Prothomalo:
2025-11-13@08:33:17 GMT

দেয়ালের সুরক্ষায় রং

Published: 13th, March 2025 GMT

রং যে কেবল দেয়ালকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলে, তা কিন্তু নয়; বরং দেয়ালের সুরক্ষার জন্য চাই রং। মনের মতো রঙে আপনি অন্দর-বাইরের দেয়াল রাঙিয়ে নেবেন নিশ্চয়ই। তবে রং করানোর আগেই আপনাকে দেয়ালের সুরক্ষার দিকটি মাথায় রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় মেনে চলা হলে বছরের পর বছর ধরে দেয়াল থাকবে অক্ষত। দেখাবেও চমৎকার।

মানবদেহের ভেতরটাকে সুরক্ষিত রাখতে আবরণ হিসেবে যেমন কাজ করে ত্বক, তেমনি দেয়ালের আবরণ হিসেবেও প্রয়োজন রং। দেয়ালের গড়ন সুরক্ষিত রাখতে ঠিকঠাক রং বেছে নিতে হবে আপনাকে। পরিবেশের স্বাভাবিক কিছু উপাদানের কারণে দেয়ালের ক্ষতি হতেই পারে। এই যেমন বাড়ির বাইরের দেয়ালে রোদ, বৃষ্টি ও বাতাসের আর্দ্রতার কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অতিরিক্ত আর্দ্রতা অন্দরের দেয়ালের জন্যও ক্ষতিকর। ভালো মানের রঙের প্রলেপ না থাকলে বাহির ও অন্দর—দুই জায়গার দেয়ালেই ছত্রাক জন্মাতে পারে। শৈবালও জন্মায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে। নানান রকম দাগছোপ পড়েও দেয়াল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এত সব দিক সামলাতে দেয়ালের রং কেমন হতে হবে, এ প্রসঙ্গে নানান পরামর্শ দিলেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যি

রং করানোর আগে

* যে দেয়ালে আগে কোনো রং ছিল, নতুন রং করানোর আগে তা পুরোপুরি তুলে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।

* নতুন-পুরোনো যেকোনো দেয়ালে রং করার আগে তা সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষে ঘষে মসৃণ করে তুলতে হবে।

* প্রয়োজনে পুরোনো প্লাস্টারের প্রলেপ সরিয়ে দিয়ে নতুনভাবে প্লাস্টার করিয়েও নিতে হবে। দেয়ালের কোনো অংশ আর্দ্রতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে অবশ্যই সেটির প্রতিকার করতে হবে রং করার আগে। এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞের সহযোগিতা নেওয়া ভালো। দেয়ালের ক্ষতির ধরন এবং মাত্রা অনুযায়ী তিনি পরামর্শ দেবেন।

* ভবিষ্যতে দেয়ালের স্যাঁতসেঁতে ভাব প্রতিরোধ করার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত রং করানোর আগেই। রঙের আগে দেয়ালে প্রাইমার এবং সিলার ব্যবহার করলে তা স্যাঁতসেঁতে ভাব প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হলে দেয়ালে রং বসে যায় মসৃণভাবে। আর দেয়াল ভালোও থাকে দীর্ঘদিন।

কোন ধরনের রং বেছে নেবেন

* মানসম্মত, টেকসই রং ব্যবহার করুন বাড়ির বাহির এবং অন্দর দুই জায়গাতেই। তাহলে রং করানোর পর দেয়ালের যত্ন নেওয়ার জন্য বাড়তি ঝক্কি থাকবে না।

* বাইরের দেয়ালের জন্য এমন রং বেছে নিন, যা দেয়ালকে রোদ, বৃষ্টি, আর্দ্রতা থেকে সুরক্ষিত রাখবে। আর্দ্রতা থেকে সুরক্ষা দেবে এমন রং অন্দরের জন্যও ভালো।

* দাগছোপ বসে যায় না, এমন রং বেছে নিতে পারেন অন্দরের দেয়ালের জন্য। ময়লা লেগে গেলে সহজে পরিষ্কার করা যায়, এমন রং অন্দরের জন্য সুবিধাজনক। অ্যাক্রিলিক ইমালসন রং করানো হলে প্রয়োজনে দেয়াল পানি দিয়ে ধুয়েমুছেও নেওয়া যায়।

* মানবদেহের জন্য নিরাপদ রংও পাওয়া যায় এখন, যা শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি করে না। বিশেষত রং করানোর সময় বাড়িতে শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি থাকলে এ ধরনের রং বেছে নেওয়া ভালো।

* রান্নাঘরের জন্য আগুনপ্রতিরোধী রং বেছে নিতে পারেন, দুর্ঘটনায় আগুন লেগে গেলেও তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম থাকবে।

রং করানোর পর

* একেবারে দেয়াল ঘেঁষে আসবাব না রাখাই ভালো।

* দেয়াল মোছার প্রয়োজন হলে পাতলা, সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।

* দেয়ালসজ্জায় এমন কোনো অনুষঙ্গ ব্যবহার করবেন না, যাতে পানি রয়েছে। দেয়ালসজ্জায় ব্যবহৃত সব অনুষঙ্গ নিয়মিত পরিষ্কার করুন।

* রঙের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে দেয়াল স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়তে থাকে। দেয়ালের রং নষ্ট হতে শুরু করলে কিংবা স্যাঁতসেঁতে ভাব দেখা গেলে অবশ্যই নতুনভাবে রং করিয়ে নিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র জন য এমন র

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে নতুন বিল পাস, আরও ক্ষমতাধর হলেন সেনাপ্রধান

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট গতকাল বুধবার বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন করেছে। এর মধ্য দিয়ে আরও ক্ষমতাধর হলেন দেশটির সেনাপ্রধান। আর সীমিত হলো সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা। সমালোচকেরা বলছেন, এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানে গণতন্ত্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে।

পাকিস্তানি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে বিলটি অনুমোদন পেয়েছে। মাত্র চার আইনপ্রণেতা বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। দুই দিন আগে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বিলটি পাস করে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে দেশটির রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছে। নতুন এই সংস্কারের ফলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা আরও বেড়ে গেল। আর তাতে লাগাম দেওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।

সাধারণত এ ধরনের সাংবিধানিক সংশোধনীর জন্য কয়েক সপ্তাহ বা মাসব্যাপী আলোচনার প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাড়াহুড়া করে বিলটি পাস করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পর এটি আইনে পরিণত হবে, যা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

এই সংবিধানিক সংশোধনীর ফলে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পাবেন। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌ ও বিমানবাহিনীরও নেতৃত্ব দেবেন তিনি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাঁর পদমর্যাদা বহাল থাকবে। তিনি আজীবন কোনো অপরাধ বা প্রশাসনিক অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনগত দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত থাকবেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই সংশোধনীর প্রশংসা করে বলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য ও জাতীয় ঐক্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেছেন, ‘আজ আমরা যদি এটিকে সংবিধানের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করি, তবে শুধু ফিল্ড মার্শাল নয়, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীকেও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’

শাহবাজ শরিফ স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, ‘এতে সমস্যার কী আছে? জাতি তাদের বীরদের সম্মান করে। আমরা জানি, কীভাবে আমাদের বীরদের প্রতি সম্মান দেখাতে হয়।’

সমালোচকেরা বলছেন, সংবিধানিক এই পরিবর্তন ক্ষমতাসীন জোট ও সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতাকে আরও কেন্দ্রীভূত করবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সুপ্রিম কোর্ট সরকারের অনেক নীতিমালা আটকে দিয়েছেন। কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীকে পদচ্যুতও করেছেন। কিন্তু নতুন সংস্কারের ফলে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়েছে। এই সংশোধনীর অধীন সংবিধানসংক্রান্ত মামলাগুলো সুপ্রিম কোর্ট থেকে নতুন ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতের হাতে চলে যাবে। নতুন এই আদালতের বিচারক নিয়োগ দেবে সরকার।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সিনেটে বিতর্কিত সংশোধনী বিল তড়িঘড়ি পাসের উদ্যোগ, বিরোধীদের প্রতিবাদ০৯ নভেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা ভোটাভুটির আগে পার্লামেন্ট থেকে বের হয়ে যান এবং বিলের কপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা দাবি করেন, বিলটির বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ হয়নি।

পিটিআইয়ের মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি বলেন, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তাতে আইনপ্রণেতাদের কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা নীরব দর্শক হিসেবে ভোট দিয়ে দেশকে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করলেন। এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করেছেন তিনি।

আইনজীবী ও সংবিধানবিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই সংস্কার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করতে পারে। দেশটির সংবিধানবিশেষজ্ঞ আসাদ রহিম খান বলেছেন, বিচারব্যবস্থার ওপর এমন আঘাত গত ১০০ বছরেও দেখা যায়নি। যেসব আইনপ্রণেতা এখন আনন্দ উদ্‌যাপন করছেন, তাঁদেরও একসময় এই আদালতের কাছেই সাহায্যের জন্য ফিরে আসতে হবে, যেটিকে তাঁরা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।

আরও পড়ুনসরকার চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিরোধীরা, প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শাহবাজ!০৮ এপ্রিল ২০২২

সংবিধানবিশেষজ্ঞ মির্জা মোইজ বেগ বলেন, এই সংশোধনী স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টকে নিজেদের পছন্দমতো ফেডারেল সংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারক নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সরকারের অতিরিক্ত ক্ষমতার ওপর আদালতের নজরদারি করার সুযোগ কমে গেল।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে দেশটির রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছে। নতুন এই সংস্কারের ফলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা আরও বেড়ে গেল। আর তাতে লাগাম দেওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।

আইনজীবী মির্জা মোইজ বেগ বলেন, এই সংশোধনীর অনুমোদন দিয়ে পার্লামেন্ট এমন একটি কাজ করেছে, যা এর আগে কোনো স্বৈরশাসকও কল্পনা করতে পারেনি।

আরও পড়ুনবিলাওয়াল বললেন, গণতন্ত্রই আসল প্রতিশোধ০৮ এপ্রিল ২০২২

সম্পর্কিত নিবন্ধ