ছেলের নামে ভিপি সম্পত্তির ৩ একর ৯৮ শতাংশ ইজারা নিয়ে প্রায় ৯ একর জমি কবজা করেছেন বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সবুর খান। বাইশারী ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ২০০ বছরের পুরোনো ‘সাতানি’ নামে বাড়িটি এখন সবুরের দখলে। এরই মধ্যে তিনি সেখানকার ৭০ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করেছেন। ভেঙে ফেলছেন পুরোনো মন্দির।
সবুরকে বাড়িটি ইজারা দিতে পদে পদে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ১০ বছর আগের ইজারা দেখিয়ে গত ৫ জানুয়ারি সবুরের ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র মারুফ খানের নামে বাংলা ১৪৩২ সালের ইজারা নবায়ন করা হয়। অথচ ১০ বছর আগে মারুফের বয়স ছিল ৭ বছর।

এ ছাড়া ভিপি সম্পত্তি নিয়ে বানারীপাড়া সহকারী জজ আদালতে ১৯৯৮ সালে মামলা করে গৌরাঙ্গ সাহা গং। ২০০৫ সালে বাড়িটি দখলচেষ্টা হলে ওই বছরের ৩০ মে উচ্চ আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। আদালতের স্থিতাবস্থা থাকলেও তা উপেক্ষা করে জমি ইজারা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ইজারা দেওয়ার পর ইউএনওর আদেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বসবাসকারীদের বাড়ি ছাড়তে হয়।
ভূমি অফিসের দেওয়া তথ্য বলছে, সাতানি বাড়ির ৮ একর ৯৯ শতাংশ জমির মধ্যে ৭ একর ৩৭ শতাংশ ভিপি সম্পত্তি। বার্ষিক ৩ লাখ ৫০ হাজার ২৪০ টাকা মূল্যে ইজারায় মুগডাল চাষের কথা বলা হয়েছে। অকৃষিজমিকে কৃষিজমি দেখানো হয়।
বাড়িটির মূল মালিকদের অন্যতম নিখিল সাহা দাবি করেন, ইজারা পেয়ে সবুর পুরো ৭ একর অর্পিত সম্পত্তি দখলে নিয়েছেন। দুই শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ প্রায় ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। পুরোনো মন্দির ভেঙে ফেলছেন।  

সাতানি বাড়ির ভিপি সম্পত্তি মারুফকে ইজারা দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বানারীপাড়া ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল মজিদ খান জানান, ১০ বছর আগে দখল দেখিয়ে সবুর ইজারা নবায়ন করেছেন। ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেওয়ায় বয়স প্রমাণ করা যায়নি।
বরিশালের প্রবীণ আইনজীবী মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, যিনি ইজারা নেবেন, তাঁর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। 
সবুর খান দাবি করেন, আগেও তাঁর নামে ইজারা ছিল। বকেয়া পরিশোধ করে ছেলের নামে নবায়ন করেছেন। তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজন সাতানি বাড়ির জমি ইজারা পেয়েছেন। স্থানীয়দের তথ্য বলছে, তারা সবুরের লোক। গাছ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে সবুর জানান, দীপক ভৌমিক গাছ বিক্রি করে তাঁর ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। 
বানারীপাড়ার ইউএনও বায়েজেদুর রহমান বলেন, সাতানি বাড়ির ভিপি সম্পত্তি নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে ২০১২ সালে। আমার জানামতে, জমির ওপর আদালতে মামলা কিংবা স্থিতাবস্থার আদেশ নেই। ইজারাগ্রহীতার বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই। সবুর খানের দখল ও গাছ বিক্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ তদন্তে গিয়ে সত্যতা পায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের আমিরকে ইউএনওর শোকজ, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাঁকে বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা।

এদিকে হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির পরপরই গত বৃহস্পতিবার রাতে হাছেন আলীকে উপজেলা জামায়াতের আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দলটি।

কলেজ সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৩ মে হাছেন আলী হাতীবান্ধা মডেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। পরে তিনি কয়েকজনের নিয়োগ দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ১৩টি ফাইল পাঠিয়ে সেগুলোর অনুমোদন করিয়ে আনেন। এসব ফাইলে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাতীবান্ধার ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়।

এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাছেন আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান হাতীবান্ধার ইউএনও। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাতীবান্ধার ইউএনও শামীম মিঞা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্বাক্ষর করেননি। তাঁর স্বাক্ষর স্ক্যান করে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। সে কারণেই এটাকে জাল বলাই যায়। তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাছেন আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, হাছেন আলীকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়ার পরপরই হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে তাঁকে উপজেলা জামায়াতের আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমির আবু তাহের উপজেলা জামায়াতের আমির হাছেন আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কী কারণে তাঁকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সদর উপজেলার নতুন ইউএনও তাছলিমা শিরিন, পদোন্নতি পেলেন সাদিক
  • হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াতের আমিরকে ইউএনওর শোকজ, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি