মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

মোদির বাসভবনে চলছে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক

ভারত বন্ধ করলে আমরাও করব: পাকিস্তান

ট্রাম্প আরো লিখেছেন, “সাধারণ জ্ঞান এবং দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৪ খাতে সহায়তা করতে বিকল্প উপায় খুঁজবে সরকার

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং ওষুধ পণ্য—এ চার খাতের রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এসব খাতে আর রপ্তানি ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দিতে পারবে না সরকার।

তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এ চার খাতের রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখা ও তা জোরদারে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করবে। কীভাবে চার খাতকে সহায়তা দেওয়া যায়, সে জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সচিবালয়ে গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাজার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং ওষুধ পণ্য—এসব খাতে দেওয়া সুবিধা পর্যালোচনা করতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। কমিটির প্রধান ছিলেন অর্থ বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব (বর্তমানে সমাজকল্যাণসচিব) মোহাম্মদ আবু ইউছুফ। কমিটি এরই মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

প্রতিবেদনে ভারত, চীন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কী সুবিধা দিচ্ছে, তা পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধিবিধানের সঙ্গে যাতে অসংগতিপূর্ণ না হয়, তা–ও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য

প্রতিবেদনে এ খাতের প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশি ট্যানারিগুলোর বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকা। এটি ছাড়া রপ্তানি বাড়বে না। ২০১৭ সালে ঢাকার হাজারিবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প পার্ক স্থানান্তরিত হলেও শতভাগ কার্যকর হয়নি বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি)। অথচ এলডব্লিউজি সনদের শর্ত হচ্ছে ইটিপি। এ ছাড়া চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রায় ৪৪ ধরনের কেমিক্যালের দরকার হয়। এগুলো বন্ড সুবিধা পায় না। ফলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এ খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হন না।

কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সমস্যা ও তা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর একটা ধাক্কা তো আসবেই। তা মোকাবিলার জন্য বিকল্প উপায় বের করা এখন আমাদের কাজ। নতুন একটা কমিটি এ বিষয়ে কাজ করবে।—মাহবুবুর রহমান, বাণিজ্যসচিব।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের জন্য ১০ ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এগুলো হচ্ছে এলডব্লিউজি সনদের ব্যবস্থা করা, ট্যানারির গড় আয়তন ৫ হাজার বর্গফুটের বদলে ১০ হাজার বর্গফুটে উন্নীত করা, ট্যানারিতে বিনিয়োগকারীদের কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমানো, শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেমিক্যাল পণ্য আমদানির সুযোগ, কম সুদে ব্যাংকঋণ দেওয়া, গ্যাস-বিদ্যুতে সুবিধা দেওয়া ইত্যাদি।

পাট ও পাটজাত পণ্য

অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের মতো এ খাত সরকারি সুবিধা পাচ্ছে না। এ খাতের মূলধনি যন্ত্রপাতি আনতে ভারত ৩০ শতাংশ অনুদান দেয়, বাংলাদেশে তা নেই। পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে গবেষণা ও নকশার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো গবেষণাগার নেই। এদিকে পাটপণ্যে ভারত এন্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। পাটজাত মোড়কের বাধ্যবাধকতা আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। এ খাতের জন্য বিশেষ কোনো তহবিলও নেই।

এ খাতের জন্য আট ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পাটজাত পণ্যকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করলেও খাতটি যেন নীতি–সুবিধা পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে এবং বীজের ঘাটতি দূর করতে হবে। কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পাট কেনায় ১ শতাংশ উৎসে কর মওকুফ করা, স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়াসহ এ খাতের জন্য বিনিয়োগ তহবিল গঠন করা জরুরি।

ওষুধপণ্য

এ খাতের অনেক কাঁচামাল আমদানিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ২০০৮ সালে এপিআই পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। কারণ হলো গ্যাস নেই। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সনদ অর্জন করতে পারেনি, যা টিকা উৎপাদন ও টিকার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য।

এ খাতের কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই হাজার কোটি টাকার স্কিম রয়েছে। ওষুধ খাতের রপ্তানিকারক ও উৎপাদকদের এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি সনদ দরকার, যা নেওয়ার প্রক্রিয়া অনেক জটিল। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে উন্নত মানের হিমাগারের অভাব। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধি, চলতি মূলধনের অভাব, কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি এবং গবেষণাগারের অভাব রয়েছে।

সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে চলতি মূলধন দেওয়া, হিমাগারের জন্য বিদ্যুৎ বিল কমানো, আন্তর্জাতিক খাদ্যমেলায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থাসহ ১৩ ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে।

বৈঠক শেষে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সমস্যা ও তা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর একটা ধাক্কা তো আসবেই। তা মোকাবিলার জন্য বিকল্প উপায় বের করা এখন আমাদের কাজ। নতুন একটা কমিটি এ বিষয়ে কাজ করবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ