চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা: চিন্ময়সহ ৩৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র
Published: 1st, July 2025 GMT
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে এটি জমা দেয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আইনজীবী হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। গত ৫ মে আদালত চিন্ময়কে আইনজীবী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখান পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, চিন্ময়ের উসকানি ও নির্দেশে আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে সাবেক এমপি বিপ্লবের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জের শহরে শ্রমিক সজল হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে এই রায় দেওয়া হয়।
মুন্সীগঞ্জ শহরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে সজল হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিসেবে সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবকে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মুন্সীগঞ্জ শহরে সজল নামে এক শ্রমিক নিহত হন।
মঙ্গলবার সকালে আআদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সজীব দে ফয়সাল বিপ্লবকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। রাষ্ট্রের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম আর ফয়সাল বিপ্লবের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট শাহিন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ফয়সাল বিপ্লবকে গত ২২ জুন ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে তাকে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলার আসামি দেখিয়ে ঢাকা আদালতে ওঠানো হয়। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে তাকে মুন্সীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। আদালতের নির্দেশে ফয়সাল বিপ্লবকে আবারো মুন্সীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরে জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মীরা ফয়সাল বিপ্লবের বিচার চেয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সেপ্রেকটর মো. কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, “মুন্সীগঞ্জে সজল হত্যা মামলায় ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে ফয়সাল বিপ্লবকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তার ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শুনানি শেষে তাকে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে মোহাম্মদ সজলসহ তিনজন নিহত হন এবং দুইজন গুরুতরসহ আহত হন দুই শতাধিক ছাত্র জনতা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনটি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা/রতন/এস