জুলাই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে: খালেদা জিয়া
Published: 1st, July 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এই শহীদদের প্রতিটি পরিবারের সম্মানজনক পুনর্বাসন ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর উপলক্ষে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪, জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেছেন বিএনপি প্রধান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠান হয়।
খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর নির্মম অত্যাচার, গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ার।
এই আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আহত ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘তাঁদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে।’
আওয়ামী লীগের আমলে যাঁরা গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে বলে ভিডিও বার্তায় বলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, নতুন করে গণতন্ত্রের ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কাজ আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে যেকোনো মূল্যে।’
সবশেষে যেকোনো মূল্যে ঐক্য বজায় রাখার কথা বললেন বিএনপির চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, ‘বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা কোনোভাবেই যেন বৃথা না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
এই কর্মসূচি আয়োজন করে বিএনপি। অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মীর মুগ্ধ, শহীদ ওয়াসিম, বিশ্বজিৎসহ গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড র ন শ চ ত করত ন শ চ ত কর ব এনপ র ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার গুরুত্ব অপরিসীম
বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ভিত শক্ত করতে সাংবাদিকদের, বিশেষত আইন সাংবাদিকদের কার্যকর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
রোববার রাজধানীর জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘আইন সাংবাদিকদের জন্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (নিমকো)।
সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল' রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) যৌথ অংশীদারিত্বে নিমকো এই কর্মশালা আয়োজন করে। সার্বিক সহযোগিতা দেয় সুইডেন দূতাবাস।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
তথ্য সচিব আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ভিত্তি মজবুত করতে সাংবাদিকদের, বিশেষত আইন বিষয়ক সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম।’
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির ঘোষিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।’ তিনি পৃথক জুডিশিয়াল সচিবালয় গঠন, জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরায় কার্যকরকরণ, সুপ্রিম কোর্ট হেল্পলাইন চালু এবং বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত আইন পাসের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক বলেন, ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা শুধু একটি পেশাগত দায়িত্ব নয়, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। গণমাধ্যমই পারে জনগণের কণ্ঠস্বর রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দিতে।’
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীরা কেবল সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করেন না, তারা সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূতও বটে।’
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন পরিচালনা করেন ইউএনডিপি’র সিনিয়র রুল অব ল’ অ্যাডভাইজর রোমানা শোয়েগার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আলম চৌধুরী, এপি’র ব্যুরো চিফ জুলহাস আলম এবং বাংলা আউটলুকের মুক্তাদির রশিদ।
বক্তারা বলেন, বিচারপ্রক্রিয়া কাভার করতে হলে সাংবাদিকদের অবশ্যই আইনের মৌলিক জ্ঞান থাকতে হবে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্যের উৎস রক্ষা, সাক্ষ্য যাচাই, আদালতের ভাষা বুঝে সহজভাবে উপস্থাপন এবং সংবেদনশীলতার বিষয়গুলো সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে।
কর্মশালার সঞ্চালনা করেন নিমকোর সহকারী পরিচালক ও কর্মশালার পরিচালক তানজিম তামান্না।
উপস্থিত ছিলেন নিমকোর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. মো. মারুফ নাওয়াজ, ইউএনডিপি বাংলাদেশের হেড অব কমিউনিকেশনস আব্দুল কাইয়ুমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।