১১ ছেড়ে দিয়ে আমীর খসরু চট্টগ্রাম-১০ আসনে নির্বাচন করবেন। অবশ্য নোমানের এ আসনে সরব তাঁর বড় ছেলে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সাঈদ আল নোমান তূর্য। মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করার মতো প্রস্তুতি রয়েছে বলে সমকালকে জানিয়েছেন ইসরাফিল খসরু ও তূর্য।
নগরীর নেতাকর্মী দুই ভাগে বিভক্ত। একাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। অন্যরা বর্তমান আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের অনুসারী। এর বাইরেও ছোট-বড় একাধিক গ্রুপ সক্রিয়।
গত ৩ জুন মহানগর বিএনপির আওতাধীন ৩৫টি ওয়ার্ডে নতুন আহ্বায়ক কমিটি (আংশিক) অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব কমিটি নিয়ে বিভক্তি ব্যাপক। প্রতিবাদে মিছিল-সমাবেশ করছেন বঞ্চিতরা। গত ১২ জুন ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৫ নম্বর মোহরা ও ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এরশাদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, ‘৩৫ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটি ৩১ সদস্যের হবে। আবার থানা কমিটিও হবে। ফলে এখনই কাউকে বঞ্চিত বলা যাবে না। বিএনপির মতো বড় দলে চাইলেও সবাইকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা সম্ভব নয়। তবে কমিটি নিয়ে ঝামেলার প্রভাব নির্বাচন প্রস্তুতিতে পড়বে না।’
চট্টগ্রাম-৯ আসনে সক্রিয় হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। এখানে মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শামসুল আলম ও চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ডা. শাহাদাত হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে হেরে যান। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করেও পরাজিত হন। তবে আদালতের রায়ে বর্তমানে মেয়রের চেয়ারে আছেন ডা. শাহাদাত। সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চাইবেন কিনা তা স্পষ্ট করেননি।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। আগেও তারা এখান থেকে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনী এলাকায় দুই নেতার দুটি বলয় রয়েছে। দলীয় প্রায় সব কর্মকাণ্ড অনুসারীদের নিয়ে পৃথকভাবে করে আসছেন তারা।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘কোন আসনে কে প্রার্থী হবেন, তা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর নির্ভর করছে। আমি তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করছি। মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করার মতো প্রস্তুতি রেখেছি।’
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আসনটিতে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। আওয়ামী লীগ ভোট চুরি না করলে আমিই জয় পেতাম। এলাকার সাধারণ মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে। আমিও বিপদে-আপদে তাদের পাশে রয়েছি।’