আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে ‘আপত্তিকর’ স্লোগান নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করল এনসিপি
Published: 12th, May 2025 GMT
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে ‘আপত্তিকর’ স্লোগান নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার (১২ মে) সকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এনসিপি জানায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে ‘আপত্তিকর’ স্লোগান নিয়ে জনমনে যেসব প্রশ্ন উঠেছে তার দায় দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষকেই বহন করতে হবে। এনসিপিকে এর সাথে জড়ানো সম্পূর্ণ অহেতুক এবং অনাকাঙ্খিত।
বিবৃতিবে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি- আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা, এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করার দাবিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রাম বিরোধী স্লোগান দিয়েছে। যা জুলাই পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
দলটির দাবি, এনসিপির কোনো সদস্য সাম্প্রতিক আন্দোলনে দলীয় স্লোগান কিংবা এই জনপদের মানুষের সংগ্রাম ও ইতিহাসবিরোধী কোনো স্লোগান দেয়নি। ফলে যেসব আপত্তিকর স্লোগান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষটিকেই বহন করতে হবে। এনসিপিকে এর সাথে জড়ানো সম্পূর্ণ অহেতুক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।
এনসিপি সদস্যদের বক্তৃতা ও স্লোগানে এই জনপদের মানুষের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অধ্যায়সমূহ তথা ১৯৪৭, ১৯৭১, এবং ২০২৪ এর প্রতিফলন ছিল উল্লেখ করে বলা হয়।
“আমরা আরো লক্ষ্য করেছি, আন্দোলনকারীরা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার সময় একটি পক্ষ আপত্তি জানালেও তারা দৃঢ়তার সাথে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে।”
“এনসিপি মনে করে, বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অধ্যায়সমূহ তথা, ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪ এর যথাযথ স্বীকৃতি এবং মর্যাদা বাংলাদেশে রাজনীতি করার পূর্বশর্ত। যারা ১৯৭১ সালে এই জনপদের মানুষের জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, আমরা চাই তারা নিজেদের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান জাতির সামনে ব্যাখ্যা করে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্যকে সুদৃঢ় করবে এবং চব্বিশের অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সহযোগী হবে।”
সেখানে আরো বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদি জমানায় নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষে চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা পালন করেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদেরকে আবশ্যিকভাবে ‘বাংলাদেশপন্থি’ ভূমিকা পালন করে যেতে হবে।
এনসিপি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক দল বা পক্ষের পূর্বেকার রাজনৈতিক অবস্থান বা আদর্শের কারণে ইতিপূর্বের বিভাজন ও অনৈক্যের রাজনীতির সূত্রপাত ঘটলে, সংশ্লিষ্ট দল বা পক্ষের দায় রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের সামনে নিজেদের সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যাখ্যা করে জাতীয় ঐক্যের পথে হাঁটার।
“বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুজিববাদকে সামগ্রিকভাবে পরাস্ত করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।” বাংলাদেশের জনগণের সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য সকল পক্ষকে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানায় এনসিপি।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক অবস থ ন এনস প আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাপাকে তিন কাজের পরামর্শ দিলেন জেপি মহাসচিব শেখ শহীদ
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নতুন পথ চলায় সফলতা অর্জনে তিনটি কাজ গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম।
শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েল কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি।
শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, “আশা করি কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে এমন এক নেতৃত্বের শুভাগমন ঘটবে যারা জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা করবেন। জাতীয় পার্টির হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধার করবেন।”
আরো পড়ুন:
লেভেল প্লেয়িং ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটার শামিল: জাপা
তারা বহিষ্কৃত, কাউন্সিল অবৈধ: শামীম পাটোয়ারী
জাতীয় পার্টির নতুন নেতৃত্ব আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে অগ্রিম অভিনন্দন জানিয়ে জেপি মহাসচিব বলেন, “আমি মনে করি, জাতীয় পার্টিকে তিনটি কাজ অবশ্যই করতে হবে। তাহলে তারা সফলতা অর্জন করবেন। তার একটা হলো, দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চালু করা, যেটা এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোতে পরিপূর্ণ নাই। এটি নতুন কমিটির প্রথম কাজ হতে পারে। দ্বিতীয় কাজ হবে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা, জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া। আর তৃতীয় কাজ হবে, আগামী দিনে জনগণের জন্য এমন কর্মসূচি গ্রহণ করা, যে কর্মসূচির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা সফল রাষ্ট্রনায়ক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।এই তিনটি কাজ করার জন্য আগামী নেতৃত্ব আগামী দিনে সুদৃঢ পদক্ষেপ নিতে পারেন তবে জাতীয় পার্টি আবারও তার অতীতের গৌরব ফিরে পাবে।”
‘‘আপনাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে-রাজনীতির আকাশে যে কালো মেঘ উঠে, রাত যদি গভীর হয় প্রভাতের উদয় ততই নিকটবর্তী হয়। সেই নতুন সূর্যোদয় অবগাহন করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা যদি আগামী দিনের পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন তাহলে সফলতা আসবে। নতুন সকালের কর্মজ্জ্বল সূর্যস্নানে দেশবাসীকে তারা স্নাত করতে পারবেন।”
প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জেপির) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
দলের যুগ্ম মহাসচিব বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা ও দপ্তর সম্পাদক রাজ্জাক খানের পরিচালনায় কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জহিরুল ইসলাম জহির, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, আরিফুর রহমান খান, নুরুল ইসলাম মিলন, জিয়াউল হক মৃধা, খান ইসরাফিল খোকনসহ দলটির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা ও বিভিন্ন জেলা কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকরা।
কাউন্সিলে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য, দিদারুল আলম দিদার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) মহাসচিব জাফর আহমেদ জয় প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি