মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

মোদির বাসভবনে চলছে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক

ভারত বন্ধ করলে আমরাও করব: পাকিস্তান

ট্রাম্প আরো লিখেছেন, “সাধারণ জ্ঞান এবং দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

তিন আসনে বিএনপিতে অসন্তোষ, জনসংযোগে ব্যস্ত জামায়াত 

নোয়াখালীর ছয়টি সংসদীয় আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জনসংযোগ শুরু হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছয়টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। দুটি আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও একটি আসনে গণ অধিকার পরিষদ প্রার্থী দিয়েছে।

জেলার তিন আসনে প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে অসন্তোষ রয়েছে। প্রার্থী বদলের দাবিতে বিক্ষোভ সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। অন্যদিকে ৯–১০ মাস আগে থেকে দলীয় প্রার্থী নিয়ে মাঠে জনসংযোগে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। 

নোয়াখালী বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলায় দলটির সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত, তবে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপির ভোট বর্জন এবং কারচুপির নির্বাচনে জেলার সব আসনই আওয়ামী লীগের কবজায় ছিল। হামলা-মামলা ও নির্যাতনে কারণে মাঠেও কোণঠাসা ছিল বিএনপি। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপির নেতারা আবারও দলকে সংগঠিত করেছেন। তবে নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণার পর দলের ভেতরে অসন্তোষ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে। 

নোয়াখালী-২, নোয়াখালী-৫ ও নোয়াখালী-৬ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী বদলের দাবি উঠেছে। প্রার্থী হতে চাওয়া নেতাদের অনুসারীরা এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। এ ছাড়া নোয়াখালী-১ ও নোয়াখালী-৩ আসনে বিরোধ প্রকাশ্যে না এলেও অসন্তোষ রয়েছে সে দুই আসনেও।

বিপরীতে ছয়টি আসনে সংগঠিতভাবে জনসংযোগে আছে জামায়াতে ইসলামী। সাধারণ ভোটারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখার পাশাপাশি প্রতিটি আসনে গণসংযোগ চালাচ্ছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সব আসনে মাঠে থাকলেও তুলনামূলকভাবে তাদের জনসংযোগ কম। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দুটি আসনে আলোচনায় এসেছে বিশেষত তরুণ ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কারণে। এ ছাড়া নোয়াখালী ৪ আসনে গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী আবদুজ জাহেরও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। 

নোয়াখালী-১ (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক) 

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব এ এম এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তাঁকে প্রার্থী ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকার দুটি উপজেলা—চাটখিল ও সোনাইমুড়ীতে গণসংযোগ শুরু করেছেন। অন্যদিকে এই আসনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ। তিনি প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। চেষ্টা করছেন প্রার্থী পরিবর্তনের।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের আমির মো. সাইফুল্লাহ। তিনি প্রায় ১০ মাস ধরে নিয়মিত কোনো না কোনো এলাকায় গণসংযোগ করছেন। গণসংযোগে ব্যস্ত দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। সক্রিয় আছেন নারী কর্মীরা। 

এই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জহিরুল ইসলাম ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

নোয়াখালী-২ ( সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক)

নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি এর আগেও পাঁচবার এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। কেন্দ্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকে পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ, সড়ক অবরোধসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানের অনুসারীরা।

কাজী মফিজুর রহমান বলেন, তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ১৭টি মামলার আসামি হয়েছেন। জেল খেটেছেন। ১৬ বছর দলের নেতা-কর্মীদের পাশে, পরিবারের পাশে ছিলেন। অথচ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আরেকজনকে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিএনপির প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুক।

এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা নায়েবে আমির সাইয়েদ আহমদ। প্রথম আলোকে সাইয়েদ আহমদ বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। জনগণের চোখ খুলে গেছে। প্রচারণায় গিয়ে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’

এই আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নির্বাহী পর্ষদের সম্পাদক সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রার্থী হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক ও শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি খলিলুর রহমান। 

নোয়াখালী-৩ ( বেগমগঞ্জ) 

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি আসনে এর আগে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দলের প্রার্থিতা ঘোষণার আগে একাধিক নেতা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ছিলেন। তবে চূড়ান্ত ঘোষণার পর বরকত উল্লাহর বিপক্ষে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই বরকতউল্লা নিয়মিতভাবে এলাকায় উঠান বৈঠকসহ সভা-সমাবেশ এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে গণসংযোগ করছেন। 

এখানে জামায়াতের প্রার্থী দলটির জেলা সেক্রেটারি বোরহান উদ্দিন। তিনি এই উপজেলায় দুই মেয়াদে (২০০৯ ও ২০১৪) উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

এই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নুর উদ্দিন আমানতপুরী। তিনি দলটির নোয়াখালী উত্তর জেলার সংখ্যালঘুবিষয়ক সম্পাদক।

নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) 

এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে। তিনি এই আসনে এর আগে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দলীয় প্রার্থিতা ঘোষণার পর এই আসনে কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। প্রার্থিতা ঘোষণার আগে থেকেই মো. শাহজাহান নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করে আসছেন।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী জেলা আমির ইসহাক খন্দকার। ৯-১০ মাস আগে থেকেই নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা।

আসনটিতে গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবদুজ জাহের। তিনিও বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। আর ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হয়েছেন নোয়াখালী দক্ষিণ শাখার সহসভাপতি ফিরোজ আলম। তিনিও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন বলে জানিয়েছেন।

নোয়াখালী-৫ ( কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সদরের দুই ইউনিয়ন) 

বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদের নির্বাচনী এলাকা এটি। এখানে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও ব্যবসায়ী মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। যদিও প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি নিয়ে মাঠে সরব বজলুল করিম চৌধুরী। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহপল্লিবিষয়ক সম্পাদক। অসন্তোষ প্রশমনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছে জেলা বিএনপির নেতারা। তাঁরা এরই মধ্যে কবিরহাটে একটি সমাবেশে উপস্থিত হয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী বেলায়েত হোসেন। তিনি উপজেলা জামায়াতের আমির। অন্য আসনের প্রার্থীদের মতো তিনিও প্রায় ১০ মাস ধরে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করছেন। 

এই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নোয়াখালী দক্ষিণ জেলার অর্থ সম্পাদক ও কবিরহাট উপজেলা সভাপতি আবু নাছের। তিনিও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। 

নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) 

নোয়াখালী-৬ আসনে এবার বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীম। প্রার্থিতা পরিবর্তনের দাবিতে মাঠে সোচ্চার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিম ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তানভীর উদ্দিন। তাঁদের অনুসারীরা এরই মধ্যে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। আর দলের প্রার্থীর পক্ষে হাতিয়া গিয়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর রশিদ।

এই আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রার্থী জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। ২৪-এর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন।

হান্নান মাসউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দ্বীপের মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়েছি। এখন মানুষ তাদের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অবশ্যই এ দ্বীপের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ানো তাদের সন্তানকেই প্রাধান্য দেবে।’

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সভাপতি শাহ মাহফুজুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নুরুল ইসলাম শরীফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ