কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষে তালা দিল শিক্ষার্থীরা
Published: 6th, February 2025 GMT
কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁঞার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে আদালত চত্বরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে ২০ আইনজীবীকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে তাদের নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেওয়া হয়।
ব্যানারে দেওয়া ওই ২০ আইনজীবী হলেন, ইউনুস ভূঁইয়া, মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, আবদুল মমিন ফেরদৌস, আমজাদ হোসেন, আনিসুর রহমান মিঠু, মাসুদ সালাউদ্দিন, গোলাম ফারুক, আতিকুর রহমান আব্বাসী, খোরশেদ আলম, জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ, জহিরুল ইসলাম সেলিম, জাহাঙ্গীর আলম ভূঁঞা, আমিনুল ইসলাম টুটুল, মজিবুর রহমান, মাহাবুবুর রহমান, রেজাউল করিম, সৈয়দ নুরুর রহমান, কামরুজ্জামান বাবুল, জাহাঙ্গীর আলম ও রফিকুল ইসলাম হিরা।
এদের মধ্যে ইউনুস ভূঁইয়া জেলার লাকসাম উপজেলা পরিষদ এবং আমিনুল ইসলাম টুটুল আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। অন্যরা জেলা, মহানগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
কুমিল্লা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতে আওয়ামী আইনজীবীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যাকারীদের বাঁচাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই দুঃসাহস কীভাবে হলো? জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা আদালতে ২০ চিহ্নিত আওয়ামী আইনজীবীর ছবিসহ ব্যানার টানানো হয়েছে। পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে কুমিল্লায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন কর্মসূচি পালন করা হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান, মুখ্য সংগঠক মোস্তফা জিহান, যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক মাহমুদ।
কক্ষে তালা দেওয়ার বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁঞা রাতে সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ও বার কাউন্সিলের বিধান অনুসারে যে কোনো মামলার বাদী কিংবা আসামিকে আইনগত সহায়তা দিতে হয়। কোন অ্যাডভোকেট জুলাই গণহত্যার কোন আসামির পক্ষে আইনি লড়াই করেছে এর তালিকা তো আদালতে আছে। তার ভাষ্য, ‘জুলাই আগস্টের গণহত্যার মামলায় আইনি সহায়তা দেওয়া যাবে না, এমন সরকারি প্রজ্ঞাপন তো এখনো আসেনি। সরকারি আদেশ আসলে সকল আইনজীবীই তা প্রতিপালন করবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব জ হ ঙ গ র আলম ল ইসল ম র রহম ন আইনজ ব আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডের সেলিম প্রধান রিমান্ডে
রাজধানীর গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ জানান, গত ২৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তাঁর উপস্থিতিতে শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছিলেন। শুনানির জন্য আজ সেলিম প্রধানকে আদালতে আনা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, আগের সরকারের সময় সেলিম প্রধানকে নিয়ে অভিযোগ ছিল তিনি তারেক রহমানের কাছে টাকা পাঠাতেন এবং বর্তমান মামলাতেও একই রকম অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা যৌক্তিক নয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জিজ্ঞেস করেন, ‘তারেক রহমানকে কে টাকা দিয়েছেন?’ উত্তরে আসামিপক্ষের আইনজীবী একটি সংবাদ প্রতিবেদনের কপি আদালতে দেখান। এ সময় আদালতের ভেতর হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে সেলিম প্রধান বলেন, ২০১৯ সালের একটি মামলায় তিনি জামিন না পেয়ে কারাভোগ করেছেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি গাজী গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের আমলে তাঁর ব্যক্তিগত বাড়িতে হামলা হয়েছে। তিনি জোসেফ হারিছের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন।
শুনানি শেষে আদালত সেলিম প্রধানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বারিধারার নেক্সাস ক্যাফে প্লেস নামক একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
এর গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল সকাল ৭টায় গুলশান-১ এর জব্বার টাওয়ারের পাশের রাস্তায় আসামিসহ ৩০ থেকে ৩৫ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সমবেত হন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সংগঠনের অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতাদের নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। সেখানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে।