কাশ্মীর নিয়ে চুক্তির জন্য ট্রাম্পের চাপ ভারতকে কূটনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রশ্নের মুখে
Published: 11th, May 2025 GMT
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা শনিবার ভারত ও পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে এসেছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর বিরোধে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়ার পর বৈশ্বিক কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থিত হতে চাওয়া ভারত এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মুখোমুখি। রবিবার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ভারতের দ্রুত উত্থান বিশ্ব মঞ্চে তার আত্মবিশ্বাস এবং প্রভাব বাড়িয়েছে। কিন্তু কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে সংঘাত ভারতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়।
ভারত কীভাবে কূটনৈতিক সূঁচ ব্যবহারের মাধ্যমে বাণিজ্যের মতো বিষয়গুলোতে ট্রাম্পের অনুকম্পা আদায় করে এবং কাশ্মীর সংঘাতে নিজস্ব স্বার্থ বহাল রেখে নিজের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নির্ধারণ করতে পারবে?
ওয়াশিংটনে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “ভারত .
যুদ্ধবিরতি কতটা ভঙ্গুর তা শনিবার রাতেই বোঝা গেছে। দুই সরকার শনিবার রাতে একে অপরের বিরুদ্ধে গুরুতর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।
কুগেলম্যান বলেন, উত্তেজনা যখন চরমে ছিল তখন যুদ্ধবিরতি ‘তাড়াহুড়ো করে কোনোমতে করা হয়েছিল।’
ট্রাম্প রবিবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতির পর, ‘আমি এই দুটি মহান দেশের সাথে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে যাচ্ছি।’
তবে ট্রাম্পের কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করার প্রস্তাব, ভারত ও পাকিস্তান তাদের বৃহত্তর বিষয়গুলো নিয়ে একটি নিরপেক্ষ স্থানে আলোচনা শুরু করবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ঘোষণা অনেক ভারতীয়কে বিরক্ত করেছে।
কাশ্মীরের বিষয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবের জন্য পাকিস্তান বারবার ধন্যবাদ জানিয়েছে। তবে ভারত যুদ্ধবিরতিতে তৃতীয় পক্ষের কোনো ভূমিকা স্বীকার করেনি। তারা বলেছে, এটি উভয় পক্ষের সম্মতিতে হয়েছিল।
বিশ্লেষক এবং ভারতীয় বিরোধী দলগুলো ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলছে যে, গত বুধবার পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে নয়াদিল্লি তার কৌশলগত উদ্দেশ্য পূরণ করেছে কিনা।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রহ্ম চেলানি বলেন, “মার্কিন প্ররোচনায় মাত্র তিন দিনের সামরিক অভিযান বাতিল করতে রাজি হয়ে ভারত আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করছে কাশ্মীর বিরোধের দিকে, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদের দিকে নয় যা এই সংকটের কারণ ছিল।”
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে থেকে এ পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। পাকিস্তানের গভীরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে মোদি তার পূর্বসূরীদের তুলনায় ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি দেখিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ যুদ্ধবিরতি তাকে দেশে বিরল সমালোচনার মুখোমুখি করেছে।
মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক আইনপ্রণেতা স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, ভারতে যুদ্ধবিরতি ভালোভাবে হয়নি কারণ ‘ট্রাম্প হঠাৎ করে হাজির হয়ে তার রায় ঘোষণা করেছিলেন।’
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ‘ওয়াশিংটন থেকে করা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা’ সম্পর্কে সরকারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা দাবি করেছে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তুলেছেন, “আমরা কি তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার দরজা খুলে দিয়েছি?”
লড়াই বন্ধ হয়ে গেলেও সম্পর্কের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়ে গেছে, যা ভারতের দৃঢ়সংকল্পকে পরীক্ষা করবে এবং দেশটিকে কঠোর অবস্থান গ্রহণে প্ররোচিত করতে পারে।
কূটনীতিক এবং সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের জন্য প্রধান ইস্যু হবে সিন্ধু জল চুক্তি, যা ভারত গত মাসে স্থগিত করেছে। পাকিস্তানের অনেক খামার এবং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য পানির এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বর্তমানে সরকারকে সমর্থনকারী পিপলস পার্টি অফ পাকিস্তানের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর সংলাপের নিশ্চয়তা ছাড়া পাকিস্তান (যুদ্ধবিরতিতে) সম্মত হত না।”
পাকিস্তানের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মোঈদ ইউসুফ বলেছেন, কাশ্মীর নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের চক্র ভাঙতে একটি বৃহত্তর চুক্তির প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, “কারণ অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো রয়ে গেছে এবং প্রতি ছয় মাস, এক বছর, দুই বছর, তিন বছর অন্তর এরকম কিছু ঘটে। তারপরে আপনি পারমাণবিক পরিবেশে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক টন ত ক র জন য বল ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দাবা খেলা নিষিদ্ধ হলো আফগানিস্তানে
জুয়ার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় আফগানিস্তানে দাবা খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালেবান সরকার। দেশটির ক্রীড়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের জুয়া সরকারের নৈতিকতা আইনের পরিপন্থী। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে তালেবান সরকার এমন কিছু আইন ও বিধিমালা আরোপ করে আসছে, যেগুলো ইসলামি আইনের প্রতি তাদের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে। সেই ধারাবাহিকতায় দেশটিতে এবার দাবা খেলাও নিষিদ্ধ করা হলো।
২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান