মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা ও মারধরের অভিযোগে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর আজ সোমবার দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতে এই মামলা করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহরাব হোসাইন।

মামলায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ২১৭ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে। মানিকগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো.

আবুল খায়ের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং এস এম জাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জহিরুল আলম, জেলা সদরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন প্রমুখ।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির এক নম্বর ভবনের সামনে থেকে ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে খালপাড় সেতুর দিকে দিকে যান। এ সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওত পেতে থাকা আসামিরা বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, রড়, হাতুড়ি, গ্যাস পাইপ, বাঁশের লাঠি ও কাঠের বাটাম নিয়ে আশপাশে মহড়া দিতে থাকেন। মিছিল থেকে প্রতিবাদমূলক স্লোগান দিয়ে খালপাড় সেতুর ওপর ছাত্র-জনতা পৌঁছালে আসামিরা হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ করে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে হত্যার উদ্দেশ্য আক্রমণ করেন। ধারালো বিভিন্ন অস্ত্রের আঘাতে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করা হয়।

এরপর দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের অদূরে মানরা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আবার আন্দোলনকারীদের ওপর একইভাবে ককটেল বিস্ফোরণ, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনসাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলেসহ তিনজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা১৭ মার্চ ২০২৫

এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, একপর্যায়ে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে বাদী মেহরাব হোসাইনসহ আহত অন্য শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দোসর কতিপয় চিকিৎসক ও নার্স চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে ফেরত পাঠান। পরে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও হাসপাতালের উপপরিচালক জহিরুল করিম আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা না করে জোরপূর্বক বের করে দেন। পরে নিরুপায় হয়ে আহত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।

আদালতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার কোনো কাগজপত্র তিনি পাননি। তবে আদালতে মামলা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার ৩৩ খাল দখলমুক্ত ও সবুজায়নে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ

ঢাকা শহরের ৩৩টি খাল ও লেক দখল ও দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুই পাড়ে গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন ও জীববৈচিত্র পুনরুদ্ধারের জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সোমবার এসব খাল ও লেকের দুই পাড়ে বৃক্ষরোপন কাজে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্তকরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ২৯টি খালের পাশাপাশি রাজউকের আওতাধীন লেকগুলোতে এবং ঢাকা দক্ষিণের ৪টি খালের পাড়ে গাছ লাগানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে ডিএনসিসির নিয়োগ করা স্বেচ্ছাসেবকরা। খালের দুইপাড়ে গাছ লাগানোর জন্য গাছ সরবরাহ করবে ডিএনসিসি। নির্ধারিত এলাকার জন্য ডিএনসিসির নির্ধারিত মালী থাকবে যারা বৃক্ষরোপণে সহায়তা করবে। তাদের সাথে কাজ করবে স্থানীয় সেচ্ছাসেবক। এসব স্বেচ্ছাসেবক সোশাল ম্যাপিংসহ পরিকল্পনা ও নকশার মাধ্যমে খালের পাড়ে বিভিন্ন দেশি গাছ হিজল, জারুল লাগাবেন। 

ডিএনসিসির সাথে খাল দখল, দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুইপাড়ে গাছ লাগানোর জন্য কাজ করবে যেসব স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান তারা হলো, রিভার অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ, গ্রিন ভয়েস, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার্স, কমিউনিটি টাউন ফেডারেশন, নগরাবাদ, সিডিসি, আশার আলো, ইয়ুথ মেন্টর, ব্রাইটস, আলোকিত করি, ফিনিস মনডিএল বাংলাদেশ, ইউএনডিপি, লাল সবুজ সোসাইটি, ইয়ং ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, ইকো টাউন নেটওয়ার্ক গ্লোবাল এবং ও এবি ফাউন্ডেশন। 

স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে তাদের সুবিধা অনুযায়ী খালের অংশ বন্টন করে দেওয়া হয়, যাতে তারা ডিএনসিসির সাথে সমন্বয় করে খাল দখল, দূষণ মুক্ত রাখতে এবং খালের দুই পাড়ে গাছ লাগানোর কাজে সহায়তা করতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ঢাকায় অবস্থিত পুকুরগুলো খুব শিগগির দৃষ্টিনন্দন হবে। ঢাকার জেলা প্রশাসক কিছুদিনের মধ্যে কয়েকটি পুকুর খনন ও পাড় বাঁধাই করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এ বি এম সামসুল আলম প্রমুখ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ