বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের যেসব ছোট দ্বীপে আদিম জনজাতি বসবাস করছে, তাদের অন্যতম হলো জারোয়া সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায়ের খুব কমসংখ্যক সদস্যই জীবিত আছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে এই সপ্তাহে ভারতের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আন্দামান–নিকোবর প্রশাসনের মুখ্য সচিব চন্দ্রভূষণ কুমার দক্ষিণ আন্দামান জেলার জিরকাটাঙ্গের জারোয়া এলাকায় ভোটারদের পরিচয়পত্র বিতরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

জারোয়ারা প্রায় অবলুপ্ত একটি জনজাতি। বছর ৫০ আগে তাদের খবর পান সরকারি কর্মকর্তা ও নৃতত্ত্ববিদেরা। বর্তমানে তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার। আন্দামানের দক্ষিণ ও মধ্য উপকূলে যে অংশে এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা বসবাস করেন, সে অঞ্চলের মধ্যে নাগরিক সমাজের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাঁদের নানা সাহায্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। ওই অঞ্চলে এক হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি অঞ্চলে শহরের মানুষ ও পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জারোয়ারা আফ্রিকা থেকে আসা একটি অর্ধ-যাযাবর সম্প্রদায়, যারা পুরোপুরি প্রকৃতি ও বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। কমতে কমতে বর্তমানে জারোয়াদের সংখ্যা মাত্র কয়েক শতে এসে পৌঁছেছে। বর্তমানে জারোয়াদের একটি অংশের লোকজন পর্যটকদের সঙ্গে সীমিত স্তরে কথাবার্তা বলছেন, মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ছোটখাটো জিনিসপত্র বিনিময় করছেন, ওষুধপত্র ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সাহায্য নিচ্ছেন এবং কেউ কেউ তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলেও পাঠাচ্ছেন।

ভারত সরকারের এখন লক্ষ্য—একদিকে জারোয়ারা যাতে নিশ্চিহ্ন না হয়ে যায় তা দেখা, অন্যদিকে সীমিত আদান-প্রদানের মাধ্যমে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা। সে লক্ষ্যেই নিয়ন্ত্রিত আকারে তাদের ভোটাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আন্দামান জেলার নির্বাচনী আধিকারিক অর্জুন শর্মা।

অর্জুন শর্মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জারোয়া সমাজের যে বিশেষ ধরনের পরিচয় রয়েছে, তা রক্ষা করার পাশাপাশি, যাবতীয় গোপনীয়তা বজায় রাখতে আমরা একটি সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তাদের দৈনন্দিন জীবনে সামান্যতম হস্তক্ষেপ না করে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তাদের অধিকার সম্পর্কে সর্বোচ্চ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা তাদের ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত করছি। এটি গণতান্ত্রিক অর্জনের লক্ষ্যে একটি বড় সাফল্য বলে মনে করা যেতে পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শত ক্যানসার যোদ্ধা এক হলেন যুদ্ধজয়ের শক্তি নিয়ে

ক্যানসার শব্দটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আতঙ্ক। নিজের কিংবা প্রিয়জনের ক্যানসার হলে তা মেনে নেওয়াই দুরূহ এক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে সেই সত্যকে মেনে নিয়ে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ীও হন বহু মানুষ। তেমনই ১০০ যোদ্ধা সেই সকালে হাজির হয়েছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মিলনায়তনে। নিবন্ধন পর্ব শেষে তাঁরা যোগ দিয়েছিলেন মূল অনুষ্ঠানে।

সূচনায় নতুন উদ্যোগের ঘোষণা

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হাসপাতালটির চিফ অপারেটিং অফিসার মো. এসাম ইবনে ইউসুফ সিদ্দিক। সূচনা বক্তব্যে তিনি জানান, ক্যানসারজয়ী একজন ব্যক্তির (ক্যানসার সারভাইভার) প্রতিবছর নিয়মিত যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হয়। আজীবন বিশেষ মূল্যে সেসব করানোর সুযোগ থাকবে স্কয়ার হাসপাতালে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই তাঁদের এ উদ্যোগ।

বাস্তব যখন ভীষণ কঠিন

সূচনা পর্বের পর শুরু হয় প্যানেল ডিসকাশন। স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও শল্যচিকিৎসকেরা অংশ নেন এ আলোচনা পর্বে। ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যে শারীরিক ও মানসিক সংকটের মধ্য দিয়ে যান, সে সম্পর্কে আলোচনা করেন তাঁরা।

সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের সামাজিক পরিসরে ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের রোল মডেল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, তাঁরাই হয়ে উঠতে পারেন বহু মানুষের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।

আয়োজনে নিজের জীবনের গল্প সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন ক্যানসারজয়ী প্রণতি রানী দাস

সম্পর্কিত নিবন্ধ