বিশেষ বিসিএসে ২০০০ চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ
Published: 13th, March 2025 GMT
জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সায়েদুর রহমান। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর থেকে কোর্স কারিকুলাম সংশোধনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একটি সভা করেছে। তারা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষে মতামত সংগ্রহ করে একটি বিজ্ঞানসম্মত, বাংলাদেশের উপযোগী এবং গ্রহণযোগ্য একটি কারিকুলাম প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে। এর ভিত্তিতে তারা একটি প্রস্তাব তৈরি করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, চিকিৎসক নিয়োগের একটা কথা আসছে, অনেক চিকিৎসক নিয়োগ করতে হবে। ৪৫, ৪৬ ও ৪৭ এই তিন বিসিএসের মাধ্যমে ৪৫০, ১৬৮২ এবং ১৩৩১ জন চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান। তারপরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসক অভাবের কথা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা বাড়ানোর জন্য আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে, সেটা হয়নি। গত ৫ মার্চ এ বিষয়টিকে পুনরায় বিবেচনার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছে। এতে চিকিৎসকদের বিসিএস দেওয়ার বয়সসীমা ৩৪ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স এস চ ক ৎসক ব শ ষ ব স এস চ ক ৎসক ন য ব স এস র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন
কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।
মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপমুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)
নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।
আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)
এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে