বগুড়া হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম মিল্লাত হোসেনকে মারধর করা হয়েছে। সোমবার রাত আটটার দিকে বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটে নিজ চেম্বারে রোগী দেখছিলেন তিনি। এ সময় তাঁকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। এস এম মিল্লাত স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বিকেল থেকে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটের নিজ চেম্বারে রোগী দেখছিলেন এস এম মিল্লাত হোসেন। রাত আটটার দিকে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মী চেম্বারে গিয়ে তাঁকে ধরে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়সংলগ্ন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয়ে সোপর্দ করা হয়। শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, কালিবাড়ী মোড় ও পৌরসভা লেন হয়ে ডিবি কার্যালয় পর্যন্ত নেওয়ার সময় এস এম মিল্লাতকে থেমে থেমে মারধর করা হয় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যাক (এস এম মিল্লাত) ছয় মাস আগে আলটেমেটাম দিয়েছিলাম, আমাকে দুর্বল মনে করেছে। আমি স্পষ্ট কথা বলে দিতে চাই। বেশি কথার মানুষ আমি না, এক কথার মানুষ। একবার বলেছি মানে ওইটা ওয়ার্নিং হয়ে গেছে। সময়মতো ধরে ফেলে দিয়েছি। তুই আমার ভাইগরক ২০-২৫ বছর ধরে মারচু। দীলিপ রায়ের (স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি) কোনো সিন্ডিকেট রাখব না, আমরা আসতেছি। হাসনাতের ওপর হামলা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ আল সানী বলেন, ৫ আগস্টের পর এস এম মিল্লাত ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে নানাভাবে সহায়তা করছে। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগকে অর্থ সহায়তা করছেন। 

বগুড়া ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে এনসিপির নেতাকর্মীরা এম এস মিল্লাতকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে সোপর্দ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর আওয় ম ল গ এনস প ন ত কর ম এনস প র আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরির আশায় গিয়ে রণাঙ্গনে নাজির, পরিবারে উদ্বেগ

প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির আশ্বাসে ১২ লাখ টাকায় রাশিয়ায় যান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার নাজির উদ্দিন (৩৭)। প্রথম কিছুদিন সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কয়েক দিন পর তাঁকে পাঠানো হয় সামরিক প্রশিক্ষণে। এরপর রণাঙ্গনে। এখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্র হাতে সম্মুখযুদ্ধে নাজির। দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে নাজিরের মা, বাবা ও স্ত্রীর।

ঘাটাইলের দীঘলকান্দি ইউনিয়নের কুরমুশী গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন ও নূরজাহান বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান নাজির উদ্দিন। তাঁর স্ত্রী ও তিন বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ২০১৭ সালে ইরাকে গিয়েছিলেন নাজির। তিন বছর সেখানে থেকে দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেন; কিন্তু সফল হননি। পরে আবার বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যোগাযোগ করেন ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ওই প্রতিষ্ঠানের মামুন মিয়া নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে রাশিয়া যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এ জন্য গুনতে হয় ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা। 

ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘চড়া সুদে ১২ লাখ টাকা ঋণ করে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আমার ছেলেকে রাশিয়া পাঠাই। তাকে প্যাকেজিং কোম্পানিতে কাজ দেওয়া হয়। কিছুদিন ভালোই চলছিল। এর মধ্যে মাসখানেক আগে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় নাজির। গত ১৬ এপ্রিল সকালে হঠাৎ সে ফোন করে বলে, তোমাদের সঙ্গে আমার আর দেখা নাও হতে পারে। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমাকে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে নেওয়া হচ্ছে। ১৪ দিনের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব কিছু করা হয়েছে জোর করে।’ 
এটাই ছিল ছেলের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ফয়েজ উদ্দিনের শেষ কথা। এরপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘সরকার যেন আমার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে। যারা মিথ্যা আশ্বাসে তাকে রাশিয়ায় নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দিয়েছে, তাদের বিচার চাই।’
নাজিরের মা নূরজাহান বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলে যে কঠিন বিপদে আছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এদিকে নাজিরের চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে– কিছুই জানি না। মেয়েটা সারাক্ষণ বাবা বাবা করে। প্রতিদিন বাবার আশায় মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, আমার স্বামীকে যেন ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’
এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তিন বাংলাদেশি নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুমায়ুন কবির, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ইয়াসিন মিয়া শেখ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আকরাম হোসেন। সারাদেশে আরও কয়েকজনের খবর পাওয়া গেছে, যারা এখন রাশিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা
  • অভিনেতা এজাজ খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
  • ০, ০, ০, ০, ০— এরপর নিউজিল্যান্ডের ১৪৭, বাংলাদেশ জিতল ৭ উইকেটে
  • চাঁদপুরে গরুর খণ্ডিত মাথা দেখে চুরি হওয়া গরু শনাক্ত করলেন মালিক
  • হাসপাতালে বসে মামলার বাদীকে হুমকি
  • ভারতে নিষিদ্ধ পাকিস্তানি অভিনেতার সিনেমা, ক্ষুব্ধ প্রকাশ রাজ
  • ১৫ বছর, ৬ ফাইনাল ও ৬৯৪ ম্যাচ অপেক্ষার পর কেইনের শিরোপা, যেভাবে করলেন উদ্‌যাপন
  • অজয় দেবগন কতটা ‘আবদুল রহিম’ হতে পারলেন
  • চাকরির আশায় গিয়ে রণাঙ্গনে নাজির, পরিবারে উদ্বেগ