নতুন বন্দোবস্তের লক্ষ্য সবাইকে নিয়ে উন্নতি: জোনায়েদ সাকি
Published: 10th, May 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলেই কেবল জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দেশকে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘নতুন বন্দোবস্তে আমাদের লক্ষ্য হলো সবাইকে নিয়ে উন্নতি, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। জনগণের স্বার্থের বাইরে আমাদের আর কোনো স্বার্থ নেই। জনগণের স্বার্থ রক্ষায় জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
আজ শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত কর্মিসভা ও সলিমাবাদ ইউনিয়নের ভুরভুরিয়া বাজারে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের পর আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সমাবেশের এ খবর জানানো হয়।
প্রকৃতিকে রক্ষা করেই স্থানীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব—এমন মন্তব্য করে সাকি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রকৃতি-নদী-কৃষিজমি রক্ষা করে, আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য এমন ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি, এমন একটা পরিকল্পিত থানা তৈরি করতে পারি, যা বাংলাদেশের সব থানার মধ্যে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি তুলে জোনায়েদ সাকি বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ বিচারের দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে মনে করেছিল, শেখ হাসিনার পতন সম্ভব না। আমরা দিনের পর দিন রাস্তায় ছিলাম এই শেখ হাসিনার আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জনগণ যখন এক হয়েছে, তখন সে পালাতে বাধ্য হয়েছে।’
মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
করিডর দেওয়ার আগে বাংলাদেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলের রায় লাগবে: সারজিস আলম
পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় করিডর দেওয়ার আগে বাংলাদেশের জনগণের রায় লাগবে; বর্তমানে যেসব রাজনৈতিক দল রাজনীতি করছে, তাদের রায় লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলায় মির্জাপুর ইউনিয়নে বার আউলিয়ার মাজারে বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন সারজিস।
সারজিস আলম বলেন, ‘করিডর ছোট কোনো বিষয় নয়। এর আগে পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা অনেক জায়গায় দেখেছি, করিডরের নামে বিদেশি বা গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট এসেছে, বিভিন্ন দেশ ঢুকছে, ইউএন ঢুকেছে, ইউএনের নামে বিভিন্ন ধরনের সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাভাবনার মানুষ ঢুকেছে। এই সুযোগ বাংলাদেশে তৈরি হতে দেওয়া হবে না। এটি একটি জাতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একা নিতে পারে না।’
দেশের অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে মামলা–বাণিজ্যের মাধ্যমে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে সারজিস আলম বলেন, দেশের জেলা, বিভাগীয় শহর, মেট্রোপলিটনসহ সব এলাকায় এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যা মামলা। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের নামে মামলা, বিচার ও দৃশ্যমান শাস্তি হবে। কিন্তু আমরা কখনো চাই না একজন নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হোক।’
মামলা–বাণিজ্যের কৌশল নিয়ে এই এনসিপি নেতা বলেন, প্রথমে মামলাটি সাজানো হয়। এরপর ৫ থেকে ৬ জনের একটি চক্রের সদস্যেরা মিলে একটি লিস্ট (তালিকা) করে; ওই লিস্টের লোকগুলোকে ফোন দিয়ে জানায়, ‘আপনার নামটা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। যদি চান যে না দিই, তাহলে ২ বা ৫ লাখ টাকা দেন। একটা ব্যবসা গেল, যা প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় ধাপে মামলায় নামটা যুক্ত করে, পরে ফোন দিয়ে জানায় ‘মামলায় নামটা আমরা কাটাব, এফআইআর করার আগে কাটানোর জন্য আপনি ২, ৫ বা ১০ লাখ টাকা দেন।’ এরপর মামলা যখন আদালতে চলে যায়, তখন আরেক ধাপে টাকা নেওয়া হয়। এই মামলা–বাণিজ্য সরাসরি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা করছেন। তাঁদের বিভিন্নভাবে সঙ্গ দিচ্ছে পুলিশ।
মামলা–বাণিজ্যের বিষয়ে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ী বা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী মানুষজনকে টার্গেট করা হয়। বলা হয়, ওই ব্যক্তি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শেল্টার দেবেন তাঁরা। এর বিনিময়ে তাঁদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়। মামলার নামে কোটি কেটি টাকার এই বাণিজ্য চলছে। ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন সুবিধাভোগী বাংলাদেশে ছিলেন, এর মধ্যে তিনি (আবদুল হামিদ) অন্যতম। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি কত কিছু করেছেন, তার প্রমাণ অনেক জায়গায় আছে।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে বলে জানান সারজিস আলম। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে কখনোই পার্শ্ববর্তী দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লাগার বিষয়টি প্রত্যাশা করি না। উপরন্তু এই দুটি রাষ্ট্রই হচ্ছে পারমাণবিকভাবে শক্তিধর।’
সারজিস বলেন, ‘তাদের (ভারত-পাকিস্তান) সঙ্গে শুধু আমাদের বাণিজ্যিক-আন্তর্দেশীয় সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, পাশাপাশি পরিবেশটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখেছি, এর আগে পৃথিবীতে যেখানেই যুদ্ধ হয়েছে, পাশের দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুতরাং আমরা চাই এটি যেন না হয়। তারা নিজেদের জায়গা থেকে ধর্মীয় উসকানিকে যেন ব্যবহার না করে।’
মাজারের বিষয়ে এনসিপি নেতা বলেন, ‘সত্যিকারের অলি–আউলিয়ার যেসব মাজার আছে, সেগুলোর প্রতি আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নীতিনৈতিকতার জায়গা থেকে শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। আমার পছন্দ হচ্ছে না বলে আমি সেটার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাব; সেটি নষ্ট করতে যাব—এগুলো কাম্য নয়।’