রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে বিএনপির কোনো শক্তির প্রয়োজন হবে না : মামুন মাহমুদ
Published: 12th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোনো উপদেষ্টা কিংবা কোনো শক্তির প্রয়োজন হবে না। আমাদের পাশে জনগণ আছে, জনগণের মাধ্যমেই আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবো।
শহীদ পরিবারে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। এটা বিএনপির দাবি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আর এদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।
স্বৈরাচার বিদায় হলেও মানুষের ভোটের অধিকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা বিগত ১৫ বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। যে শহীদরা জুলাইয়ের আন্দোলনে হত্যার শিকার হয়েছেন তারা কেউ উপদেষ্টা, ক্ষমতা কিংবা নতুন দল গঠনের জন্যে আন্দোলনে নামেনি। তারা নেমেছিল স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। অত্যাচারে বিরুদ্ধে।
বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুথান ও রাষ্ট্র সংস্কার শীর্ষক আলোচনা সভা ও চিত্র প্রদর্শণীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথ্ াবলেন। রবিবার (১১ মে) রাত ৮ টায় নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের মুক্তিনগওে গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ কর্তৃক এ চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সবার আয়োজন করা হয়।
চিত্র প্রদর্শনীতে বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে শুরু করে ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হত্যাযজ্ঞসহ অমানবিক ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়।
এ সময় মামুন মাহমুদ আরও বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ৫ আগস্টেই বলেছে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদ যেনো আবার গর্জে উঠতে না পারে তার জন্য আমরা আছি। পাশাপাশি শহীদ পরিবারের পাশেও বিএনপি থাকবে বলেও তিনি বলেছেন।
এছাড়াও তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা জনগণের মনের ভাষা জানেন না মন্তব্য করে মামুন মাহমুদ বলে, উপদেষ্টারা অনভিজ্ঞ তারা জনগণের মনের ভাষা জানেন না। একটা রাজনৈতিক দল জনগণের মনের ভাষা পড়তে পারে।
আলোচনা সভায় গণঅভ্যুত্থান সিদ্ধিরগঞ্জে শহীদ হওয়া আকাশের পিতা আকরাম হোসেন বলেন, আমার চোখের সামনে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি লাশ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেছি, কিন্তু তখন রাস্তায় ছিল আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন। যার কারণে হাসপাতালেও ঠিক মতো নিতে পারিনি।
স্বৈরাচার দলের দ্বারা আমার সন্তান হত্যা হয়েছে। স্বৈরাচার পতন হলেও এখনো কেনো আমরা বিচার পাচ্ছি না?। সন্তান হত্যার বিচার পেতে যদি দেরি হয় তাহলে আমিও তো মাঠে নামবো। প্রয়োজনে আমিও শহীদ হবো।
বিএনপির উদ্দেশ্য এই পিতা বলে, আমরা দেখতে পাই বিএনপির কিছু নেতারা আওয়ামী লীগের সাথে মিশে গেছে। আপনারা যদি আওয়ামী লীগের সাথে মিশেন তাহলে তো যেই লাউ সেই কধুই। শহীদদের সাথে বেইমানি করবেন না।
বারান্দার গ্রীল ছিদ্র হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা শহীদ সুমাইয়ার বোনের জামাই বিল্লাল বলেন, আমার মামলাটি এখনো কেনো আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে নেওয়া হয়নি এই সরকারের কাছে আমার এটা প্রশ্ন। আমরা প্রশানের কাছে সব ধরনের তথ্য পৌঁছে দিয়েছি তবুও কেন না?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাকের আহমেদ সোহানের সভাপতিত্বে আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্বজন, জেলা বিএনপি, মহানগর ছাত্রদল ও যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ জনগণ র ম ব এনপ র উপদ ষ ট গণঅভ য র জন য আওয় ম ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয়: গয়েশ্বর
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যা মনমানসিকতার। পাকিস্তান সৃষ্টির মূল কারিগর ছিল মুসলিম লীগ। আজকে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। জাসদও বড়দল ছিল। আজ কয়েকভাগে বিভক্ত। ভাসানী-কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন ইউপিপিও বিলীন হয়ে গেছে। জনগণের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেয়, তারা এমনিতেই বিলীন হয়ে যায়।”
আরো পড়ুন:
পলোগ্রাউন্ড ময়দানে শুরু হয়েছে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরাতে চাইছে সরকার: তারেক রহমান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “আইনের শাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করে কারা গ্রহণযোগ্য বা কারা জনগণ কর্তৃক নিষিদ্ধ।কালকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন, পরশুদিন যে বিএনপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবেন না, তার গ্যারান্টি কী? আওয়ামী লীগ যদি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য পয়জন হয়, মানুষ যদি মনে করে আওয়ামী লীগ দেশের জন্য, গণতন্ত্রের প্রয়োজন, তাহলে জনগণই তাদের নিষিদ্ধ করে দেবে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “জামায়াত এখনও নিষিদ্ধ দল। এখনো তারা নিবন্ধন ফিরে পায়নি। তারপরও তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এই জামায়াত কীভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিল? আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে তা দাবি করতে হবে কেন? আজকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কলকাঠি কারা নাড়াচ্ছেন? যারা এদেশে ১/১১ এনেছিল, তারাই অদৃশ্যভাবে এ সরকার চালাচ্ছে।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “হামিদ চলে গেলেন। রাষ্ট্রের দুইবার প্রেসিডেন্ট। কোনো সংস্থা জানে না তিনি যাচ্ছেন। যখন ইমিগ্রেশন ক্রস করলেন সরকার তা জানে না, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। সরকারের সম্মতি ছাড়া তিনি বাইরে যেতে পারেন না। আসলে সরকার কয়টা? আছে ইউনূস সরকার, ছাত্রদের সরকার।”
তিনি বলেন, “আজকে আরাকান নিয়ে জনগণ ফুঁসে উঠায় চুপ হয়ে আছে। সরকার কিন্তু এখনো একবারও বলেনি আমরা এগুলো করছি।”
তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা নেই এটি আমরা সরকারের কাছ থেকে শুনতে চাই। আপনারা তো বিদেশ থেকে এনে কাউকে কাউকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও দিয়েছেন। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিরাপত্তা মূল কারণ নয়। মূল কারণ আমাদের জ্ঞাত হতে হবে।”
“যে মানুষটি বিদেশে বসেও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেছেন আজকে তার স্বদেশ ফিরতে বাধা কোথায় জাতি তা জানতে চায়।”
১২ দলীয় জোট প্রধান এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব আব্দুল করিম নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ মান্নান প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মুহাম্মদ লিটন, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস ও কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
ঢাকা/এসবি