অবৈধ অভিবাসন বন্ধের ওপর জোর দিতে হবে
Published: 10th, May 2025 GMT
সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসন বন্ধ ও বৈধ অভিবাসন বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যে যে ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই হলো, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে ইতালির চাহিদা অনুযায়ী বৈধ পথে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো সহজ হবে।
ইতালিতে দুই লাখের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী আছেন, যাঁদের একাংশ বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যাননি। গত বছরের নভেম্বরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
এই সম্ভাবনাকে অবশ্যই আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ভাগ্যান্বেষণে গিয়ে বহু বাংলাদেশি দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে গিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করেন। একশ্রেণির দালাল মোটা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের বিদেশে নিয়ে যান ভ্রমণ ভিসায়। এ অবস্থায় ধরা পড়লে তাঁরা ফিরে আসতে বাধ্য হন অথবা সেখানে পালিয়ে থাকতে হয়।
সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বৈধ পথে অভিবাসন বাড়াতেই এ উদ্যোগ। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে।
ইতালিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বাড়ানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পর্তুগাল, অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ছয়টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, যা বিদেশে বৈধ পথে শ্রমিক যাওয়াকে উৎসাহিত করবে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্প্রতি সৌদি আরব সফরকালে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ নারী ও পুরুষ কর্মী পাঠানো নিয়ে আলোচনা করেছেন। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যে সীমিতসংখ্যক ভ্রমণ ভিসা চালু করার ঘোষণা দিয়েছে, সেটাও বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সুখবর।
এসব উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে, যাতে অবৈধ পথে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়। একশ্রেণির জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অবৈধ পথে বিদেশে শ্রমিক পাঠিয়ে থাকে। এ কারণে ইতালিসহ জনশক্তি আমদানিকারক অনেক দেশের কাছে বাংলাদেশ বিপজ্জনক ভিসা তালিকায় আছে।
ইউরোপীয় বর্ডার অ্যান্ড কোস্টগার্ড এজেন্সির (ফ্রন্টেক্স) তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মোট ৫৫ হাজার ২১৮ জন বাংলাদেশি বিভিন্ন পথে অবৈধ উপায়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। দালালদের একটি চক্র ইউরোপের ‘স্টেপিং স্টোন’ (সহজ প্রবেশদ্বার) হিসেবে পরিচিত দেশ রোমানিয়া ও পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ছাত্র, ভ্রমণ ও ভিজিটিং ভিসার ব্যবস্থা করে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। অভিবাসনপ্রত্যাশীরা তাঁদের পরিচিত বা পরিবারের সদস্য, যাঁরা ইতিমধ্যে অনিয়মিত পথে ইউরোপে অবস্থান করছেন, তাঁদের কথার ভিত্তিতে এ চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে পরে যাঁরা দেশে ফিরে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৮ শতাংশ এই চক্রের কথা নিশ্চিত করেছেন।
দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত একাধিক চক্র এটা করে থাকে। অবৈধ পথে কর্মী যাওয়ার কারণে অনেক দেশই বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের কর্তব্য হবে বৈধ পথে বিদেশে কর্মী পাঠানোকে উৎসাহিত করা এবং দালাল চক্রের প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করা। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে কেউ বের না হতে পারে, তা–ও নিশ্চিত করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প র ব ধ পথ সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব হলেন রুহুল আলম
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের জায়গায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। আগামীকাল শুক্রবার (২৩ মে) থেকে তিনি তার দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, মো. জসীম উদ্দিন পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র সচিবের দৈনন্দিন কার্যাদি সম্পাদন করবেন। আগামীকাল শুক্রবার (২৩ মে) থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
আরো পড়ুন:
আলোচনায় ডেপুটি হাইকমিশনার শাবাব, দেশে ফেরার নির্দেশ
পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে আসাদ আলম সিয়ামের নাম শোনা যাচ্ছে
জুলাই অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনের হাওয়ায় ১ মাসের মাথায় পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বে আসেন জসীম উদ্দিন। তার জায়গায় রুটিন দায়িত্বে পালনে আসা সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বিসিএস একাদশ ব্যাচের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা।
এর আগে, পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাই কমিশনার এবং পর্তুগালে রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুহুল আলম সিদ্দিকী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দায়িত্বের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, বার্লিন, নয়াদিল্লি এবং করাচি মিশনে বিভিন্ন পদে ছিলেন তিনি।
ঢাকা/হাসান/মেহেদী