ভৌতিক বা হরর সিনেমা মানেই টানটান উত্তেজনা, ভয় আর রহস্যের মায়াবী পর্দা ছড়িয়ে থাকা একটি ঘোর। এ ধারার সিনেমার প্রতি আগ্রহী দর্শকের অভাব নেই। তরুণদের কথা নাইবা বললাম! অনেকে তো আজকাল সিনেমা হলে গিয়ে, দল বেঁধে দেখার পাশাপাশি অনেকেই আবার নিজের ঘরে একা একা মাঝরাতে এ ধরনের সিনেমা দেখেন। এই যে ভৌতিক সিনেমা দেখতে বসে ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকা, আর ক্ষণে ক্ষণে চিৎকার দিয়ে ওঠা– এর সবটাই কি মজার? এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে আপনার মনোজগতে?
নেচিবাচক প্রভাব: এমন সিনেমা আপনার মনে নেচিবাচক প্রভাব অবচেতনেই জাগিয়ে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের সিনেমায় আসক্ত দর্শকরা দিনের আলোতেও মাঝে মধ্যে অজানা আতঙ্কে ভোগেন। রাতে, বিশেষ করে একা ঘুমোতে যাওয়ার পর সে আতঙ্ক যে কোনো মুহূর্তেই প্রকট হয়ে উঠতে পারে।
যে কাউকে অবিশ্বাস: এর মাত্রা এতই তীব্র হতে পারে যে, পরিচিত মানুষ ও পরিবেশের প্রতিও জেগে উঠতে পারে প্রবল অবিশ্বাস। মনে হতে পারে, চোখের সামনে যা দেখছেন, বস্তুতপক্ষে তা হয়তো অন্যকিছু!
চেনা জগৎ অচেনা: চেতনে-অবচেতনে আতঙ্কে ভোগা কোনো ভালো খবর নয়। এর প্রভাবে তিলে তিলে নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারেন আপনি। কোনো কাজে পুরোপুরি মনোনিবেশ করা হয়ে উঠতে পারা দুরূহ। ফলে আপনার চেনা জগৎ খুব দ্রুতই হয়ে যেতে পারে অচেনা; হারাতে পারেন আত্মবিশ্বাস।
ঘুমের ওষুধ: গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, ভৌতিক সিনেমার নেতিবাচক প্রভাবে অনেক দর্শকই গুরুতর সব মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কারও কারও আচরণ হয়ে উঠতে পারে ভয়ংকর রকমের আগ্রাসী; আবার স্বাভাবিক বিবেচনাবোধ হারিয়ে কেউ কেউ হয়ে যেতে পারেন আপাদমস্তক উন্মাদ। আতঙ্কে ভোগার এ মানসিক বিপর্যয় কাটাতে কাউকে কাউকে ঘুমের ওষুধ থেকে শুরু করে প্রাণঘাতী নেশায় আসক্ত হতেও দেখা যায়!
ভূতের প্রকট থেকে রেহাই: সাধারণত তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই হরর সিনেমা আসক্তির প্রবণতা বেশি। এর প্রভাবে অবিশ্বাস ও মানসিক ভারসাম্যতায় ভর দিয়ে অনেকে হয়ে উঠতে পারেন কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তথাকথিত ভূতের প্রকট থেকে রেহাই পেতে, নানা ধরনের তাবিজ-কবজে আশ্রয় নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
নিজের ভূমিকা: হরর ফিল্ম আপনি একদম দেখবেন না; এমন বলছি না। আসলে কোনো আসক্তিই ভালো ফল বয়ে আনে না। শুধু হরর ফিল্মের ওপর নির্ভর না করে, আরও নানা ধরনের সিনেমা থেকে নিতে পারেন বিনোদনের রসদ। তাছাড়া, এ ধরনের সিনেমা একা না দেখাই ভালো। u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ধরন র স ন ম আতঙ ক আসক ত
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বেড়েছে, মে মাসে ২০ টন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মে মাসে আরও ২০ টন সোনা কিনেছে। এই পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটা বেশি। খবর ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার চাহিদা বেড়েছে। কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংক মে মাসে সাত টন সোনা কিনেছে। এতে ব্যাংকটির মোট মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টন। এ ছাড়া বছরের শুরু থেকে কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংকের মজুত বেড়েছে ১৫ টন। গোল্ড কাউন্সিল অবশ্য বলছে, সামগ্রিকভাবে সোনা মজুতের গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে।
তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে মাসে ছয় টন সোনা কিনেছে। এতে চলতি বছর ব্যাংকটির মোট ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ টন। চলতি বছর সোনার সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা দেশ পোল্যান্ড। চলতি বছর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬৭ টন সোনা কিনেছে। মে মাসে দেশটির ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ছয় টন।
চীনের পিপলস ব্যাংক ও চেক রিপাবলিকের ন্যাশনাল ব্যাংক, উভয়ই মে মাসে দুই টন করে সোনা কিনেছে। এ ছাড়া মে মাসে বিক্রির ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুরের মুদ্রানীতি কর্তৃপক্ষ। তারা পাঁচ টন সোনা বিক্রি করেছে। এরপর উজবেকিস্তান ও জার্মানির ডয়চে বুন্ডেসব্যাক উভয়ই এক টন করে বিক্রি করেছে।
চলতি বছরের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিট সোনা বিক্রেতা দেশ উজবেকিস্তান। এ সময় দেশটি ২৭ টন সোনা বিক্রি করেছে। সিঙ্গাপুরের বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ টন।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫’-এ দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সোনা মজুত বৃদ্ধি করা হবে। এ ছাড়া ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী ১২ মাসে সারা বিশ্বে সরকারি পর্যায়ে সোনা মজুত বাড়বে। অর্থনৈতিক সংকট ও মূল্যস্ফীতির সময়ে বিকল্প সম্পদ ও ঝুঁকি প্রতিরোধী হিসেবে সোনার কার্যকারিতা—এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলেছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।
এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে ‘অফিশিয়াল মনিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ফোরামের গ্লোবাল পাবলিক ইনভেস্টর ২০২৫ প্রতিবেদনে। ৩২ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে তারা সোনা মজুদ বাড়াতে চায়।