এমন একটি শব্দ ভাবুন, যেটিকে প্রায় সব অনুভূতির একক প্রকাশ বলা যেতে পারে। না, ‘ভালোবাসি’ কিংবা ‘দুঃখিত’ নয়। বরং প্রেম, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা, সমর্থন, প্রশংসা এমনকি গ্রহণ, প্রত্যাখ্যান বা দ্বিমতের মতো পরস্পরবিরোধী বক্তব্যেও অবলীলায় ব্যবহার করতে পারেন সেই শব্দ। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, ধন্যবাদ।
এই যে শব্দটি খুঁজে পেয়েছেন বলে আপনাকে যে ধন্যবাদ জানানো হলো, এটা প্রশংসাসূচক ধন্যবাদ। এবার উল্লিখিত অন্যান্য অনুভূতির সঙ্গেও মিলিয়ে দেখুন। দেখবেন কী দারুণ মিলে যায়। তবে সন্দেহ নেই, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ‘ধন্যবাদ’ শব্দটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য। একটিমাত্র শব্দ, সহজ ও সরল। কিন্তু কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের সর্বাধিক শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইংরেজ লেখক ও দার্শনিক গিলবার্ট কিথ চেস্টারটন ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন’কে মানুষের চিন্তার সর্বোচ্চ রূপ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি মনে করি যে ধন্যবাদ তথা কৃতজ্ঞতা হলো চিন্তার সর্বোচ্চ রূপ এবং কৃতজ্ঞতা এমন এক আনন্দ, যা বিস্ময়ে দ্বিগুণ হয়’। অর্থাৎ কৃতজ্ঞতা থেকে সৃষ্ট আনন্দ কেবল মামুলি আনন্দ মাত্র নয়। এ যেন সত্য, সুন্দর ও মহানুভবতার বিস্ময়কর ও সশ্রদ্ধ অভিজ্ঞতা।
ছোট্ট একটি ধন্যবাদ, একটুখানি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাবোধের প্রভাব বিপুল ও সুদূরপ্রসারী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কখনো রাজনৈতিক মতের কারণে অন্যের অধিকার হরণ করা যায় না: শফিকুর
মানবাধিকার একটি মূল্যবান আমানত, সামাজিক সুবিচারের রক্ষাকবচ উল্লেখ করে কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ ও মতের কারণে অন্যের অধিকার হরণ করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো
নির্বাচন ঘিরে সরগরম কেরাণীগঞ্জের রাজনীতি
শফিকুর রহমান বলেন, “আজকের দিনে আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সমগ্র দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-মানবাধিকার একটি মূল্যবান আমানত, সামাজিক সুবিচারের রক্ষাকবচ। কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা মতের কারণে অন্যের অধিকার হরণ করা যায় না। সমাজে বিরোধ বা ভিন্নমত থাকতে পারে, তা সত্ত্বেও ভিন্নমতকে অপমান বা হেনস্তা করা এবং নারী ও অসামরিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ও অনৈতিক। মানবাধিকার কখনো রাজনৈতিক স্বার্থ বা মতের কারণে হরণ করা যায় না। সমাজে বিরোধ থাকলেও কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অপমান, হেনস্তা, গুম, বিচারহীনতা বা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার করা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।”
তিনি বলেন, “১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিনটি মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।”
গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন, কাশ্মীর, মিয়ানমার এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, “বর্বর ইসরাইলি বাহিনী মূলত মুসলিম জাতিগোষ্ঠীকে চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। খুনি ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, বুদ্ধিজীবী—কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। যুদ্ধের সব নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে মানবতার দুশমন ইসরাইলি বাহিনী ঠান্ডা মাথায় প্রায় ৭০ হাজারের অধিক বেসামরিক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা এবং ১ লাখ ৭৫ হাজারের অধিক মুসলিমকে আহত করেছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানকার ৮০ ভাগ বসতভিটা মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজাবাসীর জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ, খাদ্য, পানি—কোনো কিছুই ঢুকতে দিচ্ছে না মানবতার দুশমন বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। এর নিন্দা জানানোর মতো ভাষা আমাদের জানা নেই।”
কাশ্মীর, মিয়ানমারের রাখাইন, লেবানন, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে অভিযোগ করে শফিকুর রহমান বলেন, “বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আমরা অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং ফিলিস্তিনের স্থায়ী সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের সব মানবতাবাদী রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ