গেল এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ১৪.৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, যা ছিল বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও অস্বাভাবিক হারে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার ঘটনা। এর মাধ্যমে টানা ৯ মাস প্যারিস চুক্তির বেঁধে দেওয়া ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটল। কোপার্নিকাস জলবায়ু পরিবর্তন পরিষেবা গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা (১৪.

৯৬ ডিগ্রি) ১৯৯১-২০২০ সালের এপ্রিলের গড়ের চেয়ে ১.৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। একইসঙ্গে প্রাক-শিল্প যুগের গড়ের চেয়ে ১.৫১ ডিগ্রি বেশি ছিল। 
বিশেষজ্ঞরা সতর্কতা দিয়েছিলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে বিশ্বের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর হবে; যা পৃথিবীর অস্তিত্ব হুমকিতে ফেলতে পারে এবং বড় অঘটনের জন্ম দিতে পারে। 

গত মার্চ ও এপ্রিলের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক এলাকা একইসঙ্গে তীব্র দাবানলে আক্রান্ত হয়। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াই এ বিপর্যয়ের মূল কারণ। তাপমাত্রা বেশি থাকায় বাতাসের প্রভাবে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ভয়াবহ দাবানলগুলো তাপ বাড়ার কারণে ঘটছে বলে সতর্কতা দেন বিজ্ঞানীরা। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এসব দাবানলের অনস্বীকার্য কারণ বলেও মনে করেন তারা। 

গত সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডব্লিউএ) বিশ্লেষণে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে উষ্ণায়ন হচ্ছে। সে কারণে দাবানল ছড়ানোর অনুকূল আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে। 
১৯৭৩ সালের পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল ২০২৪ সাল। গত বছর দেশটির গড় তাপমাত্রা ছিল ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মার্চ মাসে এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে অসহনীয় তাপমাত্রা অনুভূত হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাপমাত্রার এই পরিবর্তনের কারণ মানবসৃষ্ট। 

প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, প্রাক-শিল্পযুগ অর্থাৎ ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। পরে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে তা বিপজ্জনক হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স লস য় স

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ