সাতক্ষীরায় উৎসবমুখর পরিবেশে গোবিন্দভোগ, গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া শুরু হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি এলাকার একটি বাগানে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল সাতক্ষীরায় ৫ মে থেকে আম সংগ্রহের ক্যালেন্ডার (সময়সূচি) নির্ধারণ করেছিল জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সেই হিসাবে আজ থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া ও বাজারজাতে কোনো বাধা থাকল না।

আরও পড়ুনসাতক্ষীরার গোপালভোগ আম মিলবে ৫ মে, হিমসাগর ২০ মে৩০ এপ্রিল ২০২৫

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমের গুণগত মান ঠিক রাখতে চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করে আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। আজ থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাসহ দেশি আম সংগ্রহ করা যাবে। হিমসাগর বাজারে আসবে ২০ মে থেকে। ল্যাংড়া আমের স্বাদ পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২৭ মে পর্যন্ত। আগামী ৫ জুন থেকে সংগ্রহ ও বাজারজাত করা হবে আম্রপালি ও মল্লিকা।’

এবার জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে জানিয়ে সাইফুল ইসলাম আরও জানান, ১৩ হাজার ১০০ কৃষক এবার আম চাষ করেছেন। জেলা থেকে চলতি মৌসুমে ৭০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আশা করা হচ্ছে, এবারের মৌসুমে জেলাটিতে ৪০০ কোটি আম বিক্রি হবে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, সাতক্ষীরার আমের স্বাদ ও অগ্রিম পাকার কারণে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। নির্ধারিত সময়ে আম পেড়ে বাজারজাত করলে ফলটির মান ভালো থাকে, অন্যথায় সাতক্ষীরার আমের সুনাম নষ্ট হয়। চাষি ও ব্যবসায়ীদের আমের মান ঠিক রেখে বাজারজাত করার অনুরোধ করেন তিনি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্লাবনী সরকারের সঞ্চালনায় আম সংগ্রহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আমচাষি বেলাল হোসেন, কমলেশ সরদার ও আবুল কালাম আজাদ।

বেলাল হোসেন বলেন, জেলায় আমের বেচাকেনার একটি বড় সিন্ডিকেট আছে। এ কারণে অনেক সময় আমের সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। এ ছাড়া চাষিরা দাদনের ওপর নির্ভরশীল। তিনি চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার অনুরোধ জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র স আম প ড়

এছাড়াও পড়ুন:

স্বতন্ত্র ‘স্বাস্থ্য সার্ভিস’ গঠনের সুপারিশ স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের

স্বতন্ত্র ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সার্ভিস’ গঠনের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। এছাড়াও বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি হাসপাতালে জনবল নিয়োগ, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা বৃদ্ধি, রোগীদের বিদেশমুখিতা কমাতে নতুন হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব করেছে কমিশন।

আজ সোমবার সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করে কমিশন।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান সুপারিশসমূহ:

স্বতন্ত্র ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সার্ভিস’ গঠন
বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সার্ভিস’ নামে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটির জন্য আলাদা পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য) গঠন এবং জনবল কাঠামো পুনর্নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও পদোন্নতি
স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা—এই তিনটি বিভাগে লাইন প্রমোশনের জন্য পর্যাপ্ত পদসোপান তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কর্মকর্তাদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে 'সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস'-এ প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা বিভাগ পৃথককরণ
চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একাডেমিক ও সার্ভিস হাসপাতাল হিসেবে ভাগ করে তাদের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ স্ব-স্ব বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জনবল নিয়োগ ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ
নতুন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পূর্বেই প্রয়োজনীয় ও দক্ষ জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের জন্য ডিজিটাল হাজিরা ও সরেজমিনে তদারকি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

বাজেট বরাদ্দ ও দালাল দমন
সরকারি হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যার পরিবর্তে চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যা অনুপাতে বাজেট বরাদ্দ এবং দালালদের দৌরাত্ম্য অবসানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন ও রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ
চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের স্বার্থে ভারসাম্য রেখে 'স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন' প্রণয়ন এবং ল্যাবরেটরিগুলোর মান গ্রহণের জন্য একটি রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে।

ফিজিওথেরাপি বিভাগ ও পদ সৃষ্টি
সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, আইএইচটি এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সদর জেনারেল হাসপাতালসমূহে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার জন্য ফিজিওথেরাপি বিভাগ এবং ফিজিওথেরাপিস্ট পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।

কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালনা
গ্রাম পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব প্রদান এবং সরকার সুনির্দিষ্ট শর্তে বাজেট বরাদ্দ দিয়ে কেন্দ্রগুলো পরিচালনা আউটসোর্স করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
  • প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার সুপারিশ
  • স্বতন্ত্র ‘স্বাস্থ্য সার্ভিস’ গঠনের সুপারিশ স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের
  • কোরবানির পশুর চামড়ার ন‍্যায‍্যমূল‍্য নিশ্চিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
  • ছয় সংস্থা একীভূত করার উদ্যোগ, আপত্তিও উঠেছে
  • কোরবানি পশুর চামড়ার ন‍্যায‍্য মূল্য নিশ্চিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ