সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ, গোলাপখাসসহ কয়েক জাতের আম বাজারজাতকরণ শুরু
Published: 5th, May 2025 GMT
সাতক্ষীরায় উৎসবমুখর পরিবেশে গোবিন্দভোগ, গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া শুরু হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি এলাকার একটি বাগানে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল সাতক্ষীরায় ৫ মে থেকে আম সংগ্রহের ক্যালেন্ডার (সময়সূচি) নির্ধারণ করেছিল জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সেই হিসাবে আজ থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া ও বাজারজাতে কোনো বাধা থাকল না।
আরও পড়ুনসাতক্ষীরার গোপালভোগ আম মিলবে ৫ মে, হিমসাগর ২০ মে৩০ এপ্রিল ২০২৫সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমের গুণগত মান ঠিক রাখতে চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করে আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। আজ থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাসহ দেশি আম সংগ্রহ করা যাবে। হিমসাগর বাজারে আসবে ২০ মে থেকে। ল্যাংড়া আমের স্বাদ পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২৭ মে পর্যন্ত। আগামী ৫ জুন থেকে সংগ্রহ ও বাজারজাত করা হবে আম্রপালি ও মল্লিকা।’
এবার জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে জানিয়ে সাইফুল ইসলাম আরও জানান, ১৩ হাজার ১০০ কৃষক এবার আম চাষ করেছেন। জেলা থেকে চলতি মৌসুমে ৭০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আশা করা হচ্ছে, এবারের মৌসুমে জেলাটিতে ৪০০ কোটি আম বিক্রি হবে।
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, সাতক্ষীরার আমের স্বাদ ও অগ্রিম পাকার কারণে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। নির্ধারিত সময়ে আম পেড়ে বাজারজাত করলে ফলটির মান ভালো থাকে, অন্যথায় সাতক্ষীরার আমের সুনাম নষ্ট হয়। চাষি ও ব্যবসায়ীদের আমের মান ঠিক রেখে বাজারজাত করার অনুরোধ করেন তিনি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্লাবনী সরকারের সঞ্চালনায় আম সংগ্রহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আমচাষি বেলাল হোসেন, কমলেশ সরদার ও আবুল কালাম আজাদ।
বেলাল হোসেন বলেন, জেলায় আমের বেচাকেনার একটি বড় সিন্ডিকেট আছে। এ কারণে অনেক সময় আমের সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। এ ছাড়া চাষিরা দাদনের ওপর নির্ভরশীল। তিনি চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার অনুরোধ জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন কীভাবে
আজ থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। দেশের প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। করযোগ্য আয় থাকলে টিআইএনধারীদের রিটার্ন দিতে হয়।
গত বছর থেকে নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশের ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। গতবার ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন।
এবার দেখা যাক কীভাবে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেবেন।
কোথায় দেবেন
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
অনলাইনে রিটার্ন জমার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন নিতে করদাতার নিজের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এ দুটি দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি রসিদ মিলবে।
কীভাবে দেবেন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন তথা ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে বা জমা দিতে হবে না। শুধু ওই সব দলিলাদির তথ্য দিলেই হবে। যেমন সনাতনি পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের আয়ের বা বেতন-ভাতার প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) জমা দিলেই চলবে। আগের বছরের ১ জুলাই থেকে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত (অর্থবছর) সময়ের ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, সুদের তথ্য ও ব্যাংক হিসাবের নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে।
কীভাবে কর দেবেন
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করবেন।
যেসব দলিলের তথ্য প্রয়োজন
রিটার্ন জমার সময় নিজের প্রয়োজন অনুসারে কিছু কাগজপত্রের তথ্য লাগবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস থেকে এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। যেসব কাগজপত্রের লাগবে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেতন খাতের আয়ের দলিল, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌরকরের রসিদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়ার ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট।
বিনিয়োগ করে কর রেয়াত পেতে চাইলেও কিছু কাগজপত্র লাগবে। যেমন জীবনবিমার কিস্তির প্রিমিয়াম রসিদ, ভবিষ্য তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলের চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমার কিস্তির সনদ, জাকাত তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ।