কার্ট ভনেগাট। আমেরিকান সাহিত্যিক। আলোচিত এই সাহিত্যিকের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন শাকিলা ইসরাত

দুনিয়ার সমস্যা যে কী, তা বোঝার মতো যথেষ্ট স্মার্ট আমি। বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ শেষে দুনিয়ার সর্বত্রই সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের আলামত দেখা যাচ্ছে। তাই সবাই বলাবলি করছে, ‘সমস্যা কী জগতের?’ কেন মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে পারছে না মোটেও? এমনকি স্কুলপড়ুয়া শিশুদের মনেও কী কারণে ঢুকে পড়ছে ঘৃণার বিষ? ‘চোখের বদলে চোখ আর দাঁতের বদলে দাঁত’– এই প্রাগৈতিহাসিক নীতি কেন এখনও এত বলিয়ান?
ক্ষমা করার মানসিকতা
আমি একজন মানবতাবাদী, কিংবা একজন মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে নিজের বাবা-মার কাছে কৃতজ্ঞ। কেননা, শৈশবে যে শিক্ষা তারা আমাকে দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকলেও, তা আমার মনে ইতিবাচক প্রভাবই ছড়িয়ে রেখেছে। আমি শিখেছি, প্রতিশোধের বদলা যদি প্রতিশোধ হয়ে থাকে, তাহলে সহসাই মানুষের এ থেকে মুক্তি পাবার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই ক্ষমা করার মানসিকতার জয়গান গাইতে চাই আমি।
হাসি ও কল্পনার প্রভাব 
জীবনের চলতি পথে আমি জেনে গেছি, হতাশা ও পরিশ্রান্তির জন্য হাসি ও কল্পনা–দুটিই সমান প্রভাব রাখে। এ ক্ষেত্রে আমার হিসাব খুব সহজ। যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কোনো দুর্যোগে হাসিমুখে থাকতে চাই আমি। যদি আমাকে দাঁড়াতে হয় খাদের একদম কিনারে, আমি হাসিমুখেই দেখে নিতে চাই এ পৃথিবীর রূপ। তার আগে, এ পৃথিবীর সব জঞ্জাল নিজের সাধ্য মতো করে দিতে চাই পরিষ্কার। কেননা, এ মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল প্রাণী হিসেবে এ দায়িত্বটি প্রথমত মানুষেরই। তবু প্রশান্তি জাগে, এই যে এত এত কোমলমতি শিশু-কিশোর প্রতিদিন পাঠকক্ষে বসে করছে পড়ালেখা, কতজন শিক্ষক তাদের প্রকৃত অর্থেই দেখাতে পারছেন আলোর নিশানা? কতজন তাদের ভেতর মানবিকতাবোধের বিকাশ ঘটাতে রাখছেন ভূমিকা? অথচ এমনটাই করা দায়িত্ব তাদের। 
পুতুল কিংবা তোতাপাখি নও
না, আমি হরে-দরে জগতের সব শিক্ষককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছি না। তবু প্রত্যেক শিক্ষার্থী
ও শিক্ষকের কাছে রাখতে চাই চ্যালেঞ্জ। প্রিয় শিক্ষক, বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, সিলেবাসে আটকে থাকাই কি দায়িত্ব আপনার? একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে, আপনার সামনে হাজির থাকা ক্লাসভর্তি উজ্জ্বল মুখগুলোকে, আগামীদিনের এই প্রতিনিধিদের কি আলোর পথটি দেখানো আপনার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না? আর প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমার কাছে প্রশ্ন এবার। বুকে হাত দিয়ে বলো, পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য কোনোকিছু জানার প্রতি একবারও কি আগ্রহ জন্মায়নি তোমার? যদি জন্মে থাকে, শিক্ষককে কী করেছ সে সম্পর্কে প্রশ্ন কোনো? তুমি তো পুতুল কিংবা তোতাপাখি নও!  u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গল প

এছাড়াও পড়ুন:

বিড়ালের দেখাশোনা করলে সম্পত্তি লিখে দেবেন বৃদ্ধ

চীনের গুয়াংডং প্রদেশের বাসিন্দা লংয়ের (ছদ্মনাম) কোনো সন্তান নেই। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এক দশক ধরে একাই থাকেন। একদিন বৃষ্টিতে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া চারটি বিড়ালকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এখন শুধু একটিই বেঁচে আছে। সিয়ামি জাতের সেই বিড়ালের নাম সিয়ানবা। বয়সের কারণে লং এখন তাঁর মৃত্যুর পর বিড়ালটির যত্নে একজন বিশ্বস্ত অভিভাবক খুঁজছেন, যাঁকে তিনি নিজের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করবেন।

স্থানীয় একটি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সঠিক ব্যক্তি পেলে নিজের ফ্ল্যাট ও জমানো সব অর্থ দিয়ে দেবেন লং। শর্ত একটাই, সিয়ানবার যত্নে কোনো ত্রুটি করা যাবে না। তবে এখন পর্যন্ত উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পাননি তিনি।

৮২ বছর বয়সী লংয়ের বিড়ালের জন্য উত্তরাধিকারী খোঁজার বিষয়টি চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইনে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘যদি কেউ এ প্রস্তাবে রাজি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, তারা (চীনের মানুষেরা) হয়তো বিড়াল ভালোবাসে না, নয়তো শর্তগুলো কঠিন।’ বিড়ালটি দত্তক নেওয়ার শর্তগুলো প্রকাশ করা হয়নি।

ভবিষ্যতে লংয়ের আত্মীয়রা সম্পত্তির দাবিতে আইনি লড়াইয়ে নামতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। চীনের ২০২১ সালে কার্যকর হওয়া দেওয়ানি আইন (সিভিল কোড) অনুযায়ী, যে কেউ ইচ্ছাপত্র করে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে উত্তরাধিকারী করতে পারবেন।

অনেকে আবার সম্পত্তি ছাড়াই লংয়ের বিড়াল দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এক নারী মন্তব্য করেছেন, ‘আমি বিড়ালটিকে নিতে রাজি, টাকার দরকার নেই।’

এই নারী লেখেন, ‘আমি নিজেও ভেবেছি, আমার মৃত্যু হলে বিড়ালটি কে দেখবে? যদি কাউকে বিশ্বাস না করা যায়, তাহলে উত্তরাধিকারীর জন্য অর্থ রেখে যাওয়া যেতে পারে, যাতে বিড়ালটা বোঝা না হয়ে ওঠে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ভুয়া বিড়ালপ্রিয় মানুষের বিষয়েও সতর্ক করেছেন। তাঁদের মতে, এমন অনেকে আছেন, যাঁরা কেবল অর্থের লোভে দত্তক নিতে চাইতে পারেন, পরে প্রাণীটির সঙ্গে হয়তো খারাপ ব্যবহার করবেন।

চীনে এখন পর্যন্ত পোষা প্রাণীর প্রতি নির্যাতন ঠেকাতে নির্দিষ্ট আইন নেই। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশটির পোষা প্রাণী বাজার দ্রুত বেড়েছে।

২০২৫ সালের চায়না পেট ইন্ডাস্ট্রি হোয়াইট পেপার অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনে বিড়াল ও কুকুরের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ, যা ২০২৩ সালের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। বাজারের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ইউয়ান বা প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাতৃত্ব ও মানসিক সুস্থতার গল্প বললেন অ্যাড্রিয়েন বায়লন-হাউটন
  • পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আলাদা বাজেট জরুরি
  • ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় গুম-হত্যা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা
  • জুলাই আন্দোলনকারীদের দেশ ছাড়তে বলা শিক্ষকদের পদোন্নতি, ক্ষুব্ধ শ
  • করোনায় একজনের মৃত্যু, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৯৪
  • করোনায় আরো এক মৃত্যু, শনাক্ত ৬
  • অমিতাভ বচ্চনের শুভেচ্ছাবার্তার পর জয়া আহসানের প্রতিক্রিয়া
  • বিড়াল দত্তক নিলে মিলবে ফ্ল্যাট
  • বিড়ালের দেখাশোনা করলে সম্পত্তি লিখে দেবেন বৃদ্ধ