পিরোজপুরে কোটি কোটি নিয়ে সমিতির পরিচালক উধাও
Published: 3rd, May 2025 GMT
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় ‘আলোক শিখা’ নামে এক সমবায় সমিতির পরিচালক দেড় শতাধিক সদস্যের কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন।
টাকার ফেরত পাওয়ার দাবিতে শনিবার (৩ মে) সকালে উপজেলার শর্ষিনা মাগুরা গ্রামে সমিতির মাঠকর্মী শারমিন আক্তারের বাসার সামনে বিক্ষোভ করেন গ্রহকেরা।
অভিযুক্ত পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন বানারীপাড়া উপজেলার ব্রাহ্মণকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে সনদ না নিয়ে সমবায় সমিতির ২৩টি শাখা খুলে পরিচালনা করছিলেন। ভুক্তভোগী সদস্যদের অভিযোগ, পরিচালক দেলোয়ার হোসেন নেছারাবাদের তিনটি শাখা থেকে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ঋণের প্রলোভনে ৮২ লাখ টাকা নিয়ে উধাও, গ্রেপ্তার ২
তিয়ানশির জালে কুমিল্লার শিক্ষার্থীরা, স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণা
রেহানা পারভীন নামের এক গৃহবধূ অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী প্রবাসী। সেখান থেকে পাঠানো টাকা তিনি আলোক শিখা সমিতিতে সঞ্চয় করেন। মাঠকর্মী শারমিনের কথায় প্ররোচিত হয়ে মোট ১০ লাখ টাকা জমা করেছিলেন। এখন সমিতির পরিচালক দেলোয়ার হোসেন আত্মগোপনে আছেন। তাকে না পেয়ে মাঠকর্মী শারমিনের বাসায় গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করছেন।
বিলকিস নামের এক বিধবা নারী জানান, তিনি মানুষের বাসায় কাজ করে চার লাখ টাকা জমিয়ে শারমিনের কথায় সমিতিতে রেখেছিলেন। এখন আমানত ফেরত পাচ্ছেন না।
হ্যাপি বেগম নামের এক নারী জানান, তিনি কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে সমিতিতে ছয় লাখ টাকা জমা করেছিলেন। এক বছর ধরে টাকা ফেরত চাইতে গেলে সমিতির পরিচালকসহ মাঠকর্মী নানা বাহানা দিয়ে তাকে ঘুরাচ্ছিলেন।
মাগুরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো.
মাঠকর্মী শারমিন বলেন, ‘‘আমি কারো টাকা খাইনি। টাকা সংগ্রহ করে সমিতিতে দিয়ে দিতাম। পরিচালক দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় আছেন। আমি কী করব? তা ছাড়া আমি ছয় থেকে আট মাস হলো চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’’
নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি জানান, আলোক শিখা বানারীপাড়া উপজেলা থেকে পরিচালিত হয়। এটি মূলত সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর ও জয়েন্ট স্টক থেকে সনদপ্রাপ্ত। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে সমিতিটির সনদ নেই। তাই এর কোনো ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনার বিধান নেই। কীভাবে এসব কার্যক্রম চালিয়েছে, সেটা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেখার বিষয়।
অভিযুক্ত পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।’’
ঢাকা/তাওহিদুল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা আ.লীগকে পুনর্বাসন করতে ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, পলাতক আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনকে তারা সহ্য করতে পারছে না। লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠকের পর তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বিএনপি পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় পাবনার চাটমোহরের প্রবীণ বিএনপি নেতা আবু তাহের ঠাকুরকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় প্রবীণ বিএনপি নেতা আবু তাহের ঠাকুরের হাতে তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান তুলে দেন।
তাহের ঠাকুরকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, লোহা পুড়িয়ে সংসার চালিয়েও তিনি (তাহের ঠাকুর) দলের জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন। জেলা বিএনপি যেন সার্বক্ষণিক তার খোঁজ-খবর রাখে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যৌক্তিক সময়েই হবে। আরও অনেক দল যে দাবি করেছে এ আলোকেই নির্বাচন হবে। আমরা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছি। এবারের নির্বাচনে জনগণের দাবির প্রতিফলন হবে।
এখন আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। ১৬ বছরের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে অনেকে গুম হয়েছে। নেতাকর্মীরা মামলা ও গ্রেপ্তার থেকে রক্ষা পায়নি। ফ্যাসিবাদের দিনগুলো ছিল ভয়ঙ্কর।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক সাইফ আলী খান, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট খন্দকার মাকসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আনিসুল হক বাবুসহ অনেকে।
আবু তাহের প্রামাণিক ওরফে তাহের ঠাকুরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আছে। তিনি চাটমোহর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি ছিলেন। ত্যাগী এ বিএনপি নেতার অসুস্থতা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন সম্পর্কে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে বিষয়টি পড়লে তিনি আর্থিক সহযোগিতা ও খোঁজ-খবর নিতে নির্দেশনা দেন।