ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল কোনো সাংবাদিকতা নেই: প্রেস সিচব
Published: 10th, May 2025 GMT
ভারতের গণমাধ্যমগুলো বিনোদন মাধ্যমে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল কোনো সাংবাদিকতা নেই। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের পতনে ভারতের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এ জন্য তারা আমাদের গণমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ করেছে। জবাবে আমরা তা করতে চাই না।
শনিবার যশোরের কেশবপুরের পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা সব চুরি করে বিদেশে নিয়ে গেছে। এখন চলছে ভঙ্গুর অর্থনীতি মেরামতের কাজ।
শফিকুল আলম আরও বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি এস এম রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন, যশোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
পুনর্মিলনীতে দূর-দূরান্ত থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান পরিণত হয় উৎসবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুশফিকের ইতিহাসের পর লিটনের সেঞ্চুরি, আয়ারল্যান্ডকে চাপে রেখেছে
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালটা শুরু হয়েছিল উৎকণ্ঠায়। হবে তো? মানে মুশফিকুর রহিমের ১ রান হবে তো! মিরপুর শের-ই-বাংলায় নিজের শততম টেস্ট খেলতে নেমে আগের দিন ৯৯ রানে নট আউট।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সাতসকালেই তার ১ রানের তীব্র চাওয়া। তবুও শঙ্কা, ভয়, আশা-নিরাশার দোলাচাল, কতো কিছু। গ্যালারি আজ-কাল একদমই ভরে না। তবুও মুশফিকুরের জন্যই মিরপুরের গ্যালারিতে হাজার তিনেক দর্শক।
আরো পড়ুন:
‘সেঞ্চুরিতে’ সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়ে মুমিনুলের পাশে মুশফিকুর
পাঁচ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রানে দিন শেষ করল আয়ারল্যান্ড
স্ট্রাইকে মুশফিকুরই। বাঁহাতি স্পিনার হামফ্রিজের করা ওভারটি মেডেন। দিনের প্রথম ওভার কাটিয়ে দেন। অপেক্ষা বাড়ল মুশফিকুরের, পুরো বাংলাদেশের। গ্যালারি, টিভির সামনে কিংবা অনলাইনে থাকা সমর্থকরা আশা করছেন তার তিন অঙ্ক ছোঁয়ার।
ক্রিকেট ইতিহাসের প্রায় দেড়শ বছরে নিজেদের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন মাত্র দশজন ব্যাটসম্যান। মুশফিকুর ১ রান পেলে হবে এগারজন। আগের দিন থেকেই এই আলোচনা চলছে। দিনের দ্বিতীয় ওভারে, মুশফিকুরের খেলা দিনের অষ্টম বলে সেই অপেক্ষা ফুরাল। মুশফিকুর সেঞ্চুরি তুলে ইতিহাসের পাতায় লিখে ফেললেন নিজের নাম। জড়িয়ে নিলেন বাংলাদেশকেও।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেব একশতম টেস্ট খেলা মুশফিকুর তুলে নেন টেস্ট ক্রিকেটের ১৩তম সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির সংখ্যায় মুমিনুলের ১৩তম সেঞ্চুরিকেও ছুঁয়ে ফেলেন। তার মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রাখেন লিটন দাসও। ৪৭ রানে দিন শুরু করে লিটন পেয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের পঞ্চম সেঞ্চুরি। তাতে রান পাহাড় ছুঁয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস।
অলআউট হওয়ার আগে ৪৭৬ রান করেছে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে নাজেহাল। দিন শেষ করেছেন ৫ উইকেটে ৯৮ রান নিয়ে। ফলোঅনের শঙ্কায় থাকা আয়ারল্যান্ডকে করতে হবে আরো ১৭৯ রান। এখনও তারা পিছিয়ে ৩৭৮ রানে। সকালে যে আবহে দিনের খেলা শুরু হয়েছিল, দিন শেষে তা থাকেনি। হাসিমুখেই দল ছেড়েছে মাঠ। আয়ারল্যান্ডের ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নাটাই এখন স্বাগতিকদের হাতেই।
সেঞ্চুরির পর মুশফিকুর ইনিংসটি অবশ্য বড় করতে পারেননি। ১০৬ রানে থেমে যান স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ২১৪ বলে মাত্র ৫ বাউন্ডারিতে সাজানো ইনিংসটি ছিল একেবারেই নিয়ন্ত্রিত, একেবারেই ছকে আঁকা। কোনো জড়তা ছাড়া, কোনো ঝুঁকি নেয়া ছাড়া অনায়েসে ব্যাটিং করে গেছেন।
৪৭ রানে দিন শুরু করেছিলেন লিটন। নিজের সহজাত ব্যাটিংয়ে ফিফটি ছোঁয়ার পর দ্রুততার সঙ্গেই সেঞ্চুরির ল্যান্ডমার্কে পৌঁছে যান। ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে ১২৮ রান তোলেন ৮ চার ও ৪ ছক্কায়। দলের চাওয়া অনুযায়ী আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে তাকে থেমে যেতে হয়। মেহেদী হাসান মিরাজেরও তাই। ৪৭ রানে তাকে ফেরান লেগ স্পিনার হোয়ে। বাংলাদেশ ৫০০ রানের চাওয়া ছিল। এ কারণে লেজের ব্যাটসম্যানদেরও মাঠে নামান অধিনায়ক নাজমুল। তারা কার্যকরী ব্যাটিং করেছে। কিন্তু দলকে ৫০০ রান এনে দিতে পারেননি। হাসান মুরাদ ১১, ইবাদত ১৮ ও খালেদ ৮ রান করেন। আয়ারল্যান্ডে হয়ে অফস্পিনার ম্যাকব্রাইন ১০৯ রানে ৬ এবং হামফ্রিজ ও হোয়ে ২টি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে আয়ারল্যান্ডের শুরুর চার ব্যাটসম্যানই ভালো শুরু পেয়েছিলেন। রান না তুলতে পারলেও উইকেটে থিতু হয়েছিলেন। কিন্তু স্পিনারদের আক্রমণে পথ হারায় অতিথিরা। ৪১ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেসার খালেদ আহমেদ। ২৭ রান করা পল স্টারলিংকে এলবিডব্লিউ করেন। এরপর হাসান মুরাদ জোড়া আঘাত করে বালবার্নি (২১) ও ক্যাম্পারকে (০) আউট করেন। মিরাজ তুলে নেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কারমাইকেলের উইকেট। দিনের শেষ দিকে তাইবুলের শিকার তাদের তারকা ব্যাটসম্যান হ্যারি টেক্টর। ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো হওয়া আয়ারল্যান্ড আরো ৪ রান করে দিন শেষ করেছে।
উইকেটে বল বাড়তি টার্ন পাচ্ছে। বাংলাদেশের স্পিনাররা এমনিতেই ভালো সময় কাটাচ্ছে। উইকেটের সাহায্যে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের সামলানো। প্রবল চাপে থেকে শেষ পর্যন্ত তারা কত রান করতে পারে সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল